শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

যা ভাবা যায়নি তা-ই করে দেখাচ্ছে বসুন্ধরা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

যা ভাবা যায়নি তা-ই করে দেখাচ্ছে বসুন্ধরা

পেশাদার লিগে অভিষেকের পর ইতিহাস পিছু নিয়েছে বসুন্ধরা কিংসের। মাঠের সাফল্য ছাড়াও হোম ভেন্যু করে ফুটবলেও চমক এনেছে। বসুন্ধরা কিংসই দেশের একমাত্র ক্লাব যারা নিজেদের অর্থায়নে হোম ভেন্যু তৈরি করে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত এই ভেন্যু বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনা বলেই পরিচিত। লিগে অন্যান্য ক্লাবেও হোম ভেন্যু রয়েছে। তা বিভিন্ন জেলার স্টেডিয়ামে। কিংস অ্যারিনায় মাত্র দুই মৌসুমে লিগের হোম ম্যাচ খেলেছে কিংস। এরই মধ্যে বসুন্ধরা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের ফুটবল স্টেডিয়াম মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। দেশি ও বিদেশি যারা পর্যবেক্ষণ করেছেন, তারা কিংস অ্যারিনার প্রশংসা করেছেন। এএফসি তাই আন্তর্জাতিক ভেন্যুর স্বীকৃতিও দিয়েছে।

ফুটবল দেশের জনপ্রিয় খেলা হলেও এর জন্য আলাদা মাঠ নেই। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামেই মূলত ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অধিকাংশ ম্যাচ হয়েছে। এর পরও এই স্টেডিয়াম শুধু ফুটবলের নয়। বাফুফে এ স্টেডিয়াম নিজেদের করার চেষ্টা চালাচ্ছে ঠিকই, ক্রীড়া পরিষদ থেকে সাড়া পাচ্ছে না। সেখানে বসুন্ধরাই প্রথম ফুটবলে আলাদা স্টেডিয়াম নির্মাণ করেছে। ভাবা তো দূরের কথা, কেউ কি কোনো দিন স্বপ্ন দেখেছিলেন দেশের এক ক্লাবের হোম ভেন্যুতে জাতীয় দলের আন্তর্জাতিক ম্যাচ হবে? বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তা অবিশ্বাস্যই ছিল। সেখানে স্বপ্নকেও হার মানাতে চলেছে কিংস। সেই দুয়ারও খুলে যাচ্ছে। আগামী সোমবার বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায় আন্তর্জাতিক ম্যাচের অভিষেক হচ্ছে। ক্লাব নয়, তা হবে বাংলাদেশের জাতীয় দলের ম্যাচ দিয়ে। ৪ সেপ্টেম্বর ফিফাস্বীকৃত এই প্রীতি ম্যাচে তপু বর্মণরা আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবেন। ৭ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় ম্যাচও এখানে অনুষ্ঠিত হবে।

যা ছিল কল্পনার বাইরে তা-ই বাস্তবে রূপ দিচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ। কেননা এই ভেন্যু তাদের নিজস্ব। আর কোনো ক্লাবের পক্ষে সম্ভব কি না তা বলাটা সত্যিই কঠিন। বাংলাদেশ কেন, দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের কোনো ক্লাবের ভেন্যুতে জাতীয় দলের আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়নি। ইতিহাস লেখাটা কিংস অ্যারিনার জন্য শুধু অপেক্ষাই বলা যায়। তবে জাতীয় দলের ম্যাচ দিয়েই থেমে থাকছে না বসুন্ধরা। আরও চমক অপেক্ষা করছে ফুটবলপ্রেমীদের জন্য।

মোহামেডান ও আবাহনী হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে এশিয়ান ক্লাব কাপ বা এএফসি কাপের অনেক ম্যাচ খেলেছে। কিন্তু হোম ভেন্যু হিসেবে তারা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লড়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। কিন্তু এখানেও ইতিহাস বদলে দিচ্ছে বসুন্ধরা কিংস। এবারের এএফসি কাপের গ্রুপ পর্ব হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে হবে। কিংস ডি গ্রুপে। যেখানে আছে ভারতের দুই ক্লাব মোহনবাগান ও ওড়িশা এফসি। আছে মালদ্বীপের মাজিয়া। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে বলে চার দল ছয়টি করে ম্যাচ খেলবে। তিনটি হোম ও তিনটি অ্যাওয়ে। সে ক্ষেত্রে ঘরের মাঠে কিংস খেলবে তিন ক্লাবের বিপক্ষে। ২ অক্টোবর ওড়িশা, ৭ নভেম্বর মোহনবাগান, ২৭ নভেম্বর মাজিয়ার বিপক্ষে কিংস অ্যারিনায় লড়বে কিংস। নিজ ঘরে এএফসি কাপের লড়াই। বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার ক্লাবগুলোর কাছে স্বপ্ন হলেও তা মাত্র পাঁচ বছরের অভিষেক ইতিহাসে বসুন্ধরা বাস্তবে রূপ দিতে চলেছে। এরপর আবার কিংস অ্যারিনায় ২০২৬ বিশ্বকাপের ছোঁয়া লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। বাফুফের তথ্যানুযায়ী, আগামী মাসে মালদ্বীপ ও বাংলাদেশের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচ কিংস অ্যারিনাতেই হবে। এ ঘোষণা আসবে কিছুদিনের মধ্যে।

সর্বশেষ খবর