বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

৫০০০ মাইলফলকে মুশফিক

সেঞ্চুরির খ্যাপাটে উদযাপন মুশফিকুর রহিমের। কিন্তু উদযাপনে যতটা আগ্রাসী, সেঞ্চুরিটা যেন ঠিক উল্টো। ১০৫ রানের ইনিংসে তিনি ২৮২ বল মোকাবিলা করেছেন। টেস্ট ক্যারিয়ারে সবচেয়ে ধীরগতির শতক। তবে দীর্ঘ ২৭ মাস অপেক্ষার পর টেস্টে সেঞ্চুরি করলেন মি. ডিপেন্ডেবল। তাই যেন বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। গতকাল বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে ৫ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন।

ক্রীড়া প্রতিবেদক

৫০০০ মাইলফলকে মুশফিক

টেস্ট শুরুর আগে মুশফিকুর রহিমের রিভার্স সুইপ ও সুইপ নিয়ে কথা বলেছিলেন টাইগার কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। গতকাল ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি তুলে যে বলে আউট হয়েছেন মুশফিক, সেটা ছিল লেগ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরের একটি বল। ল্যাসিথ এম্বুলদুনিয়ার বলটিকে তিনি রক্ষণাত্মক ভঙ্গীতে খেলতে পারতেন। কিন্তু সুইপ খেলে বলের লাইন মিস করেন। তিন অংকের জাদুকরি ইনিংসটি যদি না খেলতেন, তাহলে হয়তো সমালোচনায় বিদ্ধ হতেন টাইগারদের হয়ে গত ১৭ বছর টেস্ট খেলা মুশফিক। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ১০৫ রানের ইনিংসটি খেলার পথে বেশ কয়েকটি মাইলফলক গড়েছেন টাইগারদের সাবেক অধিনায়ক। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ৫ হাজার রানের মাইলফলক গড়েছেন মুশফিক। শুধু তাই নয়, ৮১ টেস্ট ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরির ইনিংসটি তার সবচেয়ে ধীরলয়ের ইনিংস। তিন অংকের জাদুকরি ইনিংস খেলেছেন মুশফিক ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির পর। সেবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে অপরাজিত ছিলেন ২০৩ রানে।  অবশ্য, বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে ধীরলয়ের সেঞ্চুরির রেকর্ড তামিম ইকবালের। মুশফিকের পর দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে পাঁচ হাজারি ক্লাবের সদস্যের হাতছানি রয়েছে টাইগার ওয়ানডে অধিনায়কের। গতকাল চতুর্থ দিন শেষে মুশফিকের রান ৮১ টেস্টের ১৪৯ ইনিংসে ৫০৩৭। ১৩৩ রানের ইনিংস খেলা তামিমের রান এখন ৬৬ টেস্টের ১২৬ ইনিংসে ৪৯৮১। অবশ্য সাকিব আল হাসানও ৪ হাজারি ক্লাবের সদস্য। ৬০ টেস্টের ১১০ ইনিংসে সাকিবের রান ৪০৫৫।  

দক্ষিণ আফ্রিকার জিকাবারহাতে আগের টেস্টে ৫১ রানের ইনিংস খেলেন মুশফিক। সর্বশেষ সেঞ্চুরি ছিল ১১ টেস্ট আগে। সময়ের ব্যবধানে যা ২৭ মাস।  গত ৯ ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি ছিল একটি। তাই একটু চাপে ছিলেন মুশফিক। টেস্টের তৃতীয় দিন যখন ব্যাটিংয়ে নামেন মুশফিক, তখন মাইলফলক গড়তে তার দরকার ছিল ৬৮ রান। 

৫৩ রান করে দিন পার করে অপেক্ষায় থাকেন। গতকাল বাকি ১৫ রান করেন ধীরলয়ে ৪৮ বল খেলে। শুধু এই রান টুকু করতেই নয়, অষ্টম সেঞ্চুরির ইনিংস ছিল ২৭০ বলে। যা তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ধীরলয়ের সেঞ্চুরি। আগের ধীরলয়ের সেঞ্চুরিটি ভারতের বিপক্ষে ২০১৭ সালে হায়দরাবাদে, ২৩৫ বলে। অবশ্য দেশের সবচেয়ে ধীরলয়ের সেঞ্চুরির মালিক তামিম। ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তামিম সেঞ্চুরি করেছিলেন ৩১২ বলে। তার অগ্রজ নাফিস ইকবালও সেঞ্চুরি করেছিলেন ৩০৯ বলে।

২০০৫ সালে লর্ডসে ১৮ বছর ১৭ দিন বয়সে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক মুশফিকের। এরপর হাজার রানের ঘরে নাম লেখাতে মুশফিক খেলেন ৩৯ ইনিংস। ১ হাজার থেকে ২ হাজার, ২ হাজার থেকে ৩ হাজার এবং ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার রান করতে প্রতিবারই ২৮ ইনিংস ব্যয় করেন। ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার রানের মাইলফলক গড়েন ২৬ ইনিংস খেলেন। তামিম হয়তো দ্বিতীয় টাইগার ক্রিকেটার ৫ হাজারি ক্লাবে নাম লেখাবে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৯ রান করলেই।

সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী

ক্রিকেটার                     টেস্ট     ইনিংস  অপ.     রান      সর্বোচ্চ                           গড়                ১০০/৫০

মুশফিকুর রহিম                       ৮১*      ১৪৯     ১২        ৫০৩৭  ২১৯*                ৩৬.৭৬           ৮/২৫

তামিম ইকবাল             ৬৬*    ১২৬     ২          ৪৯২১   ২০৬                ৪০.১৬             ১০/৩১

সাকিব আল হাসান       ৬০*     ১১০      ৭          ৪০৫৫  ২১৭                 ৩৯.৩৬                        ৫/২৬

মুমিনুল হক                  ৫২*     ৯৬       ৬         ৩৫১৬  ১৮১                 ৩০.০৬             ১১/১৫

হাবিবুল বাশার              ৫০       ৯৯       ১          ৩০২৬ ১১৩                 ৩০.৮৭             ৩/৩৪  

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর