বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নোংরামির মধ্যে থাকতে চাই না

ভিডিও বার্তায় তামিম যা বললেন

নোংরামির মধ্যে থাকতে চাই না

শেষ দু-তিন দিনে মিডিয়ায় যা লেখা হচ্ছে, আপনারা যা যা দেখছেন আর আসলে যা ঘটছে তা সম্পূর্ণ আলাদা। যা ঘটছে তা আমি পুরোটাই আপনাদের কাছে স্টেপ বাই স্টেপ জানাব। যারা বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমী বা আমার ফ্যান তাদের জানা উচিত।

অবসর থেকে ফেরার পর যে দুই মাস সময় ছিল সে দুই মাসে আমাকে প্রচ- পরিমাণ পরিশ্রম করতে হয়েছে নিজেকে ফিট করার জন্য। এ প্রক্রিয়ায় যারা যারা আমার সঙ্গে ছিলেন ফিজিও-ট্রেনার সবাই আমার সঙ্গে একমত হবেন যে, এমন কোনো সেশন নেই বা এমন কোনো এক্সারসাইজ নেই যেটা উনারা আমার কাছ থেকে চেয়েছেন, আমি সবই করেছি নিজেকে ফিট করার জন্য।

তবে যখন খেলা খুব কাছাকাছি আসে তখন আমি মানসিকভাবে ভালো অবস্থায় ছিলাম না। শেষ পাঁচ-ছয় মাস আমার সঙ্গে যা হয়েছে তা যদি নিজের জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন তাহলে বুঝতে পারবেন এটা সহজ জিনিস ছিল না। প্রথম ম্যাচে আমি ৩০-৩৫ ওভার ফিল্ডিং করলাম, কিন্তু ব্যাটিং করতে পারিনি। দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ আসে, আর আমার জন্য সেরা যা কিছু করা দরকার তা আমি করেছি। যদিও দল হারলে আর রানের গুরুত্ব থাকে না। এ কথা আমি সব সময়ই বলি। তবে ওই মুহূর্তে আমার দরকার ছিল কিছু রান করা এবং ব্যাটিং কেমন হচ্ছে তা ফিল করা। যদিও আমি মাত্র ৪৪ রান করেছিলাম, তবে নিজের ব্যাটিং নিয়ে খুবই খুশি ছিলাম। আমি খুবই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। ম্যাচের পর আমি মানসিকভাবে খুবই ভালো অবস্থায় ছিলাম। তখন আমার মাথায় আর ছিল না যে শেষ চার-পাঁচ মাসে কী হয়েছে! আমি কেবল খেলার দিকে মনোযোগী ছিলাম। বিশ্বকাপের দিকে মনোযোগী ছিলাম।

এটা খুবই স্বাভাবিক বিষয় যে একজন খেলোয়াড় যখন অনেক ইনজুরিতে থাকার পর ফিরবে তার কিছুটা ব্যথা থাকবেই। সেটা আমারও ছিল। দুই ম্যাচের পরই একটু ব্যথা ছিল। আমি দ্বিতীয় ম্যাচের পর আমার অবস্থানটা ফিজিওকে বলি। ঠিক ওই সময় তিনজন নির্বাচকই ড্রেসিং রুমে আসেন।

আমি নির্বাচকদের বলেছিলাম, আমার শরীর এমনই থাকবে এখন যে অবস্থায় আছে। আপনারা বিষয়টি মাথায় রেখে টিম সিলেক্ট করবেন।

এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ফিজিওর রিপোর্টে কী ছিল? সেটা আমি বলি, সে রিপোর্টে পরিষ্কার লেখা ছিল ২৬ সেপ্টেম্বর ম্যাচ (নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ) পর্যন্ত খেলতে পারব। কিন্তু মেডিকেল ডিপার্টমেন্ট মনে করে যদি আমি রেস্ট নিই, প্রস্তুতি ম্যাচের জন্য রিহ্যাভ হতো। দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পর পর্যাপ্ত সময় পাব। সেক্ষেত্রে প্রথম ম্যাচটা খেলার জন্য খুব ভালো অবস্থায় থাকব। কোনো জায়গায় বলা হয়নি পাঁচ ম্যাচ-দুই ম্যাচ খেলতে পারব না।

এর দু-এক দিন পর আমাকে বোর্ডের টপ লেভেল থেকে একজন ফোন করে বললেন, তুমি তো বিশ্বকাপে যাবা তোমাকে তো ম্যানেজ করে খেলতে হবে। তুমি প্রথম ম্যাচ খেল না, আফগানিস্তানের সঙ্গে। আমি বললাম ভাই এটা এখনো ১২-১৩ দিনের কথা। আমি তো এর মধ্যে ভালো কন্ডিশনে থাকব। কী কারণে খেলব না? তখন বললেন, আচ্ছা! তুমি যদি খেলও তাহলে নিচে ব্যাট করাব।

একটা ভালো ইনিংস খেলেছি। আমি হ্যাপি ছিলাম। হঠাৎ করে এসব কথা আমার পক্ষে নেওয়া সম্ভব না। আমি ১৭ বছর ধরে এক পজিশনে ব্যাটিং করেছি। আমার তিনে চারে পাঁচে ব্যাটিংয়ের অভিজ্ঞতা নেই। আমি কথাগুলো ভালোভাবে নিইনি। উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিলাম। কারণ কথাগুলো পছন্দ হয়নি। মনে হচ্ছিল আমাকে জোর করে অনেক জায়গায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। তখন আমি বললাম, দেখেন, আপনারা একটা কাজ করেন যদি আপনাদের এমন চিন্তাধারা থাকে তাহলে আপনারা আমাকে পাঠায়েন না। আমি এ নোংরামির মধ্যে থাকতে চাই না।

আমি উইশ করব যে ১৫ জন বিশ্বকাপে গিয়েছে, তারা যতটুকু সম্ভব বাংলাদেশের জন্য সাফল্য নিয়ে আসবে।

সর্বশেষ খবর