শিরোনাম
শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

জয়ে স্বস্তি ব্যাটিংয়ে অস্বস্তি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

জয়ে স্বস্তি ব্যাটিংয়ে অস্বস্তি

ঘরের মাঠে রাসেল ডমিঙ্গোকে এর আগে এমন প্রাণ খুলে হাসতে দেখা যায়নি। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মিডিয়ার মুখোমুখিতে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন হাসিমুখে। টাইগারদের প্রোটিয়াস কোচের এমন হাসি নিকট অতীতে দেখা যায়নি। ২১৬ রানের টার্গেটে স্কোর বোর্ডে ৪৫ রান উঠতেই ৬ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে টাইগাররা। সাজঘরে বসে সেটা দেখছিলেন ডমিঙ্গো। সাজঘরে ফিরে হারের ক্ষণ গুনছিলেন, ম্যাচ শেষে বলেছেন টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবালও। অথচ দলের চরম বিপর্যয়েও অবিশ্বাস্য জয়ের স্বপ্ন দেখেছেন ডমিঙ্গো।

গতকাল মিডিয়ার মুখোমুখিতে আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে সেটাই শুনিয়েছেন টাইগার কোচ, ‘এখন শুনলে স্টুপিডের মতো মনে হবে। বিশ্বাস করাও কঠিন। কিন্তু জয়ের বিষয়ে বিশ্বাস ছিল। আমি অন্তত বিশ্বাস করেছি। উইকেট ভালো, রান রেটে কোনো সমস্যা ছিল না।

আমি জানি, আফিফ কতটা ভালো ক্রিকেটার। টি-২০ ক্রিকেটে দেখিয়েছে সে কতটা দারুণ। সাদা বলে বাংলাদেশের সেরাদের একজন হতে যাচ্ছে সে। ওদেরকে এরকম ব্যাটিং করতে দেখা তাই সন্তুষ্টির। ওই জুটি নিয়ে আমি গর্বিত।’

রশিদ খান, মুজিব উর রহমানদের মতো বিশ্বসেরা স্পিনার থাকতেও ওয়ানডেতে প্রবল প্রতিপক্ষ নয় আফগানিস্তান। জহুর আহমেদের উইকেটে বল বেশি লাফালেও ব্যাট না করার মতো বাড়তি বাউন্স নেই। এমন উইকেটে ব্যাটারদের স্ট্রোক খেলা দেশের অপরাপর উইকেটগুলো থেকে একটু সহজ। চাইলেই চাপের মুখে থেকেও বড় স্কোর গড়া সম্ভব- প্রমাণ দিয়েছেন দুই তরুণ আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মেহেদী হাসান মিরাজ। অথচ দলের চার সিনিয়র ক্রিকেটার তামিম, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদদের স্কোরগুলো যথাক্রমে ৮, ১০, ৩ ও ৮। দুই তরুণ লিটন দাস ১ ও অভিষিক্ত ইয়াসির আলি করেছেন ০ রান। সব মিলিয়ে উপরের ৬ ব্যাটারের মোট রান ৩০। এমন ব্যাটিং ধস যখন ইনিংসে, তখন সবাইকে বিস্মিত করে আকাশসম চাপে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন দুই তরুণ আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ৪৫ রানে ৬ উইকেটের পতনের পর দুই তরুণ ৩৭.৩ ওভারে যোগ করেন ১৭৪ রান। তাদের রেকর্ড গড়া জুটিতেই  অবিশ্বাস্য জয় পায় বাংলাদেশ। নিঃসন্দেহে এটি টাইগারদের সেরা জয়গুলোর একটি।

এমন ব্যাটিং বিপর্যয়েও দুই তরুণ ব্যাটিং করেছেন ঠাণ্ডা মাথায়। রশিদ ও মুজিবের স্পিনকে সামলে ঠাণ্ডা মাথায় ব্যাটিং করেছেন। জয়ের পর ম্যাচসেরা মিরাজও আত্মবিশ্বাসের কথা বলেন, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। আফিফের সঙ্গে কথা বলেছি এ উইকেটে  আমরা দুজনে ম্যাচ জেতাতে পারি। তবে বিশ্বাসটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমরা বিশ্বাস করতে পারি এ ম্যাচ জেতাতে পারব।’ মিরাজ ১০ ওভারে ২৮ রান দিয়ে উইকেট পাননি। ৮১ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন ১২০ বলে ৯ চারে। আফিফ ৯৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ১১৫ বলে ১১ চার ও এক ছক্কায়। দুই তরুণের প্রশংসায় মেতেছেন টাইগার অধিনায়ক তামিম, ‘সত্যি বলতে আমি খুবই খুশি। শুধু দল জিতেছে বলে নয়, খুশি দুই তরুণ যেভাবে খেলেছে। অবিশ্বাস্য। আমার কোনো শব্দ নেই ইনিংস দুটি বর্ণনা করার। খুবই খুশি এবং গর্ব করছি।’

প্রথম ওয়ানডে জেতা ক্রিকেটারদের বিশ্রাম ছিল গতকাল। তবে ঐচ্ছিক ছুটি ছিল। অনুশীলন করেছেন একাদশের বাইরের চার ক্রিকেটার ও মুশফিক, ইয়াসিররা।

সর্বশেষ খবর