শনিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

অপেক্ষা বাড়ল ক্রিকেট ফেরার

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ স্থগিত

ক্রীড়া প্রতিবেদক

অপেক্ষা বাড়ল ক্রিকেট ফেরার

করোনভাইরাসে স্থগিত দেশের ক্রীড়াঙ্গন। খেলা নেই মিরপুর স্টেডিয়ামে। এই ফাঁকে মাঠ পরিচর্যা করছেন মাঠকর্মীরা -রোহেত রাজীব

সিরিজ হবে না, আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অধিনায়ক টিম পেইন। এবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সিরিজ স্থগিতের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে দুই টেস্ট ম্যাচ সিরিজটি একেবারেই বাতিল হয়ে যায়নি। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলের যে কোনো সবিধাজনক সময়ে আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে বিসিবির। এর আগে নিরাপত্তাজনিত অজুহাতে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সফর স্থগিত করেছিল অস্ট্রেলিয়া। এক বছর পর ২০১৭ সালে অবশ্য দুই টেস্ট ম্যাচ সিরিজ খেলেছিলেন স্টিভ স্মিথ, মিচেল স্টার্করা। মহামারী করোনাভাইরাসের জন্য এর আগে বাংলাদেশের পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ড সফরও স্থগিত হয়েছে। করাচিতে একটি ওয়ানডে ও একটি টেস্ট  খেলার কথা ছিল এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। মে মাসে আয়ারল্যান্ডে ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজ খেলারও কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের জন্য সফর দুটি স্থগিত হয়েছে। বাংলাদেশ সফরে ১০-১৪ জুন চট্টগ্রামে এবং ১৮-২২ জুন ঢাকায় দুটি টেস্ট খেলার কথা ছিল অসিদের।

করোনাভাইরাসে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশই এখন লকডডাউন। ১৯০ দেশের ১৬ লাখের ওপর লোক আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা ৯৭ হাজার ছুঁই ছুঁই। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪২৪ এবং মৃতের সংখ্যা ২৭। অস্ট্রেলিয়ায় আক্রান্ত রোগী ৬২০৩ ও মৃতের সংখ্যা ৫৭। কভিড-১৯ ভাইরাসে বিপর্যস্ত জনজীবন। বন্ধ খেলাধুলা। শুধু ক্রিকেট নয়, পিছিয়ে গেছে অলিম্পিক, কোপা আমেরিকা কাপের মতো দুই দুটি গ্র্যান্ড আসর। সংশয়ে পড়ে গেছে টি-২০ বিশ্বকাপের ভবিষ্যৎ। অক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় আসরটি হওয়ার কথা। এ ছাড়া আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের খেলাগুলো বন্ধ হওয়ায় শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে ক্রিকেটের শাসক সংস্থা। এমন কঠিন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে এবং ভবিষ্যৎ মসৃণ করতে ২৭ এপ্রিল জরুরি সভায় বসছে আইসিসি। সেখানেই আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ও টি-২০ বিশ্বকাপসহ নানা বিষয়ে আলোচনার কথা জানালেন বিসিবি সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসে পরিস্থিতি দিন দিন কঠিন হচ্ছে। তবে এখনই বলা যাচ্ছে না সবকিছু। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ও টি-২০ বিশ্বকাপ এবং অপরাপর বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতেই ২৭ এপ্রিল বৈঠকে বসছে আইসিসি। এরপরই সব কিছু সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে বলা যাবে।’

চলতি মাসের শুরুতে করাচি যাওয়ার কথা ছিল টাইগারদের। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করলে বিসিবি ও পিসিবি নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে স্থগিত করে সিরিজটি। মে মাসে আয়ারল্যান্ড সফরে যাওয়ার কথা ছিল তামিম, মুশফিকদের। সেটাও স্থগিত হয়েছে। এবার স্থগিত হলো বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ। এ বিষয়ে বিসিবি সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, ‘সিরিজ স্থগিতাদেশের বিষয়টি ক্রিকেটার, সমর্থক ও দুই দলের জন্যই হতাশার। করোনাভাইরাস মহামারী রূপ নেওয়ায় স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। দুই দলের ক্রিকেটারদের এসব বিবেচনায় বিসিবি ও অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড পারস্পরিক আলোচনার পর সিরিজ স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আশা করি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নিকট ভবিষ্যতে সুবিধাজনক সময়ে সিরিজটি পুনরায় আয়োজন করতে পারব। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ডের সিইও কেভিন রবার্টস বলেন,?‘আমরা জানি ক্রিকেটের ক্যালেন্ডারটা খুবই ব্যস্ত। সিরিজটি স্থগিত করা হয়েছে পরিস্থিতি বিবেচনা করে। তবে আমরা চেষ্টা করব বাংলাদেশকে দেওয়া প্রতিশ্রুতিকে সম্মান জানাতে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আলোচনার ভিত্তিতে একটি তারিখ ঠিক করে ফের সিরিজটি আয়োজনের জন্য কাজ করব।’

অস্ট্রেলিয়া সিরিজ স্থগিত হওয়ায় হতাশ ক্রিকেটার, ক্রিকেটপ্রেমীরা। তবে খেলার আগে জীবন বলেই মেনে নিয়েছেন ক্রিকেটাররা। বেঁচে থাকলে মাঠে খেলা গড়াবেই।

 

করোনাভাইরাসে স্থগিত তিন সিরিজ

পাকিস্তান সিরিজ

তৃতীয় ধাপে পাকিস্তান যাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। ৩ এপ্রিল করাচিতে একমাত্র ওয়ানডে ও ৫-৯ এপ্রিল দ্বিতীয় টেস্টটি খেলার কথা ছিল। এর আগে লাহোরে তিনটি টি-২০ ও রাওয়ালপিন্ডিতে একটি টেস্ট খেলেছিল বাংলাদেশ।

 

আয়ারল্যান্ড সিরিজ

মে মাসে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনটি ওয়ানডে ও চারটি টি-২০ ম্যাচ খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ ডাবলিনে শুরুর কথা ছিল ১৪ মে। টি-২০ সিরিজ হওয়ার কথা ছিল ২২ মে।

 

অস্ট্রেলিয়া সিরিজ

জুনের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় আসার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। সফরে দুটি টেষ্ট খেলার কথা টিম পেইনদের। চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টেস্ট অনুষ্টিত হওযার কথা ছিল ৮-১২ জুন এবং মিরপুরে দ্বিতীয় টেস্ট হওয়ার কথা ছিল ১৮-২২ জুন।

সর্বশেষ খবর