সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শান্ত-মিরাজের জোড়া সেঞ্চুরি

আসিফ ইকবাল

শান্ত-মিরাজের জোড়া সেঞ্চুরি

আঙুলে ব্যথা পেয়ে যদি সাজঘরে না ফিরতেন, তাহলে নিশ্চিত করেই তৃতীয় উইকেট জুটির রেকর্ডটা গড়ে ফেলতেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাজমুল হোসেন শান্ত। মিরাজ যখন আঙুলের ব্যথা নিয়ে সাজঘরে ফেরেন, তখন তৃতীয় উইকেট জুটিতে দুজনের নামের পাশে লেখা ১৯৪ রান। ওয়ানডে ক্রিকেটে তৃতীয় উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ২০২, ২০২২ সালে চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম করেছিলেন। প্রায় ২০০ রানের জুটি গড়া মিরাজ ও শান্ত দুজনেই সেঞ্চুরি করেন গতকাল। দুজনের সেঞ্চুরিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দলগত সর্বোচ্চ স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে মিরাজের অপরাজিত ১১২ ও শান্তর ১০৪ রানে ভর করে ৫ উইকেটে ৩৩৪ রান করে সাকিব বাহিনী। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টাইগারদের আগের দলগত সর্বোচ্চ ছিল ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ৩০৬। তবে দলগত সর্বোচ্চ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ উইকেটে ৩৪৯ রান। পবর্তসমান চাপের ম্যাচটি সাকিব বাহিনী জিতেছে ৮৯  রানে।

লাহোরে ৬ নম্বর ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা। প্রথম ম্যাচ খেলেছিল ২০০৩ সালে। এরপর ২০০৮ সালেই খেলে ৪ ম্যাচ। দুটি ছিল এশিয়া কাপে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। আমিরাতের বিপক্ষে মোহাম্মদ আশরাফুলের সেঞ্চুরিতে ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথমবার ৩০০ রান করেছিল বাংলাদেশ। ক্যান্ডির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ উইকেটে হারে সাকিব বাহিনী। ওই ম্যাচে ওপেনিং জুটি নিয়ে ভীষণ ভুগেছে টাইগাররা। গতকাল গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জীবন বাজির ম্যাচে সাকিব বাহিনী খেলতে নামে তিন পরিবর্তন নিয়ে। তানজিদ, শেখ মেহেদী ও মুস্তাফিজের পরিবর্তে স্কোয়াডে সুযোগ পান শামীম হোসেন পাটোয়ারী, আফিফ হোসেন ও হাসান মাহমুদ। ২০১৮ সালে দুবাইয়ে এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ফাইনালের পর পুনরায় গতকাল ওপেন করেন মেহেদী মিরাজ। পাঁচ বছর আগে লিটনের সঙ্গে ১২০ রানের জুটি গড়েছিলেন। গতকাল তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১৯৪ রানের জুটি। যদি মিরাজ আহত না হতেন, তাহলে হয়তো লিখে ফেলতেন দেশের পক্ষে তৃতীয় উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। তৃতীয় উইকেট জুটিতে এশিয়া কাপে সর্বোচ্চ রান ইউনুস খান ও শোয়েব মালিকের, ২২৩ রান, ২০০৪ সালে হংকংয়ের বিপক্ষে।

টস জিতে ওপেন করে নাঈম ও মিরাজ ৬০ রানের ভিত দেন। একই রানে সাজঘরে ফিরে যান তৌহিদ হৃদয়। ৬০ রানে ২ উইকেট হারানোর পর ২৫৪ রানে আহত হয়ে সাজঘরে ফেরেন মিরাজ। তার আগে ১১২ রানের ইনিংসটি খেলেন ১১৯ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায়। ৭৯ ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটা মিরাজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। প্রথম সেঞ্চুরিটি করেছিলেন গত ডিসেম্বরে ভারতের বিপক্ষে। সেঞ্চুরি করে তিনি ওয়ানডে ক্রিকেটে হাজার রানের (১০০৫) মাইলফলক গড়েন। ক্যান্ডিতে দলের চরম ব্যর্থতার মাঝে ৮৯ রানের আলোকিত ইনিংস খেলেছিলেন শান্ত। গতকাল সেই আক্ষেপ ঘোচান ১০৫ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ১০৪ রানের ইনিংস খেলে। বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে এক ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরির রেকর্ড এটি পঞ্চম। আগের চার জোড়া সেঞ্চুরি-২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে তামিম ইকবাল (১৩২) ও মুশফিকুর রহিম (১০৬), ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিব আল হাসান (১১৪) ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (১০২*), ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইমরুল কায়েশ (১১৫) ও সৌম্য সরকার (১১৭) ও ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তামিম (১২৮) ও লিটন দাস (১৭৬) রান করেছিলেন।

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ : ৩৩৪/৫, ৫০ ওভার (মেহেদী হাসান ১১২, নাজমুল হোসেন শান্ত ১০৪, সাকিব আল হাসান ৩২*, মোহাম্মদ নাঈম ২৮, মুশফিকুর রহিম ২৫; মুজিব উর রহমান ১/৬২)

আফগানিস্তান : ২৪৫/১০, ৪৪.৩ ওভার (ইব্রাহিম জাদরান ৭৫, রহমত শাহ ৩৩, হাসমতউল্লাহ শাহিদি ৫১, তাসকিন ৪/৪৪, শরিফুল ৩/৩৬, মিরাজ ১/৪১, হাসান ১/৬১)

ফল : বাংলাদেশ ৮৯ রানে জয়ী।

সর্বশেষ খবর