নির্ধারিত ৯০ মিনিটসহ যোগ করা সময় পর্যন্ত স্পেন-ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের চিত্র ০-১, ১-১, ২-১, ৩-১, ২-৩ ও ৩-৩। পরের ৩০ মিনিটে ‘রূপকথা’ লিখেছে লুইস এনরিকের স্পেন। গোল করেছে ২টি। গত বিশ্বকাপের তৃতীয় দল ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর ১২০ মিনিটের ম্যাচটি ৫-৩ গোলে জায়গা করে নিয়েছে কোয়ার্টার ফাইনালে তিনবারের ইউরো চ্যাম্পিয়ন ও একবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেন। সেমিফাইনালে উঠার লড়াইয়ে এনরিকের শিষ্যরা ২ জুলাই মুখোমুখি হবে ইউরোতে আরেক ইতিহাস লেখা সুইজারল্যান্ডের। চ্যাপুইসসাতের সুইজারল্যান্ডও ইতিহাস গড়ে টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে বিদায় করে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা নিয়ে।
‘টিকিটাকা’ ফুটবল গোল গোটা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের মন জয় করেছে। জয় করেছে বিশ্বকাপ ফুটবল। অথচ চলতি ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম দুই ম্যাচে সেই স্পেনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। সুইডেনের সঙ্গে গোল শূন্য ড্র করে যাত্রা করে।
পরের ম্যাচে পোল্যান্ডের সঙ্গে ড্র করে ১-১ গোলে। দুই ম্যাচে মাত্র এক গোল!ফুটবল বিষারদরা সমালোচনায় এফোর-ওফোর করে ছাড়েন কোচ এনরিকে। কিন্তু স্প্যানিশ কোচ এসবে কর্ণপাত করেননি। শুধু জানিয়েছিলেন, তার আস্থা রয়েছে শিষ্যদের উপর। সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন সারাবিয়া, আঝপিলিকুয়েয়তা, ফার্নান তোরেস, মোরাতা. ওইয়ার্ঝাবালরা। গ্রুপের শেষ ম্যাচে স্বেলাভাকিয়কে ৫-০ গোলের পর পরশু রাতে রূপকথার ম্যাচে মডরিচদের সব দর্পচূর্ণ করে গুনে গুনে ৫ গোল দিয়েছে। দুই ম্যাচে ১০ গোল! ইউরোর ইতিহাসে এমন রেকর্ড খুবই কম আছে। সেই রেকর্ড গড়ে এখন ফেবারিটের তকমাটা নিজেদের গায়ে সেঁটে নিয়েছে স্পেন।
ম্যাচে ২০ মিনিটে ক্রোটরা এগিয়ে যায় আত্মঘাতী গোলে। স্প্যানিশ ডিফেন্ডার পেদ্রির ব্যাক পাস পা দিয়ে ঠেকাতে গোলরক্ষক গনজালেসের ভুলে বল আশ্রয় নেয় জালে (১-০)। ৩৮ মিনিটে সমতা আনে স্পেন মিডফিল্ডার পাবলো সারাবিয়ার গোলে(১-১)। ক্রোট গোলরক্ষক লিভাকোভিচ স্প্যানিশ ফুটবলার গায়ার শট সেভ করলে ফিরতি বলে গোল করেন সারাবিয়া। প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ গোলে। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচ শুরুর পর আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে দুর্দান্ত খেলা উপহার দিতে থাকে দুই দল। ৫৬ মিনিটে স্পেনকে ২-১ গোলে এগিয়ে নেন আঝপিলিকুয়েতা। ৭৮ মিনিটে ৩-১ ব্যবধানে দলকে এগিয়ে নেন স্প্যানিশ তারকা তোরেস। এই গোলের পর উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেন স্প্যানিশ কোচ এনরিকে। কিন্তু এরপরই নাটকের শুরু। ৮৫ মিনিটে ক্রোটদের ম্যাচে ফেরান ওরসিচ। স্কোর লাইন ২-৩ হলে জমে উঠে ম্যাচ। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। যোগ করা ৬ মিনিটের দ্বিতীয় মিনিটেই গোল করেন মারিও প্যাসালিক (৩-৩)। এরপরই রূপকথা। পরের ৩০ মিনিটে আরও দুই গোল করে। যদি প্রথম সুযোগ পেয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু কাজের কাজ করে তিনবারের ইউরো চ্যাম্পিয়নরা। ১০০ মিনিটে ব্যবধান ৪-৩ করেন মোরাতা এবং ১০৩ মিনিটে মডরিচদের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন ওরঝারবাল।