রবিবার, ২ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

ক্রিকেট ফুটবলের শহর বেঙ্গালুরু

ক্রীড়া প্রতিবেদক, বেঙ্গালুরু থেকে

ঘড়ির কাঁটায় চারটা বাজতেই ঘণ্টা পড়ল। পর পর দুবার। দলে দলে বাবা-মায়ের হাত ধরে বাচ্চারা আসতে শুরু করল। সবুজ টার্ফে প্রবেশ করেই কোচের নির্দেশে ওয়ার্ম-আপে নেমে পড়ল তারা। কিছুক্ষণের ওয়ার্ম-আপ। তারপরই শুরু হলো ব্যাট-বলের হাতে-কলমে শিক্ষা। ব্যাটিংটা কীভাবে চালাতে হবে। বলটা কীভাবে এবং কোথায় ফেলতে হবে, তারই প্রশিক্ষণ চলতে থাকল। কর্ণাটক ইনস্টিটিউট অব ক্রিকেট একাডেমিতে সারা দিনই চলে এমন প্রশিক্ষণ। পাঁচ বছর বয়সী থেকে এখানে আছে সিনিয়র লেভেলের ক্রিকেটাররাও। এমনইভাবে বাইচুঙ ভুটিয়া ফুটবল স্কুলেও চলে অনুশীলন। নানা বয়সী ফুটবলারদের গড়ে তোলার কার্যক্রম পরিচালনা করেন কোচেরা।

বেঙ্গালুরু। ‘সিলিকন ভ্যালি অব ইন্ডিয়া’ খ্যাত শহর দেখলে যে কেউই মুগ্ধ হয়ে যাবে। প্রকৃতি, পরিবেশ, আবহাওয়া সবদিক থেকেই অসাধারণ এক শহর। প্রযুক্তির এ যুগে বেঙ্গালুরু হয়ে উঠেছে ভারতের অন্যতম প্রধান শহর। প্রযুক্তিতে বেঙ্গালুরু এগিয়ে চলেছে তরতর করে। তবে এ শহরকে খেলার শহরও বলা যায়। ক্রিকেটের শহর কিংবা ফুটবলের শহরও বলা যায়। সবুজ-শ্যামল ছায়ার নিচে গড়ে ওঠা শহরটার আনাচে-কানাচে আছে অসংখ্য মাঠ। ফুটবল, ক্রিকেট ছাড়াও অন্যান্য খেলার সুযোগ-সুবিধাও অনেক। তবে ক্রিকেট আর ফুটবলেরই আধিপত্য এ শহরে। সবাই ক্রিকেটার হতে চায়। ফুটবলার হতে চায়।

শহরের বিখ্যাত ক্রিকেট একাডেমির নাম কর্ণাটক ইনস্টিটিউট অব ক্রিকেট। এখানেই গড়ে উঠেছেন রবিন উথাপ্পা ও মায়াঙ্ক আগারওয়ালদের মতো তারকা ক্রিকেটার। রজার বিনির ছেলে স্টুয়ার্ট বিনি আর মানিশ পান্ডেরাও এখানকারই ছাত্র। আইপিএলে খেলে তারকা বনে যাওয়া ক্রিকেটার কে গৌতমও এখানেই বেড়ে উঠেছেন। এ একাডেমিতে অন্তত দুই হাজার ক্রিকেটার আছেন নানা বয়সের। তারা সকাল-সন্ধ্যা অনুশীলন করেন ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপে। স্কুলের সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে তৈরি করা হয় অনুশীলনের সূচি। কর্ণাটক ইনস্টিটিউট অব ক্রিকেট একাডেমির প্রধান কোচ ইরফান সাইত। তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে পুরোপুরি পেশাদারিত্ব নিয়ে কাজ করছি। এখান থেকে অনেকেই জাতীয় দলে খেলেছেন। স্টেট লেভেলে আমাদের অবদান অনেক বেশি। তবে আমরা জাতীয় দলে খেলার মতো আরও ক্রিকেটার তৈরি করতে চাই।’

বেঙ্গালুরু শহরে ফুটবল একাডেমি আছে অনেক। তবে বাইচুঙ ভুটিয়া ফুটবল স্কুলের নামই সবার ওপরে। এই একাডেমির ১৮টি শাখা আছে ভারতের ১৮টি রাজ্যে। ভারতীয় জাতীয় দলের ফুটবলার রোহিত কুমার এ একাডেমি থেকেই উঠে এসেছেন। এ একাডেমির প্রধান কোচ রাহুল বললেন, ‘আমাদের এখানে বর্তমানে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী আছে। এরা বিভিন্ন এইজ লেভেলের দলের খেলে। প্রতি সপ্তাহেই তারা প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল খেলে।’ এ একাডেমির মতো আরও অনেক একাডেমি আছে বেঙ্গালুরুতে। যেখানে গড়ে উঠছে ভবিষ্যতের সুনীল ছেত্রীরা। রাহুল জানালেন, এ একাডেমির লক্ষ্য জাতীয় দলের উপযোগী ফুটবলারের পাশাপাশি বিদেশি লিগে খেলার মতো ফুটবলার তৈরি করাও।

সর্বশেষ খবর