রবিবার, ৬ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

কিংবদন্তি সাদেককে বিরল সম্মান

শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার ২০২৩

ক্রীড়া প্রতিবেদক

কিংবদন্তি সাদেককে বিরল সম্মান

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার নিতে এগিয়ে গেলেন হকির কিংবদন্তি আবদুস সাদেক। প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার এগিয়ে দিয়ে বেশ কিছু সময় আলাপ করে নিলেন। কুশল বিনিময়ের পর সনদপত্র ও পুরস্কার নিয়ে মঞ্চ ছাড়লেন আবদুস সাদেক। খেলোয়াড়, কোচ এবং সংগঠক হিসেবে অসামান্য অবদানের জন্য এ বছর আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের ৭৪তম জন্মদিন উদযাপন এবং শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার প্রদান ঘিরে গতকাল রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠান হয়ে গেল। প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন বাংলাদেশের হকিতে কিংবদন্তি আবদুস সাদেক। বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার-২০২৩ আমাকে প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় নিজেকে অত্যন্ত গর্বিত মনে করছি। এ পুরস্কার আমাকে আরও বেশি অনুপ্রাণিত এবং উৎসাহিত করবে।’ বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের সঙ্গে অনেক কাজ করেছেন আবদুস সাদেক। কাছ থেকে দেখেছেন তাঁকে। সাদেক বলেন, ‘শেখ কামাল ছিলেন দেশের ইতিহাসের সফল ক্রীড়া সংগঠক। তিনি ছিলেন অমিত প্রতিভার অধিকারী। নিবেদিতপ্রাণ ক্রীড়া সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল ছিলেন আমাদের অহংকার। তিনি সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ অবদান রেখে গেছেন। মাত্র ২৬ বছর বয়সের জীবনে দেশকে তিনি অনেক কিছু দিয়ে গেছেন। আধুনিক চিন্তাভাবনা দিয়ে তিনি দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে অনেকটা পথ এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তিনি বেঁচে থাকলে ক্রীড়াঙ্গনকে আরও উঁচুতে নিয়ে যেতে পারতেন। ঘাতকরা সেই সুযোগ দেয়নি। শেখ কামাল যে পথ দেখিয়ে গেছেন আমরা তা অনুসরণ করতে পারলে আরও বেশি সাফল্য বয়ে আনতে পারব।’ আবদুস সাদেক প্রথম বাঙালি হিসেবে পাকিস্তান জাতীয় হকি দলে খেলেছেন। স্বাধীনতার পর আবাহনীর ফুটবল ও হকি দলের প্রথম অধিনায়ক ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলেরও প্রথম অধিনায়ক ছিলেন সাদেক। কোচ এবং সংগঠক হিসেবেও রেখেছেন সাফল্যের স্বাক্ষর। ক্রীড়াক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পেয়েছেন ১৯৯৬ সালে।

এ পুরস্কার পেয়ে আবেগী আবদুস সাদেক বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে ক্রীড়া অনুরাগী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত হতে এই পুরস্কার গ্রহণ করেছি। এমনটা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। এটা আমার খেলোয়াড়ি জীবনের পরম এক সার্থকতা। এত ব্যস্ততার মাঝেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে খোঁজখবর রাখেন এবং সময় পেলে খেলার মাঠে ছুটে যান, খেলোয়াড়দের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন তার কোনো তুলনা হয় না।’ শেখ কামালের স্বপ্নের পথে ছুটে চলে বাংলাদেশ ক্রীড়াক্ষেত্রে অনেক সাফল্য বয়ে আনবে বলে মনে করেন আবদুস সাদেক।

এদিকে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানও আবদুস সাদেকের অবদানের কথা স্মরণ করেছেন। আবাহনীর প্রতিষ্ঠার পেছনে শেখ কামালের পাশাপাশি অবদান রেখেছেন আবদুস সাদেকও। বিশেষ করে ১৯৭৫ সালের আগস্টে বঙ্গবন্ধু পরিবারের হত্যাকান্ডের পর আবাহনীর টিকে থাকার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।

শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কারে সেরা খেলোয়াড় ক্যাটাগরিতে সাবিনা খাতুন, তাসকিন আহমেদ ও জিয়ারুল ইসলাম, উদীয়মান খেলোয়াড় ক্যাটাগরিতে মুহতাসিম আহমেদ হৃদয় ও আমিরুল ইসলাম, ক্রীড়া সংগঠক ক্যাটাগরিতে মালা রানী সরকার ও ফজলুল ইসলাম, ক্রীড়া সংস্থা ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশন, ক্রীড়া পৃষ্ঠপোষক ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস, ক্রীড়া সাংবাদিক ক্যাটাগরিতে খন্দকার তারেক মো. নুরুল্লাহ এবং ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার হিসেবে আতহার আলী খান পুরস্কার পেয়েছেন।

 

সর্বশেষ খবর