সোমবার, ১৭ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

ক্যাপ্টেনস নকে সিরিজ জয়

মেজবাহ্-উল-হক

ক্যাপ্টেনস নকে সিরিজ জয়

সিলেটের সবুজ গালিচায় টি-২০ সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের ক্যাপ্টেনস নকে দুই ম্যাচের সিরিজে আফগানিস্তানকে ২-০ ব্যবধানে হারাল স্বাগতিকরা।

কালকের ম্যাচে টাইগাররা জয় তুলে নিয়েছে ৬ উইকেটে। বল হাতে মাত্র ১৫ রানে দুই উইকেট এবং ব্যাট হাতে ১১ বলে ১৮ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করেই বাইশগজ ছাড়েন সাকিব। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের জন্য ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন। প্রথম ম্যাচেও তিনি দেখিয়েছেন অলরাউন্ড নৈপুণ্য। দুই ম্যাচেই দলের জয়ে ‘ইম্প্যাক্ট’ পারফরম্যান্স দেখিয়ে সিরিজ সেরার পুরস্কারও জিতেছেন টাইগার ক্যাপ্টেন।

প্রথম টি-২০-এর মতো গতকালও খেলা শেষ ওভারে গড়ায়। কিন্তু কোনো শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে দেননি স্ট্রাইকিংয়ে থাকা ব্যাটার শামীম পাটোয়ারী। শেষ ওভারে দরকার ছিল ৪ রান। কিন্তু পাটোয়ারী প্রথম বলেই মিডউইকেট দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন। বৃষ্টি আইনে কাল বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ১১৯ রান, ১৭ ওভারে। কিন্তু স্বাগতিকরা ৫ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।

গতকাল টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৭.২ ওভারে আফগানিস্তান ২ উইকেটে ৩৯ রান করার পর বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। পৌনে দুই ঘণ্টা পর যখন খেলা শুরু হয় তখন দুই ইনিংস থেকে ৩ ওভার করে ‘কার্টেল’ হয়। ১৭ ওভারে আফগানিস্তান ৭ উইকেটে করে ১১৬ রান। ডার্কওয়াথ/লুইস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের টার্গেট দাঁড়ায় ১৭ ওভারে ১১৯ রান। যেহেতু আফগানরা বৃষ্টির আগে ৭.২ ওভার ব্যাটিং করেছে ২০ ওভার খেলার টার্গেট নিয়ে, সেহেতু বৃষ্টি আইনে স্বাগতিকদের টার্গেটে বাড়তি ৩ রান যুক্ত হয়।

তারপরও ১৭ ওভারে ১১৯ রানের টার্গেট আহামরি কিছু নয়। কিন্তু ভয় ছিল যদি আবার বৃষ্টি নামে। তাই বাইশগজে গিয়েই ঝড় তোলেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও আফিফ হোসেন। তারা প্রথম ৫ ওভারেই করেন ৫০ রান। আফগানিস্তানের অভিষিক্ত বোলার ওফাদার মোমান্তকে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম ওভারেই ভড়কে দিয়েছেন লিটন। তার ওভারের প্রথম তিন বলেই তিন বাউন্ডারি। ওই ওভার থেকে আসে ১৯ রান। তবে এরপর দুই স্পিনার মুজিব ও রশিদ খান এসে রানের গতি কমিয়ে দেন। মাঝে ১০ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে বিপদের গন্ধ পায় স্বাগতিকরা। যদিও সাকিবের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত কোনো সমস্যাই হয়নি।

কাল গুরুত্বপূর্ণ ছিল টস। প্রথম ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও টস জিতে আফগানিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠান বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব। টাইগার বোলাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে শুরু থেকেই সফরকারীদের চাপে রাখেন। প্রথম ওভারেই আফগানিস্তানের সেরা ব্যাটার রহমানুল্লাহ গুরবাজকে তুলে নেন তাসকিন আহমেদ। আগের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে পরের বলেই বোকা বোনে যান আফগান ওপেনার। শট বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল সোজা ওপরে উঠে যায়, তাসকিন নিজেই ক্যাচটি লুফে নেন।

নিজের দ্বিতীয় ওভারে আরেক ওপেনার হজরতুল্লাহ জাজাইকে গতির ফাঁদে ফেলেন। শরীর সোজা শট বল কাট করতে গিয়ে উইকেটকিপারের কাছে ক্যাচ তুলে দেন। বৃষ্টির পরও দ্রুত গতিতে রান তুলতে গিয়ে দ্রুত উইকেটও হারিয়ে ফেলেন সফরকারীরা। টাইগার বোলার তাসকিন ৩৩ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। দুটি করে উইকেট শিকার করেছেন সাকিব ও মুস্তাফিজুর রহমান। কাল আফগানিস্তানের কোনো ব্যাটারই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতলেও টি-২০তে জয়ের দেখাই পেল না আফগানিস্তান।

ক্যাপ্টেন সাকিবের নেতৃত্বে টি-২০তে বাংলাদেশ যেন দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছর এ সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে আট ম্যাচ খেলে সাত জয় তুলে নিল টাইগাররা। আফগানিস্তানকে সিরিজে হারিয়ে সাকিব বললেন, টি-২০তে পাওয়া এ আত্মবিশ্বাস সামনের ৫০ ওভারের এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপেও ‘টনিক’ হিসেবে কাজ করবে! জয়ের এ অভ্যাস মনস্তাত্ত্বিকভাবে বাংলাদেশ দলকে ‘বুস্টআপ’ করবে!

সর্বশেষ খবর