দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়াম সেজেছে নতুন রূপে। সাফ অঞ্চলের দেশগুলোর পতাকা উড়ছে পতপত করে। রং তুলির শেষ আঁচড়ে শিল্পীরা সাজিয়ে তুলেছে কাঠমান্ডুর এই স্টেডিয়ামটি। আজ ১৩তম এসএ গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে এই স্টেডিয়ামেই। নাচ-গান আর লেজার শো’র মধ্য দিয়ে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করবে দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিকখ্যাত এস এ গেমস। এই অনুষ্ঠানে নেপালের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা ছাড়াও সহযোগী হিসেবে থাকছে স্কুল-কলেজের হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী। নাচ-গানের পাশাপাশি আতশবাজির ধামাকা তো থাকছেই। তবে বার বার পিছিয়ে যাওয়া এই গেমস আয়োজনের প্রস্তুতি শেষ করতেও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কাজ করতে হলো আয়োজকদের। এসএ গেমসের প্রথম আসর বসেছিল নেপালের কাঠমান্ডুতে। এরপর ১৯৯৯ সালেও কাঠমান্ডু আয়োজক হয় গেমসটির। তৃতীয়বারের মতো একই ভেন্যূতে ফিরেছে এস এ গেমস। আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান রমেশ কুমার সিলওয়াল সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমাদের সব প্রস্তুতিই সম্পন্ন হয়েছে। অবকাঠামোগত দিক দিয়েও প্রস্তুত। এখন অপেক্ষা কেবল বাঁশি বাজার।’ অনুষ্ঠানের শেষদিকে মশাল জ্বালাবেন গেমসে নেপালের পক্ষে চারবারের সোনাজয়ী সাবেক তায়কোয়ান্দো তারকা দীপক বিষ্ঠা।
ক্রীড়াবিদদের পক্ষ থেকে শপথ বাক্য পাঠ করবেন তারকা ক্রিকেটার পরেশ খড়কা এবং কোচদের পক্ষ থেকে রেফারি দীপক থাপা। এবার এস এ গেমসে ২৬টি ডিসিপ্লিনে ১১৩৫টি পদকের জন্য লড়বেন সাত দেশের ১০ হাজারের বেশি ক্রীড়াবীদ। যার মধ্যে ২৫টি ডিসিপ্লিনে বাংলাদেশের ৪৬২ জন ক্রীড়াবিদও আছেন। গেমসে স্বর্ণ পদকের সংখ্যা ছিল ৩১৯টি। প্যারাগ্লাইডিংও তালিকায় ছিল। তবে অংশগ্রহণকারী দল না পাওয়ায় গেমস থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এই ডিসিপ্লিনটি। গেমসের ১১টি ডিসিপ্লিনে অংশ নিচ্ছে না ভারত। ক্রিকেট, ফুটবল, আরচারিতে ভারত না থাকায় বাংলাদেশের সোনার পদক জয়ের সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে গেছে। এস এ গেমসে এরই মধ্যে ভলিবলের লড়াই শুরু হয়ে গেছে। আজ সেমিফাইনালের লড়াই হবে ভলিবলে। এছাড়াও আজ ব্যাডমিন্টনের লড়াই শুরু হবে। কারাতে দলও আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে লড়াইয়ে জন্য প্রস্তুত হবে। অবশ্য কারাতের মূল লড়াই শুরু হবে কাল থেকে। গেমসের অন্যতম আকর্ষণ অ্যাথলেটিকসের লড়াই শুরু হবে ৩ ডিসেম্বর থেকে। ১০০ মিটার স্প্রিন্টের ফাইনাল লড়াই অনুষ্ঠিত হবে ৪ ডিসেম্বর সকালে। বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় লড়াই আরচারি শুরু হবে ৫ ডিসেম্বর থেকে। এদিন বাছাইপর্ব অনুষ্ঠিত হবে। আরচারির মূল লড়াই হবে ৬ ডিসেম্বর থেকে।
এস এ গেমসের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। সব অনিশ্চয়তার অবসান হচ্ছে আজ। ভারত বেশ কয়েকটা ডিসিপ্লিনে অংশ না নেওয়ায় প্রথমবারের মতো পদক তালিকার শীর্ষে নতুন কোনো নাম দেখা যেতে পারে। সেই নামটি কী বাংলাদেশ! নাকি অন্য কোনো দেশ থাকবে শীর্ষে! ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হচ্ছে চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য।
এক নজরে ১৩তম এসএ গেমস
সময়কাল : ১-১০ ডিসেম্বর।
অংশগ্রহণকারী দেশ : বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপ।
ক্রীড়া ডিসিপ্লিন : ২৬টি।
সোনার পদক : ৩১৯টি।
অ্যাথলেট : ১০ হাজারের বেশি।
নতুন করে যুক্ত : মেয়েদের ক্রিকেট।