এশিয়া কাপের প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছেন সাকিব, মুশফিক, মুস্তাফিজরা। তিন দিনের অনুশীলন শেষে টি-২০ এশিয়া কাপে ২৩ আগস্ট ঢাকা ছাড়বে টাইগাররা। আজ ও আগামীকাল ক্রিকেটাররা দুটি অনুশীলন ম্যাচ খেলবে। ভাদ্রের প্রচন্ড গরমে নিজেদের প্রস্তুত করে নিচ্ছেন সাকিবরা। ক্রিকেটপ্রেমীদের পুরোপুরি ফোকাস এখন টাইগারদের উপর থাকা উচিত। তারপরও টি-২০ ক্রিকেটে ‘টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট’ হিসেবে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার শ্রীধরন শ্রীরামকে নিয়োগ দেওয়ায় পুরো ফোকাস এখন হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর উপর। শ্রীরামের নিয়োগের পর ডমিঙ্গোর কোচের পদ নড়ে গেছে! আগামীকাল নিশ্চিত হবে, দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ টাইগারদের দায়িত্বে থাকবেন কি না? গতকাল একটি অনুষ্ঠানে ডমিঙ্গোকে নিয়ে কিছু বলেননি টাইগার অধিনায়ক সাকিব। শুধু জানিয়েছেন ‘টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট’ শ্রীরামের অভিজ্ঞতা টি-২০ বিশ্বকাপে দলকে সহায়তা করবে, ‘যেহেতু শ্রীরাম অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের সঙ্গে ৫ বছর ছিলেন, আর বিশ্বকাপও অস্ট্রেলিয়াতে, আমি মনে করি তার অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে আসবে। এশিয়া কাপে কতটুকু আসবে বলাটা মুশকিল। কেননা সময় খুবই কম। আমাদের সবারই দায়িত্ববোধ আছে। যার যার অবস্থান আমরা যদি এক সঙ্গে কাজ করি, তাহলে আমার কাছে মনে হয় যে, একটা পথযাত্রা শুরু হবে।’
দলের অনুশীলন শুরু হয়েছে গতকাল। সাকিব ব্যক্তিগতভাবে অনুশীলন করছেন কয়েকদিন আগে। ফিটনেস ঠিক রাখতেই তিনি অনুশীলন জিম, রানিং করেছেন। এশিয়া কাপ ও টি-২০ বিশ্বকাপে টাইগারদের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে সাকিবের হাতে। ক্রিকেটপ্রেমী থেকে শুরু করে বোর্ডও ভাবছে নতুনত্বে আমূল পাল্টে যাবে টি-২০ ক্রিকেট। কিন্তু টাইগার অধিনায়ক এমনটি ভাবছেন না। সাকিব জানান উন্নতির জন্য সময় দিতে হবে, ‘আমার লক্ষ্য টি-২০ বিশ্বকাপে আমরা যেন ভালো করতে পারি। তার প্রস্তুতি হিসেবে এগুলো। আমি যদি মনে করি, এক-দুদিনে কিছু বদলে দিতে পারব, কিংবা অন্য কেউ এসে বদলে দিবে, তাহলে আমরা আসলে বোকার রাজ্যে বাস করছি। আপনি যদি বাস্তবিক চিন্তা করেন, আশা করি তিন মাস পর যখন আমরা বিশ্বকাপ খেলব। তখন যদি একটা উন্নতি দেখতে পারেন, ওটাই হবে আমাদের আসল উন্নতি।’
কোচিং স্টাফরা সবাই এখন ঢাকায়। গতকাল পুরোদমে শুরু হয়েছে অনুশীলন। দল নিয়ে ভালো কিছু করতে চান এশিয়া কাপে, ‘আমাদের আজকে (গতকাল) অনুশীলন শুরু হয়েছে, দুটো অনুশীলন ম্যাচ আছে। অনুশীলন ম্যাচ বলতে গেম সিনারিও। তারপর আমরা এশিয়া কাপের জন্য ২৩ তারিখে যাচ্ছি। ওখানে আমরা ৬-৭ দিনের অনুশীলন করব। আশা করি আমাদের যে দলটা আছে, আমরা প্রস্তুতি নিয়ে দলগতভাবে ভালো কিছু করার চেষ্টা করব।’টেস্ট ক্রিকেটে ধারাবাহিক নয়। ওয়ানডেতে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। কিন্তু টি-২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বরাবরই তলানির দিকে। গত ১৬ বছরে ১৩১ টি-২০ ম্যাচ খেলে টাইগারদের জয় ৪৫। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে শতাংশের হিসেবে জিম্বাবুয়ের উপরে। জিম্বাবুয়ে ১১২ ম্যাচ খেলে জিতেছে ৩৩টি। শতাংশের হার ৩০.৩৫ এবং বাংলাদেশের ৩৫.১৫। ক্রিকেট বোর্ড চাইছে টি-২০ ক্রিকেটে টাইগারদের উন্নতি। তাই অধিনায়ক পরিবর্তন করেছে। নতুন টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট নিয়োগ দিয়েছে। নতুন করে দায়িত্ব পাওয়া সাকিবও চাইছেন উন্নতি, ‘টি-২০ খেলছি ২০০৬ সাল থেকে। এই সংস্করণে খুব একটা ভালো ফল নেই। একবার শুধু এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছি। তাই আমাদের নতুন করে শুরু করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। একটা বাচ্চা যখন চলা শুরু করে তার স্টেপগুলো খুব কঠিন হয়। আস্তে আস্তে সহজ হয় তার চলা। আশা করি ছোট একটা বাচ্চার মতো আমরাও স্টেপ বাই স্টেপ চলা শুরু করতে পারব। আস্তে আস্তে দৌড়ানোর জায়গাতে পৌঁছাতে পারব।’
দেশের পক্ষে খেলার মতোই নেতৃত্ব দেওয়া গর্বের বলেন সাকিব, ‘দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারা সব সময়ই গর্বের বিষয়। তাই আমি খুবই আনন্দিত, এক্সাইটেড এবং নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য নিজেকে প্রস্তুত মনে করি।’