বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

চ্যাম্পিয়নদের অবনমন

শুধু মুক্তিযোদ্ধা কেন, লিগ শিরোপা জেতা আট ক্লাবও বিভিন্ন সময়ে রেলিগেশনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ঐতিহ্যবাহী ওয়ান্ডারার্সের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

চ্যাম্পিয়নদের অবনমন

আজমপুর এফসি উত্তরা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র এবার পেশাদার লিগ থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নেমে গেছে। আজমপুর ফুটবলে পরিচিত ক্লাব নয়। এবারই তাদের অভিষেক হয়েছিল পেশাদার লিগে। এসেই অবনমন। তবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অভিষেকের পর থেকে ঘরোয়া ফুটবলে আলেচিত দল।  ১৯৮৪ সালে প্রথম বিভাগ লিগে অভিষেক। শুরুর দিকে সাফল্য না পেলেও বড় বড় দলগুলোকে ঠিকই রুখে দিত। ১৯৯৪ সালে শক্তিশালী রূপ ধারণ করলে মুক্তিযোদ্ধার চেহারা বদলে যায়।

১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে যে ম্যাচে মোহামেডান ড্র করলে চ্যাম্পিয়ন, সেই ম্যাচে ২-০ গোলে জিতে মুক্তিযোদ্ধা প্রথম লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়। এরপর ২০০০ সালে দ্বিতীয় শিরোপা। পেশাদার লিগে দুবার রানার্সআপ। কত তারকা যে এই ক্লাব থেকে সৃষ্টি হয়েছেন, তার হিসাব মেলানো মুশকিল। সেই আলোড়ন তোলা মুক্তিযোদ্ধা রেলিগেশনের শিকার! শুধু মুক্তিযোদ্ধা কেন, লিগ শিরোপা জেতা আট ক্লাবও বিভিন্ন সময়ে রেলিগেশনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ঐতিহ্যবাহী ওয়ান্ডারার্সের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয়। এখনো তারা লিগে তৃতীয় সর্বোচ্চ শিরোপা জেতা দল। ওয়ান্ডারার্স প্রথম দল হিসেবে হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয়। ছয়বার লিগ জেতার রেকর্ড রয়েছে। সেই দলই ১৯৮৯ সালে প্রথম বিভাগ থেকে নেমে যায়। ২০০৬ সালে প্রিমিয়ার লিগে উঠে আসে। তবে কখনো পেশাদার লিগ খেলা হয়নি তাদের। বর্তমানে প্রথম বিভাগ লিগে অবস্থান করছে ওয়ান্ডারার্স।

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ১৯৬৫ সালে ইপিআইডিসির অভিষেক হয়। স্বাধীনতার পর প্রথম বিজেআইসি, পরে বিজেএমসি নামকরণ হয়। পাকিস্তান আমল তিন ও স্বাধীনতার পর দুবার লিগ জয়ের রেকর্ড রয়েছে অফিস দলটির। ১৯৮৩ সালে দ্বিতীয় বিভাগে নেমে যায় তারা। ১৯৯১-৯২ মৌসুমে উঠেও আসে। দুই বছর খেলে আবার দ্বিতীয় বিভাগে। এরপর ফুটবলে বিজেএমসির কোনো খোঁজ ছিল না। সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের প্রচেষ্টায় টিম বিজেএমসি নাম দিয়ে পেশাদার লিগে নাম লেখায়। এখানেও অবনমন। এখন তো বিজেএমসির পুরো স্পোর্টস সেক্টর বিলুপ্ত। ১৯৪৮ সালে শুরু হওয়া লিগে ভিক্টোরিয়াই প্রথম চ্যাম্পিয়ন।  তিনবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া ক্লাবটিও রেলিগেশনে আটকে যায়। এখন তারা প্রথম বিভাগে খেলছে। ইপিজি প্রেস ১৯৫২ সালে প্রথম বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়। স্বাধীনতার পর ক্লাবটির নাম বদলে রাখা হয় বিজিপ্রেস। ১৯৭৬ সালে প্রথম বিভাগ থেকে তাদের অবনমন ঘটে। বর্তমানে তারা দ্বিতীয় বিভাগে খেলছে।

ফুটবলে দলটি মোটেও পরিচিত নয়। তার পরও প্রথম বিভাগ লিগে একবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কৃতিত্ব রয়েছে। ইস্ট পাকিস্তান জিমখানা, যারা লিগ শুরুর পরের বছরেই চ্যাম্পিয়ন। বেশিদিন টিকতে পারেনি। পাঁচ বছরের মধ্যেই অবনমন ঘটে দ্বিতীয় বিভাগে। আজাদ স্পোর্টিং ছিল সাড়াজাগানো ক্লাব। ১৯৫৮ সালে তারা লিগ জিতেছিল। ১৯৯২ সালে অবনমন হওয়ার পর ক্লাবটি ফুটবলে আছে না হারিয়ে গেছে, তা পরিষ্কার নয়। ব্রাদার্স ইউনিয়নের মতো জনপ্রিয় ক্লাবও রেলিগেশনের শিকার হয়। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফের পেশাদার লিগ খেলার অপেক্ষায়। ২০০৪ ও ২০০৬-৭ মৌসুমে তারা দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর