বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
চার ফুটবলারের জেল

আবাহনী নিয়ে কিছু কথা

আবাহনী নিয়ে কিছু কথা

১৯৮২ সালে ২১ সেপ্টেম্বর সুপার লিগে আবাহনী ও মোহামেডানের ম্যাচে দর্শকদের হট্টগোলে ম্যাচটি পরিত্যাক্ত হয়। অথচ বিনা কারণে আমি, সালাউদ্দিন ভাই, অধিনায়ক আনোয়ার ও হেলালকে জেলে পাঠানো হয়। আমি আর সালাউদ্দিন ভাই যশোর এবং আনোয়ার ও হেলাল রাজশাহীতে কারাবন্দি ছিলাম। ১৭ দিন পর মুক্তি দেওয়া হয়। কী কারণে আমরা জেল খাটলাম তার রহস্য উন্মোচন হয়নি।

১৯৭৫ সালে আমি আবাহনীতে যোগ দিই। আমার এখনো মনে পড়ে, ১৯৭৪ সালে আবাহনী লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কদিন পরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামাল ভাই আমাকে আবাহনীতে খেলার অফার দেন। তাঁর হাত ধরে প্রথমবার আবাহনী ক্লাবে আসি এবং ’৭৫ সালে খেলা শুরু করি। ’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু পরিবারকে হত্যার পর আমি শপথ নিই আবাহনী ছাড়া অন্য কোথাও যাব না। গাড়িসহ লাখ লাখ টাকার অফার পেয়েছি মোহামেডান, বিজেএমসি থেকে। তার পরও শেখ কামাল ভাইয়ের আবাহনী ছাড়িনি। ’৭৫ সালে ঘটনার পর আবাহনীর কী যে করুণ হাল হয়েছিল তা কারও অজানা নয়। আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বলা হয়েছিল, আবাহনীতে খেলতে পারবে না।

এমন ভয়াবহ দুর্দিনে ক্লাবের জন্য বড় ভূমিকা রাখেন আবদুস সাদেক ভাই। যিনি আবাহনীর ফুটবল ও হকির প্রথম অধিনায়ক ছিলেন। আমাদের বিরুদ্ধে তখন হুলিয়া জারি করা হয়েছে। অথচ সাদেক ভাই সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে তাঁর ধানমন্ডির বাসায় আমাদের নিয়ে বৈঠক করতেন। আমাদের সাহস জুগিয়ে বলতেন ‘তোমরা যদি না খেল আবাহনী দ্বিতীয় বিভাগে নেমে যাবে। এরপর দেখবে দলই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তোমরা কি চাও শেখ কামালের আবাহনী হারিয়ে যাক?’ আমরা তার কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে মাঠে নামি। সাদেক ভাই ওই সময় আবাহনীর জন্য যা করেছেন তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কষ্ট লাগে যারা এত বড় ত্যাগ স্বীকার করল তাদের কি সেভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে? যে আবাহনীর জন্য জেল খাটলাম, শেষ জীবনে এসে কি না উপহাসের পুরস্কার পেলাম। আবাহনীতে এখন কামাল ভাইয়ের প্রকৃত লোক কজন আছেন সেটাই আমার প্রশ্ন। ১৯৯৬ সালে ১০ লাখ টাকা দিয়ে আবাহনী লিমিটেডের ডিরেক্টরশিপ পেয়েছি। আমি বলব কেউ কেউ ডোনেশন ছাড়াই তখন ডিরেক্টর হন। ভালোবাসার টানে আবাহনীর সঙ্গে জড়িয়ে গেছি। শেখ কামাল ভাইয়ের আবাহনী যে আমার রক্তে মিশে গেছে। আমি আবাহনীর ছিলাম, যতদিন বাঁচব আবাহনীরই থাকব। তবে একটা কথা না বলে পারছি না, যে কারণে আমাদের পরিচালক পদে রাখা হয়নি, যারা এখন আছেন তারা কি সবাই অর্থ দিয়েছেন? আফসোস লাগে কোথায় যাচ্ছে আবাহনী।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর