প্রাক-বাছাইপর্বে বাংলাদেশ বিদায় নিলে কমপক্ষে তিন বছর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের বাইরে থাকতে হতো। যা মানকে আরও নিচের দিকে নিয়ে যেত। এমনিতেই বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ কম। সেখানে তিন বছর বাইরে থাকলে ফুটবলে বিপর্যয় নেমে আসত। যাক সেই বিপদ কেটে গেছে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে অ্যাওয়ে ম্যাচে লাওসের বিপক্ষে এক জয়ই জামাল ভূঁইয়াদের নিয়ে গেছে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে মূল বাছাইপর্বে। বাংলাদেশ ই-গ্রুপে খেলবে এশিয়া চ্যাম্পিয়ন কাতার, ওমান, ভারত ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে।
হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে একেক দল দুবার মোকাবিলা করবে। অর্থাৎ প্রতিটি দলেরই আট ম্যাচ। বাংলাদেশ যেখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগই পাচ্ছে না, সেখানে বাছাইপর্বে আট ম্যাচ খেলা চাট্টিখানি কথা নয়। এরপর আবার হয়তো জাতীয় দলের জন্য প্রীতি ম্যাচের ব্যবস্থা করবে। বছর জুড়েই ব্যস্ত থাকবে জামাল, মামুনুলরা। যা ফুটবল উন্নয়নে কাজে আসবে আশা করা যায়।
বছর জুড়ে ব্যস্ত থাকলেও কথা উঠেছে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রস্তুতি বা অনুশীলন নিয়ে। আগামী ১০ সেপ্টেম্বরই বাংলাদেশ গ্রুপের প্রথম ম্যাচ খেলবে। প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। নিজ দেশে ম্যাচ আয়োজন ঝুঁকিপূর্ণ বলেই আফগানিস্তানের হোম ভেন্যু তাজিকিস্তান। অর্থাৎ বাংলাদেশকে যেতে হবে সেই দেশে। সময় কম হলেও খেলোয়াড়রা দীর্ঘ সময়ে পেশাদার লিগে মাঠেই ছিলেন। কারও মতে এখানে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু লিগ আর জাতীয় দল কি এক কথা।আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলতে বাংলাদেশ ২৫ সদস্যের প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছে। ২ জন কমে চূড়ান্ত দল হতে পারে ২৩ জন। এখানেই প্রশ্ন উঠেছে- কোচ জেমি ডে যেখানে ছুটিতে আছেন সেখানে দল ঘোষণা হলো কীভাবে? বলা হচ্ছে ছুটিতে থাকলেও জেমি তার লিগে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স পর্যবেক্ষণ করেছেন ভিডিও দেখে। কিন্তু ভিডিও ও স্বচক্ষে গ্যালারিতে বসে পর্যবেক্ষণ করা কি এক কথা? কেননা প্রাথমিক দল নিয়েও বিতর্ক উঠেছে। দলে এমনো খেলোয়াড়কে নেওয়া হয়েছে যারা ইনজুরিতে আক্রান্ত। কিংবা অধিকাংশ সময়ে সাইড বেঞ্চে থাকা এমন খেলোয়াড়কে নেওয়া হয়েছে।
এই দল নাকি কোচ জেমিরই গড়া। এখানে কেউ হস্তক্ষেপ করেননি। কোচের কার কেমন পারফরম্যান্স তার অজানা নয়। তাই ভিডিও দেখে তার তালিকা তৈরি করতে জেমির সমস্যা হয়নি। কিন্তু লিগে পারফরম্যান্স শো করার পর এমন খেলোয়াড় প্রাথমিক স্কোয়াডে রাখা হয়নি কেন? বাদপড়া খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হচ্ছে ইমন বাবুর নাম। চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের হয়ে প্রতিটি ম্যাচই দর্শকদের মুগ্ধ করেন। বাংলাদেশের যদি এখনো সেরা খেলোয়াড়ের নাম আসে ইমনের নাম উচ্চারিত হবে।
১৯৯৩ সালে ঢাকায় সাফ গেমসে মোহামেডানের সাব্বির বাদ পড়ায় ক্রীড়াঙ্গনে হৈচৈ পড়ে যায়। এবার হচ্ছে ইমনকে ঘিরে। মোহামেডানের রেজাল্ট লিগে লজ্জাকর হলেও তকলিস আহমেদ দুরন্ত পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছেন। বিশেষ করে দ্বিতীয় পর্বে তার খেলা ছিল অসাধারণ। ব্রাদার্সের মান্নাফ রাব্বি ও রহমতগঞ্জের রাকিবুল সারা মৌসুমেই ভালো খেলেছেন। অথচ তাদের ঠাঁই হয়নি প্রাথমিক স্কোয়াডে। রহমতগঞ্জের কোচ জিলানী তো বলেই ফেললেন রবিওল লিগ সেরা উদীয়মান খেলোয়াড় হয়েছেন। এখানে যদি দ্বিতীয় পুরস্কার থাকত তা পাওয়ার যোগ্যতা ছিল রাকিবুলের। তাকে কেন রাখা হলো না সেটাই বড় প্রশ্ন।