রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

চেনা আবাহনীর অচেনা রূপ!

ক্রীড়া প্রতিবেদক

চেনা আবাহনীর অচেনা রূপ!

ঢাকা মোহামেডান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৩৬ সালে। ঢাকা আবাহনী ১৯৭২ সালে। দুই দলের বয়সের পার্থক্য ৩৬। অন্যদিকে ১৯৫৩ সালে প্রথম বিভাগ ফুটবলে মোহামেডানের অভিষেক। আবাহনীর আবির্ভাব ১৯৭২-এ। ১৯ বছরের পার্থক্য। অথচ স্বাধীনতার পর ফুটবলে শিরোপা জেতার দিক দিয়ে মোহামেডানের চেয়ে এগিয়ে গেছে তারা। পাকিস্তান আমল মিলিয়ে মোহামেডান লিগ জিতেছে ১৯ বার। অন্যদিকে স্বাধীনতার পর আবাহনী লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ১৭ বার। পেশাদার লিগে হ্যাটট্রিকসহ ছয়বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আবাহনীর সমর্থকদের আশা ছিল মোহামেডানকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাবে তাদের প্রিয় দল। কিন্তু এখন পর্যন্ত মোহামেডানের রেকর্ড স্পর্শই করা যায়নি। আদৌ সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে চিন্তিত তারা। কেননা আবাহনী এখন সাফল্যের বদলে ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দি। চেনা আবাহনী অচেনা রূপ ধারণ করেছে। মোহামেডান শক্তিশালী দল না গড়ায় আবাহনীর শিরোপা তালিকা লম্বা করতে কোনো সমস্যায় হচ্ছিল না। তারা ভেবেছিল কে আর তাদের থামাবে! কিন্তু সব আশা চুরমার হয়ে গেছে। কবে লিগে বিজয়ের হাসি হাসবে তার কোনো ঠিক নেই। পেশাদার লিগে বসুন্ধরা কিংস আসার পর আবাহনী এলোমেলো হয়ে গেছে।

আবাহনীও চারে চার। কিন্তু তা হলো টানা চারবার শিরোপা থেকে বঞ্চিত হওয়া। এ ব্যর্থতার রেকর্ড অবশ্য নতুন নয়, এর আগেও ১৯৯৬, ১৯৯৭, ১৯৯৯ ও ২০০০ সালে টানা চারবার লিগ শিরোপা থেকে বঞ্চিত ছিল। পেশাদারির যুগে আবাহনী তো বিজয়ে নিশানা উড়িয়ে চলেছিল। হঠাৎ থমকে যাওয়ার রহস্যটা কী? মোহামেডান দুর্বল দল গড়ায় লিগে বেহাল দশা। আবাহনীর তো সে অবস্থা নয়। বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শক্তিশালী দল গড়ছে। কিংসের যখন আবির্ভাব সেই মৌসুমে তো পেশাদার লিগে আবাহনীর দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা ছিল। সেখানে কি না কোটি কোটি টাকা খরচ করেও এ বেহাল দশা!

দলের সাবেক তারকা ফুটবলার আবাহনীর পরিচালক আশরাফ উদ্দিন চুন্নু বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল ভাইয়ের হাত ধরে আবাহনী ক্লাবে আসার পর লোভনীয় অফার থাকা সত্ত্বেও অন্য ক্লাবে যাইনি। আবাহনীতেই ক্যারিয়ার শেষ করেছি। ফুটবলার হিসেবে দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছি এ দলে খেলেই। তাই সারা জীবন আবাহনীর প্রতি ভালোবাসা থাকবে। টানা চারবার লিগ চ্যাম্পিয়ন না হওয়ায় আমি যে কষ্ট পেয়েছি তা বুঝিয়ে বলতে পারব না।’

চুন্নু আক্ষেপ করে বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা খরচ করলেই সাফল্য আসে না। এজন্য দরকার দক্ষতার সঙ্গে দল পরিচালনা। আমি বলব সে ক্ষেত্রে আবাহনী ব্যর্থ। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এমন একজনের ওপর ফুটবলের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন, যাকে নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। শুনেছি ফুটবল দলে কারও সন্তান বা আত্মীয়ের নাম রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। জানি না এ তথ্য কতটুকু সত্য। আর এ অভিযোগ বিতর্কিত লোকটিকে ঘিরে। আমি ক্লাবের পরিচালক ঠিকই। কিন্তু আমার বা কোনো সাবেকদের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন মনে করে না। এভাবে দল চললে সাফল্যে কি আসবে?’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর