সোমবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ওপেনিং নিয়েই যত ভাবনা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ওপেনিং নিয়েই যত ভাবনা

টাইগারদের দুই ভরসা সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ (এলপিএল) খেলছেন। তাদের সঙ্গী বাঁ-হাতি দীর্ঘকায় পেসার শরিফুল ইসলাম। তিন ক্রিকেটারই রয়েছেন এশিয়া কাপ স্কোয়াডে। শুক্রবার ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বাঁ-হাতি স্পিন অলরাউন্ডার সাকিব। লিটন তার সহকারী। এশিয়া কাপ শুরু ৩০ আগস্ট। খেলা হবে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায়। ৩১ আগস্ট স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশের। স্বাগতিকদের বিপক্ষে ব্যাট ও বলের লড়াইয়ে এই তিন ক্রিকেটারের এলপিএল খেলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে নিশ্চিত করে। অবশ্য তৌহিদ হৃদয়ও এলপিএল খেলেছেন।

এশিয়া কাপের প্রস্তুতি চলছে। এতদিন উন্মুক্ত অনুশীলন করেছেন টাইগার ক্রিকেটাররা। গতকাল থেকে শুরু করেছে ক্লোজডোর অনুশীলন। মিডিয়া কিংবা অন্য কারও উপস্থিতি থাকছে না। গতকাল বিসিবির কনফারেন্স রুমে মানসিক দৃঢ়তা বৃদ্ধি করে পারফরম্যান্স কীভাবে বাড়ানো যায় সে নিয়ে ক্লাস করিয়েছেন ‘পারফরম্যান্স সাইকোলোজিস্ট’ ফিল জন্সি। ক্লাস শুরুর আগে হেড কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে কীভাবে টার্গেট থাকা উচিত ক্রিকেটারদের, সে বিষয়ে কথা বলেন। শনিবার সাকিবের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করে নির্বাচক প্যানেল। স্কোয়াডের একমাত্র ‘চমক’ তানজিদ হাসান তামিম। ওয়ানডে নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়া তামিম ইকবালের পরিবর্তে তাকে নেওয়া হয়েছে। সিনিয়র ও জুনিয়রদের নিয়ে গড়া দলটি নিয়ে এশিয়া কাপে কতদূর যাবে বাংলাদেশ? স্কোয়াডের দুর্বলতা ওপেনিংয়ে এবং মিডল অর্ডার শক্তিশালী।

১৯৮৪ সাল থেকে শুরু এশিয়া কাপ। বাংলাদেশ প্রথম অংশ নেয় ১৯৮৬ সালে। এরপর থেকে টানা খেলছে এশিয়া কাপে। তিনবার ফাইনাল খেলে ২০১২, ২০১৬ ও ২০১৮ সালে রানার্স আপ হয়েছে টাইগাররা। এবার স্বপ্ন দেখছে শিরোপা জয়ের। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা থাকার পরও কী সেটা সম্ভব? অসম্ভবকে জয় করতে সাকিবের নেতৃত্বে মরিয়া টাইগাররা। দল কেমন হয়েছে- ব্যবচ্ছেদে দেখা গেছে ব্যাটিং বিভাগের তুলনায় পেস অ্যাটাক ছন্দে রয়েছে। ১৭ সদস্যের স্কোয়াডে পেসার পাঁচজন- তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, ইবাদত হোসেন, হাসান মাহমুদ ও শরিফুল ইসলাম। পাঁচ পেসারের মধ্যে মুস্তাফিজ ও শরিফুল দুজন বাঁ-হাতি পেসার। বাকি তিনজন ডান হাতি। পাঁচ পেসারের মধ্যে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজ। ৮৯ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ১৪৮টি। স্কোয়াডে তার উইকেট সংখ্যা সাকিবের পর। টাইগার অধিনায়কের উইকেট ২৩৫ ম্যাচে ৩০৫টি। পেস বিভাগে মুস্তাফিজের পর দ্বিতীয় অভিজ্ঞ পেসার তাসকিন আহমেদ। ৫৯ ওয়ানডেতে তার উইকেট ৮১টি। বাকি তিন পেসার ইবাদত হোসেন ১২ ম্যাচে ২২ উইকেট, হাসান মাহমুদ ১৩ ম্যাচে ২০ উইকেট এবং শরিফুলের উইকেট ১৭ ম্যাচে ২৬টি। পাঁচ পেসার একত্রে খেলেছেন ১৯০ ওয়ানডে এবং উইকেট নিয়েছেন ২৯৭টি। স্পিন বিভাগে তিন স্পেশালিস্ট স্পিনার সাকিব, মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাসুম আহমেদ। এ ছাড়া অলরাউন্ডার কোটায় রয়েছেন শামীম হোসেন,  শেখ মেহেদি ও আফিফ হোসেন। মেহেদি ৩ ওয়ানডে খেলে উইকেট নিয়েছেন দুটি, আফিফ ২৮ ওয়ানডেতে তিনটি নিয়েছেন। বাকি তিন স্পেশালিস্ট স্পিনারের মধ্যে নাসুম ৭ ওয়ানডেতে ৮ উইকেট, মিরাজ ৭৭ ওয়ানডেতে ৮৮টি এবং সাকিব ২৩৫ ম্যাচে ৩০৫ উইকটে নেন। পাঁচ স্পিনার একত্রে ৩৫০ ওয়ানডে খেলে উইকেট নিয়েছেন ৪০৬টি।

স্কোয়াডে সবচেয়ে অনভিজ্ঞ হচ্ছে ওপেনিং। তামিম না থাকায় প্রথমবার সুযোগ পেয়েছেন তানজিদ। ২২ বছর বয়সী তানজিদের অভিষেক হতে পারে। বাঁ-হাতি মোহাম্মদ নাঈম শেখ খেলেছেন ৪ ওয়ানডে এবং রান করেছেন মাত্র ১০। দুজনেই একেবারে অনভিজ্ঞ। লিটন দাস ৭২ ওয়ানডেতে রান করেছেন ৩ সেঞ্চুরি ও ১০ হাফসেঞ্চুরিতে রান করেছেন ২২১৩।

ওয়ানডাউনে খেলেন নাজমুল শান্ত। ইদানীং ভালো ব্যাটিং করা নাজমুল শান্ত ২৭ ম্যাচে এক সেঞ্চুরিতে রান করেছেন ৬৩৯ রান। লিটন ও নাজমুল শান্ত ছাড়া টাইগারদের ব্যাটিংয়ের মূল ভরসা দুই অভিজ্ঞ অধিনায়ক সাকিব ও মুশফিকুর রহিম। সাকিব ২৩৫ ম্যাচে ৯ সেঞ্চুরি ও ৫৩ হাফসেঞ্চুরিতে ৭২১১ রান করেন। সাবেক অধিনায়ক মুশফিক ২৫১ ম্যাচে ৯ সেঞ্চুরি ও ৪৫ হাফসেঞ্চুরিতে রান করেছেন ৭২৫৭। এ ছাড়া তরুণ তৌহিদ হৃদয় দারুণ খেলছেন। ৯  ম্যাচে রান করেছেন ৩৩৮। মেহেদী মিরাজও বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে যথেষ্ট কার্যকরী। ৭৭ ম্যাচে এক সেঞ্চুরি ও ৪ হাফসেঞ্চুরিতে রান করেছেন ১২৪৫। টাইগার ক্রিকেটাররা সব মিলিয়ে ওয়ানডে খেলেছেন ৯০৩টি। সেঞ্চুরি ২৫টি। উইকেট ৭০৩টি।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর