শিরোনাম
শনিবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

সবুজ উইকেটে স্বপ্নের লড়াই

টেলর বললেন, প্রথম ম্যাচ জিতে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সবুজ উইকেটে স্বপ্নের লড়াই

মাউন্ট মঙ্গানুই জয় করে সিরিজে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। এখন ক্রাইস্টচার্চে ড্র করতে পারলেই নিশ্চিত হয়ে যাবে সিরিজ। আরেকটি বিরল রেকর্ডের প্রতীক্ষায় মুমিনুলরা।

ক্রাইস্টচার্চের সবুজ উইকেটে স্বপ্নের লড়াইয়ে মাঠে নামছে টিম বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে কাল ভোর ৪টায়। সিরিজটি দুই টেস্টের হওয়ায় এখন হারানোর কিছু নেই টাইগারদের। কারণ, এ ম্যাচে হারলেও সিরিজ ড্র হয়ে যাবে। তবে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে পাওয়া আত্মবিশ্বাস নিয়ে ক্রাইস্টচার্চে পা রেখেছেন ক্রিকেটাররা। পুরো ক্রিকেট বিশ্বই প্রশংসায় ভাসিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। তবে প্রথম টেস্টে জিতে এগিয়ে থাকলেও পা মাটিতেই রয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। ক্রাইস্টচার্চেও তারা জয়ের জন্য বদ্ধপরিকর।

প্রথম টেস্টে প্রচ  এক ধাক্কা খায় নিউজিল্যান্ড। টেস্টের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলটি যে ঘরের মাঠে হেরে গেছে ফরম্যাটের র‌্যাংঙ্কিয়ে তলানির দলটির বিরুদ্ধে। তাই পরের ম্যাচে প্রতিশোধ নিতে চাইবে, এটাই স্বাভাবিক।

নিউজিল্যান্ডের তারকা ব্যাটসম্যান রস টেলর খানিকটা আভাসও দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে। এখন আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে হবে। আর এমন মাঠে খেলাটা হবে, আমরা যেখানকার কন্ডিশন সমন্ধে জানি এবং অনেক সাফল্যও পেয়েছি আগে।’

ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালের উইকেট বরাবরই ব্যাটসম্যানদের জন্য পরীক্ষাগার। পেসাররা অনেক বেশি সুবিধা পান সেখানে। সবুজ ঘাসের উইকেটে গতি, বাউন্স ও সুইং থাকে অনেক বেশি। টসও সেখানে বড় ফ্যাক্টর হয়ে যায়। হ্যাগলি ওভালের উইকেট নিয়ে টেলর বলেন, ‘আমার মনে হয়, পুরো সময়ই বল উঠবে। ঘাস থাকবে অনেক। এমন কন্ডিশনে কীভাবে খেলতে হবে, তা আমাদের ব্যাটসম্যান-বোলাররা জানেন। তাই টসে জিতলে আগে বোলিং, তবে আগে ব্যাট করলে কেবল উইকেটে পড়ে থাকতে হবে। অনেক সময় লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানরাও আমাদের বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন। ২০০-র মতো রানই এখানে লড়াকু স্কোর।’

টেস্ট ক্যারিয়ারে এটিই রস টেলরের শেষ ম্যাচ। তিনি আগেই ঘোষণা দিয়েছেন এ সিরিজের পর তাকে আর সাদা পোশাকের ক্রিকেটে দেখা যাবে না। তাই সতীর্থরা চাইবেন টেলরের জন্যই জিততে। এই কিউই ব্যাটসম্যানও চাচ্ছেন বড় ইনিংস খেলে ক্যারিশম্যাটিক কিছু করে দেখাতে।

তবে সংবাদ সম্মেলনে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের দারুণ জয়ের প্রশংসা করতে ভোলেননি টেলর। ৩৭ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যান বলেন, ‘আমরা ম্যাচের পুরো সময়ই অস্বস্তিতে ছিলাম। তবে টেস্ট ক্রিকেটের ভালোর জন্যই বাংলাদেশকে উঠে আসতে হবে এবং আমার মনে হয়, এ জয় থেকে তারা অনেক আত্মবিশ্বাস পাবে।’

টেস্ট ক্রিকেট জয়ে বড় ভূমিকা থাকে বোলারদের। কারণ, জিততে হলে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট তুলে নেওয়ার সামর্থ্য থাকতে হয়। প্রথম ম্যাচে সে কাজটি দারুণভাবে করেছেন ইবাদত-তাসকিনরা। তারা কিউই ব্যাটসম্যানদের একদমই সুবিধা করতে দেননি। বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ে টেলর বলেন, ‘ওরা ধৈর্য ধরেছে। স্টাম্পে বল রেখেছে এবং আমাদের নিচে খেলতে বাধ্য করেছে। তা ছাড়া আমাদের বেশির ভাগ খেলোয়াড় তাদের ক্যারিয়ারে বেশির ভাগ মুহূর্তেই রিভার্স সুইংয়ের মুখোমুখি হয়নি।’

এদিকে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের আত্মবিশ্বাস বাংলাদেশ দলকে অনুপ্রাণিত করছে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে খেলা মানেই নিশ্চিত পরাজয়- এ বৃত্ত ভেঙেছেন মুমিনুল হকরা। সাকিব-তামিমদের মতো সেরা তারকাদের ছাড়াই কিউইদের উড়িয়ে দিয়ে টাইগাররা বুঝিয়ে দিয়েছেন নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে যেকোনো দলকে হারাতে পারে বাংলাদেশ।

হ্যাগলি ওভাল হচ্ছে কিউই ক্রিকেটারদের পছন্দের ভেন্যুগুলোর মধ্যে একটি। এ মাঠে নিউজিল্যান্ড মাত্র একটি টেস্টেই হেরেছে, সেটি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। একটি ম্যাচ ড্র করেছে ইংল্যান্ড। এ ছাড়া বাকি সব ম্যাচেই জিতেছে নিউজিল্যান্ড।

এ মাঠে সব শেষ ম্যাচে ব্লাক ক্যাপসরা পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়েছিল ইনিংস ও ১৭৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে। ভারত হেরেছিল ৯ উইকেটে। উপমহাদেশের আরেক দল শ্রীলঙ্কাকে তারা উড়িয়ে দিয়েছিল ৪২৩ রানে হারিয়ে। সেই ভেন্যুতে আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর বাংলাদেশ এবার কেমন করে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

সর্বশেষ খবর