বাংলাদেশে ফুটবল লিগ বাতিলের ঘটনা বিরল। ১৯৭২ সালে দুই ক্লাবের ম্যাচে গ-গোলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে লিগ বাতিল হয়েছিল। এরপর আর কখনো মাঝপথে লিগ বাতিল হয়নি। দীর্ঘদিন পর ফের ফুটবল লিগ বাতিল হলো। করোনাভাইরাসের কারণে গত মার্চেই লিগ স্থগিত হয়ে গিয়েছিল সরকারি নির্দেশনায়। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পরও অবস্থা স্বাভাবিক না হওয়ায় ক্লাবগুলো আগেই লিগ বাতিল করার দাবি জানিয়েছিল। অবশেষে নির্বাহী কমিটির সভায় লিগ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাফুফে।
সভা শেষে বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদি বলেন, ‘লিগ কমিটিতে ক্লাবগুলো লিগ বাতিলের অনুরোধ জানিয়েছিল। সার্বিক প্রেক্ষাপটে আমরা চলমান লিগ বাতিল ঘোষণা করছি। চলমান মৌসুমে স্বাধীনতা কাপসহ অন্য প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হবে না।’ গত মার্চে লিগের ষষ্ঠ রাউন্ড শেষ হয়েছিল। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও ইউরোপের কয়েকটি লিগে ম্যাচ বাকি থাকা সত্ত্বেও চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশে মাত্র ছয় রাউন্ড হওয়ায় এটি সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন লিগ কমিটির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘কিছু ক্লাব ছয় ম্যাচ আর কিছু ক্লাব পাঁচ ম্যাচ করে খেলেছে। মোট ম্যাচ হওয়ার কথা যেখানে ২৪টি। ফলে চলমান লিগে চ্যাম্পিয়ন বা রেলিগেশন কিছুই হবে না।’ ফুটবলারদের সঙ্গে ক্লাবগুলোর চুক্তি বিষয়ে পরবর্তীতে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সালাম মুর্শেদি বলেন, ‘পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে আমরা ক্লাব-খেলোয়াড়দের এই বিষয়গুলো নিয়ে বসব। পরিস্থিতি দ্রুত ভালো হলে নতুন মৌসুম সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকে শুরু হতে পারে। তবে এর আগে আমরা নির্বাচন আয়োজন করব। নতুন কমিটি এসেই নতুন লিগ আয়োজন করবে।’ লিগ বাতিল হওয়ায় এএফসি কাপে খেলা নিয়েও কিছুটা সংশয় দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ বলেন, ‘আমরা ক্লাবগুলোর স্বার্থরক্ষার চেষ্টা করব। ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বসুন্ধরা কিংস যাতে এএফসি কাপের মূল পর্বে সরাসরি খেলতে পারে তার অনুরোধ করব আমরা। পাশাপাশি আরেকটি দলকে প্লে-অফে খেলানোর সুযোগ করে দেওয়া যায় কিনা তা নিয়েও এএফসির সঙ্গে আলোচনা করব।’
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান আশরাফুদ্দিন আহমেদ চুন্নু বাফুফের লিগ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে বলেন, ‘লিগ বাতিল করার সিদ্ধান্তের জন্য বাফুফেকে ধন্যবাদ জানাই। তবে এই সিদ্ধান্ত আরও আগে নিতে পারলে ক্লাবগুলো অনেক লোকসানের হাত থেকে বাঁচতে পারত।’