শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

১৪৭ ডট বল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

১৪৭ ডট বল

আবহাওয়ার আগাম সংকেত ছিল বৃষ্টি হবে। বৃষ্টি না হলেও কালো মেঘে ছেয়ে থাকবে ক্যান্ডির আকাশ। পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামের আকাশে মেঘ ছিল। কিন্তু সেই মেঘ বাধা হয়নি বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। বরং টাইগার ব্যাটাররা নিজেরাই কালো মেঘে ভীত হয়ে খোলসে ঢুকে পড়েন। সাকিব, নাঈম, তানজিদ, মুশফিকরা ব্যাটিং উইকেটে এতটাই বাজে ব্যাটিং করেন যে, দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি ৭ ব্যাটার। শ্রীলঙ্কান বোলারদের সমীহ করে সাকিব বাহিনী ডট বল দিয়েছেন ১৪৭টি। অথচ বল খেলেছেন ২৫৬টি। খেলতে পারেননি ৪৪ বল। গোটা দলের বাজে ব্যাটিংয়েও উজ্জ্বল ছিলেন বাঁহাতি নাজমুল হোসেন শান্ত। থিকশানা, ধনাঞ্জয়, পাথিরানাদের বৈচিত্র্যময় বোলিংয়ের বিপক্ষে উইকেটের একপ্রান্ত আগলে নাজমুল খেলেন ১২২ বলে ৮৯ রানের ইনিংস। তার চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরিতে ৪৪ বল আগে এশিয়া কাপে নিজেদের সূচনা ম্যাচে বাংলাদেশ অলআউট হয় মাত্র ১৬৪ রানে।

পিঠের ব্যথায় সরে দাঁড়িয়েছেন তামিম ইকবাল। জ্বরের জন্য খেলতে পারছেন না ড্যাসিং ক্রিকেটার লিটন দাস। দুই দেশসেরা ওপেনারের অভাব গতকাল পরিষ্কারভাবে অনুভূত হয়েছে পাল্লেকেলেতে। টস জিতে ব্যাটিং নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব। অথচ পাল্লেকেলের পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড বেশি। টাইগার অধিনায়ক সে পথে না হেঁটে টস জিতে কেন ব্যাটিং নিলেন, পরিষ্কার কোনো উত্তর নেই। অথচ অধিনায়কের সিদ্ধান্ত যে ভুল, ব্যাটিং স্কোরই স্পষ্ট করেছে। ১৪৩তম টাইগার ক্রিকেটার হিসেবে ম্যাচে অভিষেক হয় তানজিদ হাসান তামিমের। ১৬তম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেকে সাজঘরে ফেরেন শূন্য রানে। তানজিদের সঙ্গী ছিলেন মাত্র ৩ ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাপুষ্ট মোহাম্মদ নাঈম। তিনিও বড় স্কোর গড়তে ব্যর্থ। ওপেনিং জুটিতে মাত্র ৪ রান যোগ করেন দুই তরুণ ওপেনার। চলতি বছর এটা চতুর্থ ওপেনিং জুটি। এর আগে তামিম-লিটন, তামিম-রনি তালুকদার ও লিটন-নাঈম জুটি হিসেবে খেলেছেন। চলতি বছর ওপেনিংয়ে ১৩ ম্যাচে একটি মাত্র শতরানের জুটি রয়েছে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তামিম-লিটন জুটি ১০২ রান করে। ওপেনিংয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪২ রান। ওপেনিং জুটি দুই অঙ্কের রান করতে পারেনি ছয়বার।

ছয় বছর পর ওয়ানডে নেতৃত্ব পাওয়া সাকিব ব্যাটিং করেন ওয়ানডাউনে। দুই ওপেনারের বিদায়ের পর দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ হয়েছেন সাকিব। পাথিরানার বলকে অহেতুক কাট খেলে ব্যক্তিগত ৫ রানে উইকেটরক্ষক কুশল মেন্ডিসের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন। এরপর চতুর্থ উইকেট জুটিতে নাজমুল শান্ত ও তৌহিদ হৃদয় ১৩.২ ওভারে ৫৯ রান যোগ করে দলের প্রাথমিক বিপর্যয় রোধ করেন। ছন্দে থাকা তৌহিদ ব্যক্তিগত ২০ রানে বোল্ড হন শানাকার বলে। একাই টেনে নিয়ে যান নাজমুল শান্ত। তিনি ১২২ বলে ৭ চারে ৮৯ রান করেন। শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ উইকেটের হারে সুপার ফোরে খেলা সংশয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে টাইগারদের। গ্রুপ পর্ব টপকাতে ৩ সেপ্টেম্বর শেষ ম্যাচে হারাতেই হবে আফগানিস্তানকে। রশিদ খানদের বিপক্ষে জয়ের জন্যই খেলবে দল। শান্ত বলেন, ‘শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারাতেই হবে। তখন সুপার ফোরে খেলার বিষয়টি সমীকরণের ওপর নির্ভর করবে। আমরা আফগানিস্তানের বিপক্ষে জিততেই খেলতে নামব।’

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ : ১৬৪/১০, ৪২.৪ ওভার (তানজিদ ০, নাঈম ১৬, শান্ত ৮৯, তৌহিদ হৃদয় ২০, থিকশানা ৮-১-১৯-২, ধনঞ্জয় ১০-০-৩৫-১, পাথিরানা ৭.৪-০-৩২-৪)

শ্রীলঙ্কা : ১৬৫/৫, ৩৯ ওভার (সামারাবিক্রমা ৫৪, আশালাঙ্কা ৬২*; তাসকিন ৭-১-৩৪-১, শরিফুল ৪-০-২৩-১, সাকিব ১০-২-২৯-২, মেহেদী ১০-০-৩৫-১

ফল : শ্রীলঙ্কা ৫ উইকেটে জয়ী

সর্বশেষ খবর