বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

২৯৮ দিন পর মাঠে নামছেন চ্যাম্পিয়ন সাবিনারা

বাংলাদেশ নেপাল মুখোমুখি আজ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

২৯৮ দিন পর মাঠে নামছেন চ্যাম্পিয়ন সাবিনারা

চ্যাম্পিয়নের পর প্রায় ৩০০ দিন মাঠে নামেনি দল। ফুটবলে এমন রেকর্ড খুঁজতে অনেকেরই হিমশিম খাওয়ার কথা। অথচ বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের দিকে তাকালে তা সহজে বের করা যাবে। ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর কাঠমান্ডু দশরথ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ নারী দল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ফাইনাল খেলেছিল স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে সাবিনা খাতুনের নেতৃত্বে লাল-সবুজের দল ৩-১ গোলে জয়ী হয়ে ইতিহাস গড়েছিল। মেয়েদের শিরোপায় বাংলাদেশজুড়ে যে উৎসব হয়েছিল তা অতীতে দেখা যায়নি। ঢাকা পৌঁছানোর পর নারী দলকে সুসজ্জিত দোতলা বাসে চড়িয়ে বিমানবন্দর থেকে বাফুফে ভবনে আনা হয়। সে কি অভূতপূর্ব দৃশ্য! রাস্তায় দুই পাশে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার পথচারী চ্যাম্পিয়নদের হাত নেড়ে অভিনন্দন জানায়।

মেয়েরা পুরস্কারের বন্যায় ভেসে যান। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, এখানে থেমে থাকবে না সাফজয়ীরা। এগিয়ে যাবে বহুদূর। এখন থেকে নিয়মিত দেশ ও বিদেশে নারী দলের খেলার ব্যবস্থা করা হবে। আরও কত কি প্রতিশ্রুতি! কিন্তু কোথায় কী? সেই চ্যাম্পিয়ন মেয়েরাই থাকলেন হতাশায় বন্দি। অনুশীলনে কঠোর পরিশ্রম করছেন। অথচ কোনো ম্যাচ নেই। ভাবা যায় সাবিনারা এত বড় অর্জনের পরও অলস সময় কাটিয়েছেন! সাফ জেতার ২৯৮ দিন পর আজ তারা মাঠের লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছেন। সাবিনাদের যেখানে শেষ, সেখান থেকেই শুরু করছে আজ। প্রতিপক্ষ সেই নেপাল। যাদের ২০২২ সালে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সাফ জিতে ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশ।

ফিফা টাওয়ার-১-এ দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে দুই দেশ। প্রথমটি আজ অনুষ্ঠিত হবে কমলাপুর শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে। ১৬ জুলাই দ্বিতীয় ম্যাচও একই ভেন্যুতে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সাবিনা, সানজিদারা আজ প্রথম ম্যাচ খেলবেন। দর্শকদের প্রত্যাশা থাকবে দশরথের পুনরাবৃত্তি ঘটবে কমলাপুরে। কিন্তু চ্যাম্পিয়নরা কত উজ্জীবিত, এ নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। নেপালের মেয়েরা রানার্সআপ হলেও তারা একাধিক ম্যাচ খেলেছেন। বাংলাদেশের মেয়েরা তো নীরবতায় দিন পার করেছেন। এর মধ্যে ঘটে গেছে কত হতাশার ঘটনা।

মিয়ামানারে অলিম্পিক বাছাই পর্বে খেলবেন বলে মেয়েদের আনন্দের সীমা ছিল না। প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন কঠোরভাবে। সেই আনন্দ পরিণত হলো হতাশায়। বাফুফে মেয়েদের যেতেই দিল না। কারণ বাফুফের নাকি এত টাকা নেই। এ নিয়ে সমালোচনায় ফেটে পড়েছিল ক্রীড়াঙ্গন। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। বাফুফে এমন সময় নাম প্রত্যাহার করে যখন নতুন করে নাম লেখানোর সুযোগ ছিল না। খেলা নেই তাই ফুটবলে জড়িয়ে থাকার অর্থ হয় না বলে এমন অভিমানে স্বপ্না ক্যারিয়ারের ইতিই টানেন। আঁখি খাতুন কৌশল খাটিয়ে সরে পড়েন। যে লোকটি দেশের নারী দলকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান সেই কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন পদত্যাগ করেন। তাই ২০২২ আর ২০২৩ বাংলাদেশের পার্থক্য এক নয়। এতদিন মানসিক যন্ত্রণায় ছটফট করা সাবিনারা আগের সেই ম্যাজিক দেখাতে পারবেন কি না- সেটাই বড় প্রশ্ন।

সর্বশেষ খবর