শনিবার, ২৪ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা
জিম্বাবুয়ে সফরে বাংলাদেশ

লাল-সবুজে সম্মিলিত প্রয়াস

মেজবাহ্-উল-হক

লাল-সবুজে সম্মিলিত প্রয়াস

ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়েকে ৩-০-তে হোয়াইটওয়াশ করার পর ট্রফি হাতে বাংলাদেশ দলের উল্লাস

বাংলাদেশ দলে ক্রমশ বেড়েই যাচ্ছিল সিনিয়র ক্রিকেটারদের ওপর অধিক নির্ভরতা। সিনিয়ররা ভালো করলে দল জেতে না হলে হারে। জিম্বাবুয়ে সফরে এবার দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। সুখকর এক ক্রিকেট দলের ছবি। লাল-সবুজে সম্মিলিত প্রয়াস। সিনিয়রদের পাশাপাশি সমানতালে পারফর্ম করে যাচ্ছেন তরুণ ক্রিকেটাররাও।

বাংলাদেশ দলে ক্রমশ বেড়েই যাচ্ছিল সিনিয়র ক্রিকেটারদের ওপর অধিক নির্ভরতা। সিনিয়ররা ভালো করলে দল জেতে না হলে হারে। জিম্বাবুয়ে সফরে এবার দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। সুখকর এক ক্রিকেট দলের ছবি। লাল-সবুজে সম্মিলিত প্রয়াস। সিনিয়রদের পাশাপাশি সমানতালে পারফর্ম করে যাচ্ছেন তরুণ ক্রিকেটাররাও।

ওয়ানডে সিরিজে ব্যাটে-বলে অলরাউন্ডান্ড পারফর্ম করে সাকিব আল হাসান ‘ম্যান অব দ্য সিরিজ’ হলেও জিম্বাবুয়েকে বাংলাদেশ যে ৩-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে সেখানে একাধিপত্য নেই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের। তারপরও সাকিব ৭২.৫০ গড়ে করেছেন ১৪৫ রান, বল হাতে নিয়েছেন ৮ উইকেট।

প্রথম দুই ম্যাচে সুবিধা করতে না পারলেও শেষ ওয়ানডেতে দারুণ এক সেঞ্চুরি করেছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তিনি ৯৭ বলে খেলেছেন ১১২ রানের ইনিংস।

ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান লিটন কুমার দাসের। তামিমের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে ৫১.৬৬ গড়ে ১৫৫ রান করেছেন তিনি। দারুণ বোলিং করেছেন তরুণ তারকা পেসার শরিফুল ইসলাম। দুই ম্যাচে তিনি ৫ উইকেট নিয়েছেন।

সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের দেওয়া ২৯৯ রানের বিশাল টার্গেটেও অনায়াসে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ। প্রথম দুই ওয়ানডেতে টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা ততটা সুবিধা করতে পারেননি।

প্রথম ম্যাচে লিটন একাই টেনে গিয়ে গেছেন বাংলাদেশের ইনিংস। দ্বিতীয় ম্যাচে সাকিব আল হাসান একপ্রান্ত আগলে রেখে দেখিয়েছেন ক্যারিশমা। শেষ ওয়ানডেতে তামিম সেঞ্চুরি করে ফোকাস পয়েন্টে থাকলেও টপ অর্ডারের অন্য ব্যাটসম্যানরাও দারুণ খেলেছেন।

লোয়ার মিডল অর্ডারে আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন আফিফ হোসেন। স্ট্রাইকরেট ১০০-র ওপরে রেখে দ্রুত রান তোলার ক্ষেত্রে দারুণ পারদর্শী তিনি। নাসির হোসেন বাদ পড়ার পর থেকেই এ পজিশনে কেউ বেশি দিন স্থায়ী হতে পারেননি। কিন্তু আফিফ জিম্বাবুয়ে সফরে নিজেকে আলাদা করে চেনালেন। ম্যাচ ফিনিশ করার ক্ষেত্রে দেখিয়েছেন দারুণ চমক।

প্রথম টি-২০তে দাপট দেখিয়েছেন সৌম্য সরকার। স্টাইলিস্ট এ ব্যাটসম্যান অনেক দিন থেকেই রান পাচ্ছিলেন না। কিন্তু প্রথম টি-২০তে ৪৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে বুঝিয়ে দিলেন তিনি এখনো ফুরিয়ে যাননি। ব্যাকআপ বোলার হিসেবেও তিনি ছিলেন কার্যকরী। এ কারণে ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ পুরস্কারও জিতেছেন।

প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো করার পরও ওপেনিংয়ে সুযোগ পাচ্ছিলেন না মোহাম্মদ নাঈম। ওয়ানডেতে অবশ্য তার জন্য সুযোগও ছিল না। কেন না তামিম-লিটন দুজন ছিলেন ফর্মের তুঙ্গে। তবে প্রথম টি-২০তে সুযোগ পেয়েই তা কাজে লাগালেন। খেললেন হার না মানা ৬৩ রানের ইনিংস।

উইকেটরক্ষক হিসেবে নুরুল হাসান সোহান সেরা পছন্দ। কিন্তু তিনি কার জায়গায় খেলবেন! সিরিজ নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর শেষ ওয়ানডেতে মেহেদী হাসান মিরাজের জায়গায় সুযোগ পেয়েই খেলেছেন অপরাজিত ৪৫ রানের ইনিংস।

টেস্টেও তরুণরা ক্যারিশমা দেখিয়েছেন। যদিও ১৫০ রানের ক্যারিশম্যাটিক ইনিংস খেলে বিদায়ী ম্যাচে সেরা হয়েছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু একই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে সাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্তর জোড়া সেঞ্চুরি বাংলাদেশের জয় সহজ করে দিয়েছিল। বোলার হয়ে তাসকিনও খেলেছেন ৭৫ রানের একটি ইনিংস। 

বাংলাদেশ দলে এখন এমন অবস্থা যে যখন সুযোগ পাচ্ছেন তা কাজে লাগিয়ে পারফর্ম করছেন। সিনিয়ররা ভালো করছেন, তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তরুণরা নিজেদের দাপট দেখাচ্ছেন। আর সম্মিলিত প্রয়াসে আসছে সাফল্য।

সর্বশেষ খবর