শনিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সিলেটে উড়ছে রাইডার্স

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সিলেটে উড়ছে রাইডার্স

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে গ্যালারি কানায় কানায় পূর্ণ দেখা যায়নি। বন্দরনগরী চট্টগ্রামেও এবারের বিপিএল সেভাবে সাড়া জাগাতে পারেনি। তবে সিলেটে দেখা গেল সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। গ্যালারিতে যেন তিল ধারণের জায়গা নেই। শুধু তাই নয়, স্টেডিয়ামের বাইরেও ছিল টিকিটের জন্য হাহাকার। ছবি : রোহেত রাজীব, সিলেট থেকে

সিলেট স্ট্রাইকার্সের উৎসবে পানি ঢেলে দিয়েছে রংপুর রাইডার্স। মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে সিলেট দারুণ ছন্দোময় ক্রিকেট খেলেছে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ঢাকা পর্বে। প্রিয় দল ও প্রিয় ক্রিকেটারদের এমন পারফরম্যান্সে বিপিএলের জোয়ার বইছে সিলেটে। নুরুল হাসান সোহানের রংপুর ও মাশরাফির সিলেটের গতকালের খেলা দেখতে গতকাল স্টেডিয়ামে দর্শকের উপস্থিতি ছিল স্মরণকালের সেরা। ২০ ওভারের টুর্নামেন্টের চলতি আসরে এই প্রথম খেলা হচ্ছে সিলেটে। এখানেই হয়তো চূড়ান্ত হবে শীর্ষ চার দল। হার্ড ও বাউন্সি উইকেটে ম্যাচে পুরোপুরি সুবিধা আদায় করে নেন পেসাররা। ঘাসের উইকেটে রংপুরের পেসারদের আগ্রাসী বোলিংয়ে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে মাত্র ৯২ রান করে সিলেট। রনি তালুকদারের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে রংপুর সেটা টপকে যায় ২৬ বল হাতে রেখে। ৬ উইকেটে জয় রংপুরের ৭ ম্যাচে চার নম্বর। সিলেটের ৮ ম্যাচে দ্বিতীয় হার।

মিরপুরে সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে ২ রানের শ্বাসরুদ্ধকর জয় পায় সিলেট। টান টান উত্তেজনার ম্যাচ জেতার আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে নামেন মাশরাফিরা। রংপুরও খেলতে নামে চট্টগ্রামকে হারানোর উচ্ছ্বাস নিয়ে। আত্মবিশ্বাসী মাশরাফি টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে হাজারো সমর্থকের সমর্থন নিয়ে। কিন্তু রংপুরের তিন পেসার হাসান মাহমুদ, আজমতউল্লাহ কামারজাই ও হারিস রউফ এবং অফ স্পিনার মেহেদী হাসানের সাঁড়াশি আক্রমণে একপর্যায়ে ১৮ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে লজ্জায় পরে যায় স্বাগতিক দল। মনে হচ্ছিল বিপিএলের সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডটি গড়বে সিলেট। বিপিএলে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড খুলনা টাইটান্সের, ৪৪ রান। ২০১৬ সালে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে করেছিল মিরপুরে। সিলেটের সর্বনিম্ন স্কোর ৫৯, ২০১৫ সালে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে। গতকাল সিলেটের প্রথম সাত ব্যাটারের কেউই দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। দলের সফল ব্যাটার তওহিদ হৃদয়, জাকির হাসান ও মুশফিকুর রহিম সাজঘরে ফেরেন শূণ্য রানে। ৮.৪ ওভারে ১৮ রানের ৭ উইকেট হারানোর পর অধিনায়ক মাশরাফি ও তরুণ অলরাউন্ডার তানজিম হাসান সাকিব হাল ধরেন। অষ্টম উইকেট জুটিতে দুজনে ৭ ওভারে ৪৮ রান যোগ করে লজ্জা এড়ান। মাশরাফি ২১ রান করেন ২১ বলে ২ ছক্কায়। তানজিম দলীয় সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন ৩৬ বলে ৫ চার ২ ছক্কায়। এই জুটিতেই ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ৯২ রান করে সিলেট। যা চলতি আসরে তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। সর্বনিম্ন স্কোর চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের, ৮৪। রংপুরের পক্ষে তিনটি করে উইকেট নেন হাসান ও কামারজাই। হাসানের বোলিং স্পেল ৪-০-১২-৩। টাইগার পেসার ২৪ বলের ১৭টিই ডট। ম্যাচসেরা কামারজাইয়ের স্পেল ৪-০-১৭-৩। ২৪ বলের ডট ১৬টি। স্পিনার মেহেদীর স্পেল ৪-০-১২-২। ডট ১৮টি। সিলেটের ইনিংসের ১২০ বলের ৭৯টি ছিল ডট। বাকি ৪১টি ছিল স্কোরিং শট। যাতে ছিল ৫টি করে ছক্কা ও চার।

টার্গেট মাত্র ৯৩ রান। ওভার প্রতি স্ট্রাইক রেট ৪.৫৬। টি-২০ ক্রিকেটে আহামরি কিছু নয়। রংপুরের দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাইম ও রনি ২৭ রানের ভিত দেন ৫.৩ ওভারে। সেই ভিতকে কাজে লাগিয়ে রনি দলকে চতুর্থ জয় উপহার দেন ৩৮ বলে ৪১ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে। মাঝে অবশ্য সিলেট অধিনায়ক মাশরাফি টানা দুই বলে মেহেদী ও শোয়েব মালিককে আউট করে উত্তেজনার সৃষ্টি করেন। কিন্তু পাকিস্তানি নাওয়াজ ১৩ বলে ২ ছক্কায় ১৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে রংপুরকে জয়োৎসবে ভাসান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর