ফেক ফিল্ডিং নিয়ে হইচই-শেষ ম্যাচে আসলে কি হয়েছিল? সেই ম্যাচে আপনারা কি অভিযোগ করেছিলেন, আপনি কি মনে করেন হারের পেছনে একটি অন্যতম একটি কারণ?
শ্রীরাম : না, আমরা এখানে কোনো অজুহাত দেখাতে আসিনি। ঘটনার সময় আমরা চতুর্থ আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলেছি, এটি ছিল মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত। আমরা তখন বিষয়টি জানিয়েছি, কিন্তু আমরা এখানে অভিযোগ দাঁড় করাতে আসিনি।
এই টুনার্মেন্টে বাংলাদেশের লক্ষ্য কি বড় দলের বিরুদ্ধে জয়?
শ্রীরাম : আমি আগেই পরিষ্কার করে সব কিছু বলে দিয়েছি। এখানে আমাদের আর মাত্র একটি ম্যাচ বাকি আছে। মাত্র একটি দলের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা করতে হবে। প্রত্যেক ম্যাচে আমাদের যে লক্ষ্য ছিল এ ম্যাচেও তাই -জিততে চাই। তবে এটাও জানি পাকিস্তান আমাদের কী চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। আমরা সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডে তাদের বিরুদ্ধে খেলেছি। তবে তাদের প্রতি আমাদের সম্মান আছে। জিততে হলে আমাদের সেরাটা দিতে হবে।
ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচের সময় দেখা গেছে আপনি খানিকটা সময় অন্যরকম ছিলেন। বেশ উদগ্রীব দেখা গেছে আপনাকে। তবে ওই দিন বৃষ্টির পর ব্যাটিং নিয়ে আপনি কি ভেবেছিলেন?
শ্রীরাম : হ্যাঁ, আমি ১০-১২ মিনিট ওরকম ছিলাম। ছেলেরা তখন ৯-এর উপরে ওভারপ্রতি রান করছিল। তখন ভারতের ওপর চাপ ছিল। এটা সত্যি ওই সময় আমি ১৫-২০ মিনিটের মতো উন্মত্ত ছিলাম।
টি-২০র মতো ফরম্যাটে ১০ উইকেট হাতে থাকার পরও জিততে পারেননি। মিডল অর্ডারে ধস নামে। ওই ম্যাচে হারার পর ক্রিকেটারদের সঙ্গে কী কথা বলেছেন?
শ্রীরাম : আমরা জয়ের খুবই কাছে গিয়েছিলাম। যদি খেলার শুরুর আগে আমরা বলতাম ভারতের বিরুদ্ধে ৫ রানে হারব যে কেউ তা মেনে নিত। কিন্তু আমরা এমন একটি সুযোগ পেয়েছিলাম যেখানে ভারতকে হারাতে পারতাম। আমরা কেবলমাত্র লাইনটা পার হতে পারিনি। তবে এমন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ছেলেদের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গেছে। মাত্র ৫ রানে হেরে যাওয়ার পর সবাই হতাশ। আরেকটি সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট হয়ে গেল। আমরা একটুর জন্য জিততে পারলাম না।
তবে এখান থেকে আমরা দারুণ কিছু শিখলাম। দলে বিশ্বাস অনেক বেড়ে গেছে। যদি আমরা ভারতের মতো দলকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারি, তাহলে বলতে পারি আমরা আর (সাফল্য থেকে) দূরে নই।
আগামীকাল (আজ) বাংলাদেশের সঙ্গে আপনার শেষ ম্যাচ। বিসিবি সম্পর্কে কিছু বলতে চান?
শ্রীরাম : আবার, একটি ম্যাচ এখনো বাকি আছে। আমার লক্ষ্য কেবলমাত্র ওই ম্যাচটিকে ঘিরেই। দারুণ একটা স্মৃতি নিয়ে বিশ্বকাপ শেষ করতে চাই। তাই আমার ফোকাস এখন কেবলই ম্যাচের দিকে। এর সামনের বিষয় নিয়ে আমি ভাবছি না।
আপনি অনেক দিন অস্ট্রেলিয়া দলে কাজ করেছেন। আপনি কি মনে করেন না ভারত, বাংলাদেশ কিংবা পাকিস্তান যে স্টাইলে টি-২০ ক্রিকেট খেলে তাদের বাড়তি আগ্রাসন দেখাতে হয়?
শ্রীরাম : আমি মনে করি, অস্ট্রেলিয়া সে রকম অ্যাপ্রোচ দেখানোর কোনো প্রয়োজন নেই। পাওয়ার হিটিং দল হলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবারের বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে পারেনি। আমি মনে করি না, বিশ্বের অন্য দলের চেয়ে অ্যাপ্রোচ পিছিয়ে। আমরা কেবল এখানে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি, শিখেছি। আমি মনে করি না টি-২০ খেলার জন্য আলাদা কোনো মাপকাঠি আছে। উইকেট, কন্ডিশন এবং অন্যান্য বিষয়গুলো দেখে পরিকল্পনা করতে হবে।
আপনি এই টুর্নামেন্টে দলের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট?
শ্রীরাম : টি-২০ বিশ্বকাপে এটি বাংলাদেশের সেরা সেরা আসর। এর আগে কখনো সুপার টুয়েলভে দুটি ম্যাচ জেতেনি বাংলাদেশ। তাই আমি মনে করি এজন্য ক্রিকেটাররা গর্ববোধ করতে পারেন।
আপনি বলেছেন, ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচটিকে ‘মানসিক উদ্দীপনা’ বলেছেন। এমন ম্যাচ যখন বার বারই ভারতের বিরুদ্ধে হারছে বাংলাদেশ তখন কি এটা ‘মানসিক বিপর্যয়’ নয়!
শ্রীরাম : আমি মনে করি এটি নতুন শুরু। আমি জানি না, অতীতে কি হয়েছে! আমরা দুটি ক্লোজ ম্যাচ জিতেছি নেদারল্যান্ডস এবং জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে এবং একইভাবে ভারতের বিরুদ্ধে ক্লোজ ম্যাচ হেরেছি।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি ম্যাচ খেলেছেন। কি করলে পাকিস্তানকে আটকাতে পারবেন?
শ্রীরাম : পাকিস্তান খুবই ভালো দল। নিউজিল্যান্ডে আমরা যে দুটি ম্যাচ খেলেছি দুটিতেই সম্ভাবনা ছিল। আমরা তাদের শক্তিমত্ত্বা সম্পর্কে জানি, তারা আমাদের শক্তিমত্ত্বা সম্পর্কে জানে। তাই আমি মনে করি দারুণ একটি লড়াই হতে যাচ্ছে।
আপনি মনে করেন পাকিস্তানকে হারানো সম্ভব?
শ্রীরাম : আমি বিশ্বাস করি, পাকিস্তানকে হারানো সম্ভব। কিন্তু সেমিফাইনালে যাওয়ার বিষয়টি অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের হাতে নেই।