বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

খেলোয়াড়দের বর্ণহীন বৈশাখ

বাংলা সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় উৎসব পয়লা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটি বর্ণিল ও বর্ণাঢ্যভাবে উদযাপন করেন বাংলাভাষীরা। করোনাভাইরাসের জন্য এবার কোনো আয়োজনই হয়নি। ঘরবন্দী সবাই পরিবার, পরিজনদের নিয়ে উদযাপন করেছেন বৈশাখের প্রথম দিনটি। তবে তাতে ছিল না কোনো আড়ম্বরতা। অন্য সবার মতো ঘরবন্দী মুমিনুল হক, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, তামিম ইকবাল, রোমান সানা, আশরাফুল ইসলাম রানারা বর্তমান পরিস্থিতি মেনে ঘরেই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। পালন করেছেন বাংলা নববর্ষের দিনটি

খেলোয়াড়দের বর্ণহীন বৈশাখ

মুমিনুল হক

অন্যান্য দিনগুলোর এদিনও ঘরেই কাটিয়েছেন টাইগার টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক। সকালে ফিটনেস ঠিক রাখতে ফিজিওর বেঁধে দেওয়া ছকে অনুশীলন করেছেন। টেস্ট অধিনায়ক ঘরেই কাটিয়েছেন দিনের পুরোটা সময়, ‘সকালে ফিটনেস ট্রেনিং করেছি। এরপর ঘরেই থেকেছি। এই মুহুর্তে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর, তাতে পহেলা বৈশাখ পালনের  কারন দেখিনা।  আমার কাছে সবকিছুর আগে জীবন।’

মুস্তাফিজুর রহমান

‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান উদযাপন করেননি পহেলা বৈশাখ। পরিবারের সাথে সময় কাটানোর পাশাপাশি প্রিয় কবুতরগুলোকে খাবার খাইয়েছেন। ফিটনেস ঠিক রাখতে অনুশীলনও করেছেন। পহেলা বৈশাখ তিনি কখনোই উদযাপন করেন না. ‘পহেলা বৈশাখ পালন করা বাধ্যতামূলক নয়। আমি সাধরনতঃ পহেলা বৈশাখে কখনোই ঘরের বাইরে যাইনা। এই লক ডাউনে আমি পুরোপুরি ঘরবন্দী। যা আমার মতো মানুষের জন্য খুবই ভালো।’ বৈশাখ নয়, আমি চিন্তিত করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে। পরিস্থিতি দিন দিন যেভাবে খারাপের দিকে যাচ্ছে, তাতে ভ্যাকসিন আবিস্কার না হওয়া পর্যন্ত এর কোনো সমাধান দেখছিনা।’

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ

দ্বিতীয় সন্তানের বাবা হয়েছেন টি-২০ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এই কঠিন পরিস্থিতিতে তিনি ঘরে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। সবসময়ই বাবা, মা, স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করেছেন। এবার ঘরেই কাটিয়েছেন। পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে না পেরে মন খারাপ নেই টি-২০ অধিনায়কের, ‘পহেলা বৈশাখ শুধু বছরের প্রথম দিন নয়। বাঙ্গালীর জীবন সংস্কৃতির অন্যতম বড় উৎসব এটি। আমি সবসময়ই পরিবার নিয়ে বৈশাখ উদযাপন করেছি। এবার করোনাভাইরাসের জন্য বাসায় পরিবারের সঙ্গে কাটিয়েছি বাবা-মা, স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে। একইসঙ্গে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছি এই অবস্থা থেকে যেন তিনি আমাদের মুক্তি দেন।’

তামিম ইকবাল

টাইগারদের নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক পহেলা বৈশাখ উদযাপন করেননি। তবে তার নিজস্ব ফেইসবুক পেজে ভক্তদের বাংলা নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে অনুরোধ করেছেন ঘরে থাকতে, ‘সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা। তবে অনুরোধ সবাই যেন বাসায থাকেন। আশা করি পরিস্থিতি ঠিক হয়ে আসলে আগামীবছর আমরা সবাই নতুন বছর উদযাপন করবো।’

আশরাফুল ইসলাম রানা

করোনাভাইরাসে ফুটবল লিগ বন্ধ। অফুরন্ত সময় এখন জাতীয় দল ও শেখ রাসেলের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানার। ঘরবন্দী হলেও অলস সময় কাটাচ্ছেন না। ফিটনেস ট্রেনিং করছেন। আগের বছরগুলোতে বৈশাখ পালন করলেও এবার ঘরেই উদযাপন করেছেন, ‘পরিস্থিতি আপনাকে মানতেই হবে। আমাদেও সেরা উৎসব পহেলা বৈশাখ। আমরা সবসময়ই দারুণভাবে উদযাপন করি। এবার করতে পারিনি। তবে পরিস্থিতি ভালো হলে অবশ্যই আমরা উদযাপন করবো।’

 মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন

দেশসেরা অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে ঘটা করেই পহেলা উদযাপন করতেন। এবার অবশ্য সেটা করতে পারেননি মহামারী করোনাভাইরাসের জন্য। এবার সাইফুদ্দিন ঘরেই কাটিয়েছেন ফিটনেস অনুশীলন করে, ‘পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে হৈ হুল্লোর করে বৈশাখ উদযাপন করতাম। এবার লকডাউন। তাই কোনোকিছুই করা সম্ভব হয়নি। পহেলা বৈশাখ বাঙ্গালীর সবচেয়ে বড় উৎসব। কিন্তু পরিস্থিতির জন্য এবার কোনো কিছু হয়নি। তবে আশা করছি আগামী বছর আমরা নতুন করে উদযাপন করবো।’

রোমান সানা

বরাবরই পরিবার নিয়ে উদযাপন করেছেন পহেলা বৈশাখ। করোনাভাইরাসের জন্য এখন ঘরবন্দী। ঘরে বসে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উদযাপন করেছেন বছরের প্রথম দিনটি, ‘পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে না পেরে কষ্ট পেয়েছি। কিন্তু পরিস্থিতি যে ভয়াবহ, তাতে এটা পালন করা সম্ভব নয়। পরিস্থিতি ঠিক হলে ভবিষ্যতে উদযাপন করা যাবে। এখন সবচেয়ে জরুরী ঘরে থাকা। কারন, ঘরে থাকলেই নিরাপদ থাকা সম্ভব।’

সর্বশেষ খবর