রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

অস্কারেই যত পুরস্কার কিংসের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

অস্কারেই যত পুরস্কার কিংসের

পেশাদার লিগে আবির্ভাবের পর থেকে ঘরোয়া ফুটবলে বসুন্ধরা কিংস একের পর এক রেকর্ড গড়েই চলেছে। বাংলাদেশ নয় ৭৫ বছরের ইতিহাসে অন্যরা যা পারেনি তা করে দেখাচ্ছে কিংস। মাত্র পাঁচ বছরে বসুন্ধরা ফুটবলে দেশের সেরা দলে পরিণত হয়েছে। রেকর্ড গড়ে ভাঙার জন্যই। কিন্তু কিংস যেভাবে এগিয়ে চলেছে তা অন্যদের পক্ষে ধরা মুশকিলই বলা যায়। ফুটবলে সত্যিই কিং বসুন্ধরা কিংসই। ২০১৮ সালে যখন দলটির অভিষেক হয় সে মৌসুমেই পেশাদার লিগে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নের সুযোগ ছিল ঢাকা আবাহনীর। তা আর হতে পারেনি কিংসের দুর্দান্ত দাপটে। ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান তাদের চেনা পথ হারিয়ে ফেলায় ঘরোয়া ফুটবলে আবাহনীর একক রাজত্ব চলছিল। অবশ্য শেখ জামাল ও শেখ রাসেল সাফল্য পেলেও তার কোনো ধারাবাহিকতা ছিল না।

বসুন্ধরা কিংস পেশাদার লিগে আবির্ভাবের পরই ঢাকা আবাহনীর ছন্দপতন ঘটে। ফেডারেশন কাপ বা স্বাধীনতা কাপে চ্যাম্পিয়ন হলেও লিগে এলোমেলো হয়ে যায়। এখন লিগ মানেই যেন বসুন্ধরার বিজয়ের পতাকা উড়া। হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয়েই ইতিহাস আগেই লিখে ফেলেছে কিংস। বড় কোনো অঘটন না ঘটলে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে টানা চার বার লিগ জিতবে কিংস। ১৮ থেকে ২৩ মাত্র পাঁচ বছরে বসুন্ধরা জিতে নিয়েছে সাত ট্রফি। যা অন্য দলের কাছে স্বপ্নই বলা যায়। লিগ ৩, ফেডারেশন কাপ ২ ও স্বাধীনতা কাপ ২ বার। বসুন্ধরা কিংসের এমন সাফল্যের রহস্যটা কি? অনেকে বলেন, যে বিশাল অর্থ খরচ করে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে শক্তিশালী দল গড়ে তাতে তো সাফল্য আসাটা স্বাভাবিক।

বসুন্ধরা অবশ্যই বিশাল বাজেটে দল গড়ে। কিন্তু ঢাকা আবাহনী বা অন্য কিছু ক্লাবও এমন পথ বেছে নেয়। অতীতে ঢাকা মোহামেডান, ব্রাদার্স ইউনিয়ন বা বিজেএমসিও তো অঢেল অর্থ খরচ করে দল গড়ত। কই কেউ কি স্বল্প সময়ে এত সাফল্য পেয়েছিল। বসুন্ধরার বড় গুণ হচ্ছে পেশাদারিত্ব মানা, কমিটমেন্ট রক্ষা, দক্ষ ম্যানেজমেন্ট ও খেলোয়াড়দের সমন্বয়। এসব তো আছেই, তবে একজনের গুণের কথা না বললেই নয়- তিনি হচ্ছেন কোচ অস্কার ব্রুজোন। পেশাদার লিগের শুরু থেকেই কিংস সভাপতি ইমরুল হাসান স্প্যানিশ এ কোচকে নিয়োগ দেন। তিনি যে রত্ন চিনতে ভুল করেননি এ নিয়ে কি সংশয় রয়েছে?

কিংসের যত শিরোপা সব অস্কারের মাধ্যমে। এ এক নতুন ইতিহাস। ঘরোয়া ফুটবলে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে অনেক কোচই বিভিন্ন দলের দায়িত্ব পালন করেছেন। কেউ কি এত ট্রফি দলকে উপহার দিতে পেরেছেন? আসলে পারবেনই বা কিভাবে? কেউ তো টানা এত দিন দায়িত্বই পালন করেননি। ওয়ান্ডারার্স, আবাহনী ও মোহামেডানেরই হ্যাটট্রিক লিগ চ্যাম্পিয়নের কৃতিত্ব রয়েছে। তা তো আর এক কোচের মাধ্যমে হয়নি। অস্কারই ব্যতিক্রম। এমন সাফল্যে তিনি যে ঘরোয়া ফুটবল ইতিহাসে সেরা কোচ এ নিয়ে কারোর দ্বিমত থাকার কথা না। অস্কার অবশ্য বলেন, ‘এমন বিরল সাফল্য শুধু কোচের মাধ্যমে সম্ভব নয়, খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স তো আছেই সঙ্গে ক্লাবের পরিবেশ ও ম্যানেজমেন্টও বড় ভূমিকা রাখে।’

বসুন্ধরার কথা বলতে গিয়ে অস্কার কিছুটা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। বললেন, ‘কিংস পরিবারের সঙ্গে আমি এমনভাবে মিশে গেছি, কখনো মনে হয় না আমি  দেশের বাইরে আছি। পেশাদারিত্ব ফুটবলের জন্য যা যা দরকার কিংস পুরোটাই করছে। এক্ষেত্রে সভাপতি ইমরুল হাসানের কথা না বললেই নয়। তিনি সার্বক্ষণিক আমাদের খোঁজখবর রাখেন। কোনো কিছুতেই তার না নেই। সুতরাং দলের যত সাফল্য কিংস পরিবারের একতার কারণেই।’

 

সর্বশেষ খবর