বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

অনিশ্চিত পেশাদার লিগ

বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ও সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদীর টার্গেট নভেম্বরেই ফুটবল মাঠে নামানোর। তবে তা নির্ভর করছে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ওপর

ক্রীড়া প্রতিবেদক

অক্টোবরের বিশ্বকাপ ও এএফসি কাপ বাছাই পর্বে মাঠে নামছেন ফুটবলাররা। তার আগে আগামী মাস থেকেই অনুশীলন শুরু হয়ে যাবে। অলস সময় কাটিয়ে প্রায় সাত মাস পর প্রতিযোগিতামূলক লড়াইয়ে ফিরছেন তারা। ব্যস্ত সময় কাটবে ফুটবলারদের। মাঠে নামাটা নিঃসন্দেহে স্বস্তির। ফুটবলাররা বলছেন আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশ নেওয়াটা বড় আনন্দের। তবে তাদের দাবি যত দ্রুত সম্ভব ঘরোয়া আসরের তারিখ নির্ধারণ করার। এটাই তাদের আয়ের একমাত্র পথ। গেল মৌসুমে ফেডারেশন কাপ শুধু মাঠে নেমেছিল। করোনার কারণে মাঠ গড়িয়ে পেশাদার লিগ বাতিল হয়ে যায়। স্বাধীনতা কাপও হতে পারেনি। করোনাভাইরাসে ফুটবলে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে তাতে চলতি বছরে পেশাদার লিগ মাঠে না গড়ানোর সম্ভাবনা বেশি।

বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ও সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদীর টার্গেট নভেম্বরেই ফুটবল মাঠে নামানোর। তবে তা নির্ভর করছে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ওপর। সালাম বলেন, ‘আমরা কেউ জানি না নভেম্বরে পরিবেশ কেমন থাকবে। বিশেষ করে কোরবানি ঈদের পর করোনা বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন অনেকেই। তাই টার্গেট অনুযায়ী মৌসুম শুরু করা যাবে কিনা তা দেখার বিষয়।’

লিগ কমিটির চেয়ারম্যানের মুখে অনিশ্চয়তার সুর। ক্লাবগুলোও প্রস্তুত নয়। দুবার লিগজয়ী ব্রাদার্স ইউনিয়নের সদস্যসচিব মহিউদ্দিন আহমেদ মহি বলেন, ‘আমিও চাই ফুটবল মাঠে গড়াক। অধিকাংশ ফুটবলারই অর্থকষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। অথচ এ ব্যাপারে বাফুফে নীরব। তারা ক্লাবগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে পারত কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়। শুধু টার্গেটের কথা বলে লাভ কী? অন্য ক্লাবের অবস্থা কী তা আমি জানি না। তবে ব্রাদার্সের কথা বলতে পারি, হুট করে শিডিউল ঘোষণা করলে আমাদের মাঠে নামা অসম্ভব। এখন পর্যন্ত বন্ধ হওয়া লিগে দেশি ও বিদেশি ফুটবলারদের পেমেন্ট বুঝিয়ে দেওয়া যায়নি। অর্থ নেই, বাফুফেও বকেয়া টাকা দিচ্ছে না। এসবের সমাধান করেই তো মৌসুম শুরু করতে হবে। এলোমেলোভাবে লিগ শুরু করলে সবার জন্যই ক্ষতি। এখন এসব সিদ্ধান্ত নিতে হবে বাফুফেকে।’

বাদল রায় বলেন, ‘ফুটবলার হিসেবেই আমি পরিচিতি লাভ করেছি। তাই ফুটবলারদের কষ্টটা বুঝি। মোহামেডান অবশ্যই খেলতে রাজি। তার আগে সমস্যাগুলোর সমাধান চাই। আমি বলব, খেলোয়াড়রা যে অর্থকষ্টে আছেন এর জন্য দায়ী বাফুফে। লিগ কমিটি পুরোপুরি ব্যর্থ। তারা আমাদের বকেয়া শোধ করলে ফুটবলাররা কিছুটা উপকৃত হতেন। নভেম্বরে মৌসুম শুরু করতে চাই বললেই হবে না। মানলাম সংকট তৈরি হয়েছে করোনার কারণে। কিন্তু বাফুফের কি উচিত ছিল না সমস্যা নিয়ে ক্লাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসা? পেশাদার লিগে ১৩টি ক্লাব। আমি বলব, ৫-৬টি ছাড়া বাকি ক্লাবই অর্থ সংকটে ভুগছে। বাফুফে না হয় সহযোগিতা করতে পারবে না। তারা তো ন্যায্য পাওনাই ঝুলিয়ে রেখেছে। এমন সংকট কীভাবে কাটানো যায় তা নিয়ে বাফুফের কোনো ভাবনাই নেই! তাহলে ফুটবল মাঠে গড়াবে কীভাবে?’

শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের পরিচালক (ক্রীড়া) সালেহ জামান সেলিম বলেন, ‘আমরা মাঠে নামতে প্রস্তুত। খেলোয়াড়রা অর্থ সংকটে আছেন। এ অবস্থায় লিগ অনিশ্চয়তায় থাকলে তাদের হতাশা বেড়ে যাবে। তবে সবকিছু গুছিয়ে মৌসুম শুরু করা উচিত। বর্তমান কমিটি ফুটবলকে মাঠে রেখেছে। এজন্য ধন্যবাদ পেতেই পারে। কিন্তু করোনাকালে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তা সমাধান না করলে ফুটবলে বড় ধরনের জটিলতা তৈরি হবে। আমি চাই সব ক্লাবের অংশগ্রহণে পেশাদার লিগ। এসব কারণে অনেকের আশঙ্কা চলতি বছরে ফুটবল মাঠে গড়ানো নিয়ে। এ চ্যালেঞ্জে বাফুফেকে জয়ী হতে হলে এখন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। না হলে দায়ভার তাদের ওপরই আসবে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর