শুরুর ৪১ বলেই প্রথম সারির ৫ ব্যাটার ফিরে গেছেন সাজঘরে। এমন কঠিন পরিস্থিতি যখন মিরপুর টেস্টের, তখন হিমালয়সমান দৃঢ়তার পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশকে টেনে নিয়ে যান মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। জোড়া সেঞ্চুরি করেন দুজনে। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে রেকর্ড গড়েন। ২৭২ রানের জুটি, যা বাংলাদেশের ষষ্ঠ উইকেটে সর্বোচ্চ এবং যে কোনো উইকেটে তৃতীয় সেরা। এমন সব কীর্তি গড়ায় দুই ক্রিকেটারকে সন্মান জানিয়েছে আইসিসি। রেকর্ড গড়ায় আইসিসি নিজেদের অফিশিয়াল ফেসবুকের কাভার ফটো করেছে দুজনের ছবি দিয়ে।
মিরপুর টেস্টে বেশ কয়েকটি রেকর্ডের সঙ্গে জড়িয়ে মুশফিক। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রান, তৃতীয় সর্বোচ্চ বল খেলে জুটি গড়া এবং বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে পাঁচ হাজারি ক্লাবের সদস্য হয়েছেন মুশফিক। চরম বিপর্যয়ের মুখেও মুশফিক-লিটন জুটিতে প্রথম ইনিংসে ১১৬.২ ওভারে ৩৬৫ রান করেছে টাইগাররা। মুশফিক করেছেন অপরাজিত ১৭৫* ও লিটন ১৪১। দুজন ছাড়া তাইজুল ইসলাম একা দুই অংকের রান করেছেন। দুই ক্রিকেটারের জোড়া সেঞ্চুরির টেস্টে নতুন একটি রেকর্ড স্পর্শ করেছে টাইগাররা। ৬ ব্যাটার করেছেন শূন্য। এ নিয়ে দুবার বাংলাদেশের এক ইনিংসে ৬ ব্যাটার শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেছেন। এর আগে ৬ ব্যাটার শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন ২০০২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে (তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়াম)। সব মিলিয়ে টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে ৬ বার এক ইনিংসে ছয় ব্যাটার শূন্য রানে আউট হওয়ার রেকর্ড রয়েছে।
প্রথম সেসনে চরম বিপর্যয়ের পরও দিনটি নিজেদের করে নেন মুশফিক ও লিটন। চট্টগ্রাম টেস্টেও দুজনে ছিলেন ত্রাণকর্তা। দেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিক ১০৫ রান করলেও ৮৮ রানে আউট হয়েছিলেন লিটন। মিরপুরে দুজনের কেউই ভুল করেননি। মুশফিক ৮২ টেস্ট ক্যারিয়ারে নবম সেঞ্চুরি তুলে অপরাজিত থাকেন ১৭৫* রানে। যা ক্যারিয়ারের চতুর্থ সর্বোচ্চ স্কোর। ৫২৭ মিনিট স্থায়ী ইনিংসটিতে বল খেলেছেন ৩৫৫, বাউন্ডারি মেরেছেন ২১টি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অবশ্য তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২০০।
রিভিউ না নেওয়া!
দ্বিতীয় দিন শেষে ২ উইকেটে ১৪৩ রান করেছে শ্রীলঙ্কা। ৭০ রানের অপরাজিত লঙ্কান অধিনায়ক করুনারতেœ টাইগার বোলারদের অস্বস্তিতে রেখেছেন। অথচ রিভিউ নিতে পারলে ৩৬ রানেই সাজঘরে ফিরতেন লঙ্কান অধিনায়ক। পেসার ইবাদত হোসেনের বল লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করেছে বলে কিপার লিটন দাস ইশারা করায় রিভিউ নেননি মুমিনুল হক।
ক্যাচ মিস করেন জয়!
ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন করুনারতে। তাইজুল ইসলামের বলে ফ্লিক করে শর্ট লেগে সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন। কিন্তু ক্যাচটি লুফে নিতে পারেননি মাহমুদুল হাসান জয়। যদিও ক্যাচটি অনেক কঠিন ছিল, তবে অসম্ভব ছিল না।
একটি লজ্জার রেকর্ড!
আগের দিনই বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে মুশফিুর রহিম ও লিটন দাসের ষষ্ঠ উইকেট জুটি। গতকাল তাদের জুটি থেমে যায় ২৭২ রানে। ৫০ রানের নিচে ৫ উইকেট পতনের পর ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে সবচেয়ে বেশি রান করার নতুন রেকর্ড। তবে এই ম্যাচে একটি লজ্জার রেকর্ডও হয়েছে। এক ম্যাচে ছয় ব্যাটসম্যান রানের খাতাই খুলতে পারেননি। টেস্ট ক্রিকেটে এর আগে এমন ঘটনা মাত্র ৫ বার ঘটেছিল। তার মধ্যেও একবার বাংলাদেশও ছিল। এবার দ্বিতীয়বারের মতো লজ্জার রেকর্ডটি হয়ে গেল।