সোমবার, ২৬ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

পিছিয়ে পড়েও আগ্রাসি জয়

বাংলাদেশ ৩ : ১ মালদ্বীপ

পিছিয়ে পড়েও আগ্রাসি জয়

তপুর মুখে শোনা গেল ‘ব্যাঘ্র গর্জন’। ম্যাচটা শেষ করে ৩-১ গোলের জয় নিয়ে সাইডলাইন পেরিয়ে কোচ হাভিয়ের কাবরেরার কাছে এসেই হুঙ্কার ছাড়লেন তিনি। মালদ্বীপ মিশন সফলভাবে শেষ করে অনেকটাই যে চাপমুক্ত হলো বাংলাদেশ, তারই প্রমাণ মিলল। কেবল তপুই নন, হুঙ্কার শোনা গেল অন্যদের কণ্ঠেও। তবে দলটা আত্মতুষ্টিতে ভুগছে না। কেবল পাহাড়সম চাপটা দূরে সরে গেল। দারুণ এক জয়ের পর বঙ্গবন্ধু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে স্বপ্ন জয়ের পথেই ছুটছে বাংলাদেশ। সংবাদ সম্মেলনে এসে এবার আর দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসেনি কোচ হাভিয়ের কাবরেরার কণ্ঠ চিরে। প্রথম ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে বারবারই দীর্ঘশ্বাস ফেলছিলেন তিনি। গতকাল বললেন, ‘আমরা জয় পেয়েছি। এটা সত্যিই দারুণ ব্যাপার। আমরা তিনটা পয়েন্ট চেয়েছিলাম, তা অর্জন করেছি। তবে গোলটা হজম করা ছিল কঠিন। এরপর আমার ছেলেরা অসাধারণ খেলেছে। তারা ম্যাচে ফিরেছে। এ জন্য তাদের আমি অভিনন্দন জানাই।’

বাংলাদেশের স্প্যানিশ কোচ জয়ের পরও আত্মতুষ্টিতে ভুগতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘আমাদের আরও একটি ফাইনাল অপেক্ষা করছে। ভুটান দারুণ খেলে। মালদ্বীপের বিপক্ষে তারাই ভালো খেলেছিল। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভুটান হেরেছে। আমাদের বেশ সতর্ক হয়েই খেলতে হবে।’ মালদ্বীপ ম্যাচ জয়ের পর পরই বাংলাদেশের মাথায় ঢুকে গেছে ভুটান ম্যাচ। তপু বর্মণ যেমনটা বললেন, ‘আমাদের লক্ষ্য অর্জন করতে হলে এখন ভুটানকে হারাতে হবে। তাদের বিপক্ষে ম্যাচটা সহজ হবে না।’

গোল হজম করে বাংলাদেশের জয়ের ইতিহাস কমই আছে। সাম্প্রতিক সময়ে নেই। ইতিহাস ঘাটলেও খুব বেশি পাওয়া কঠিন। কিন্তু গতকাল কী এমন হলো! পিছিয়ে পড়েও কীভাবে জয় করল বাংলাদেশ! ব্যাখ্যা করলেন তপু বর্মণ ও রাকিব হোসেন। তপু বললেন, ‘আমরা ম্যাচটা জিতব বলেই খেলতে নেমেছিলাম। দেশের মানুষের জন্য ম্যাচটা জিততে চেয়েছিলাম।’ দেশের মানুষকে ঈদের দারুণ এক উপহারই দিলেন তপুরা। রাকিব বললেন, ‘আমরা পিছিয়ে পড়েও উৎসাহ হারাইনি। তপু ভাই, জামাল ভাই আমাদের বলেছেন, আমরা পারব। দলের সবার মধ্যেই এ প্রেরণা বেশ কাজ দিয়েছে।’ ম্যাচজুড়ে দূরন্ত পারফর্ম করা বসুন্ধরা কিংসের ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ বললেন, ‘আমরা জয় করতে চেয়েছিলাম ম্যাচটা। জয় করেছি। এবার সামনের ম্যাচটাও জয় করতে চাই।’

বাংলাদেশের বর্তমান ফুটবল দলটা বেশ অনুপ্রাণিত। কোচ কাবরেরা ব্যাখ্যা করলেন এভাবে, ‘এটা একটা দারুণ দল। তারা পরস্পরের জন্য খেলে। নিজের সর্বোচ্চটা দিতে চেষ্টা করে। একে অপরকে সাধ্যের সবটুকু দিয়ে সহযোগিতা করে। নিজের কথা ভাবে না এরা। এ দলটা সত্যিই দারুণ কিছু করার মতো এক দল।’ কোচ ঠিকই বলেছেন। গত দুই দশকের বিরূপ ইতিহাস। আগের ম্যাচের পরাজয়। একের পর এক ছুটে আসা সমালোচনার তীর। এত কিছুর মোকাবিলা একসঙ্গে করা সত্যিই কঠিন। সে কঠিন কাজটাই করে দেখালেন জামাল ভূঁইয়ারা। মালদ্বীপকে হারালেন ৩-১ গোলে। অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে ভরপুর এক দল পেয়েছেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। এদিকে ভুটানকে ৪-১ গোলে হারিয়ে তৃতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনালে উঠেছে লেবানন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর