বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

কঠোর পরিশ্রমেই এলো সাফল্য

ছাদখোলা বাসে সাবিনাদের সংবর্ধনা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

কঠোর পরিশ্রমেই এলো সাফল্য

হিমালয়কন্যা নেপালের বুকে জয় পতাকা উড়িয়ে প্রশংসায় ভাসছেন সাবিনা খাতুনরা। প্রশংসায় ভাসছেন তাদের দীক্ষা গুরু গোলাম রব্বানী ছোটনও। তবে দীর্ঘ সাফল্যের পথে ছুটে চলার এটা কেবল সূচনা। সামনে আরও দীর্ঘ পথ ছুটতে চান ছোটন। দলকে প্রস্তুত করতে চান আরও বড় বড় লক্ষ্য পূরণের উপযোগী করে। দক্ষিণ এশিয়ার সেরার মুকুট জেতার পর ছোটনের দৃষ্টি এবার এশিয়ান কাপে। সোমবার নেপালকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের মেয়েরা কখনো এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলেনি। তবে বেশ কয়েকবারই বাছাইপর্ব খেলেছে। সামনে বাছাইপর্বের বাধা পাড়ি দিয়ে এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলাই লক্ষ্য মেয়েদের।

গোলাম রব্বানী ছোটন গতকাল নেপাল থেকে মুঠোফোনে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে সাফে শিরোপা জয় নিয়ে বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরেই মেয়েদের ফুটবলে দায়িত্ব পালন করছি। সেই ২০১০ সাল থেকে। তবে আমার একার কোনো সাফল্য নেই। আমরা সবাই মিলেই কাজ করেছি। মেয়েরা কঠোর পরিশ্রম করেছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন আমাদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করেছেন। সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান করেছেন নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ। মিডিয়াও সব সময় আমাদের পাশে ছিল। এ সফলতা আমাদের সবার।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল ২৩ থেকে ২৫ সালের মধ্যে সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়া। সেই লক্ষ্যে আমরা ২০২২ সালেই পূরণ করেছি। সবাই বলতো, মেয়েরা কেবল বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতায় সফল হয়। সিনিয়র লেভেলে কিছু পারে না। কিন্তু আমরা  সাফে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেখিয়ে দিলাম।’

দক্ষিণ এশিয়ায় সেরার মুকুট জয়ের পর ছোটনের চোখ এবার এশিয়ান কাপের দিকে। তিনি বলেন, ‘বর্তমান দলটা যেভাবে খেলছে তার ধারাবাহিকতা থাকলে আমরা এশিয়ান কাপেও খেলতে পারি। সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আমাদের এক নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে। এর আগে আমরা বড় দলগুলোর সঙ্গে খেলতে গিয়ে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। সেসব সমস্যা নিয়ে কাজও করছি। দলের পারফরম্যান্সে এর প্রভাব পড়ছে। এখন দলটার মধ্যে দারুণ একটা মনোভাব গড়ে উঠেছে। এই মনোভাব নিয়ে ফুটবল খেলতে পারলে ভবিষ্যতে আরও ভালো ফল বয়ে আনবে মেয়েরা।’

গোলাম রব্বানী ছোটনের অধীনেই বাংলাদেশের মেয়েদের অনেক সফলতা এসেছে। ২০১৫ সালে নেপালে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ গার্লস রিজিওনাল চ্যাম্পিয়নশিপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। পরের বছর এই টুর্নামেন্টটাই তাজিকিস্তানে খেলে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে ছোটনের দল। ২০১৭ সালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে হংকংয়ে একটি টুর্নামেন্টেও অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় মেয়েরা (অনূর্ধ্ব-১৫)। ২০১৮ সালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করে বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশের মেয়েরা। ২০২১ সালে জয় করে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ। এবার সাফের সিনিয়র টুর্নামেন্টটাও জয় করল বাংলাদেশের মেয়েরা। আঞ্চলিক পর্যায়ে বেশ কিছু ট্রফি জয় করলেন সাবিনা খাতুনরা। এবার এশিয়ান লেভেলেও সফলতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন তারা।

সর্বশেষ খবর