রবিবার, ১ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

কিংস অ্যারিনায় চমকের পর চমক

‘আমি অত্যান্ত আনন্দিত। আমাদের হোম ভেন্যুতে এএফসি কাপের অভিষেক হচ্ছে। এর পুরো কৃতিত্ব বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের। তিনি এ ইতিহাস লেখার রূপকার।’

মনোয়ার হক

কিংস অ্যারিনায় চমকের পর চমক

২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনার যাত্রা। সেদিন প্রথমবারের মতো বসুন্ধরা কিংস নিজেদের নির্মিত হোম ভেন্যুতে পেশাদার ফুটবল লিগে ম্যাচ খেলে পুলিশ এফসির বিপক্ষে। বাংলাদেশ তো বটেই, দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে এ-এক বিরল ঘটনা। কেননা এই অঞ্চলে কোনো ক্লাবই নিজেদের নির্মিত ভেন্যুতে হোম ম্যাচ খেলেনি। ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারিতে যাত্রা হলেও কিংস অ্যারিনার বয়স তিন বছর পার হয়নি। অথচ এরই মধ্যে ফুটবলের ছড়াছড়ি। কিংসের ঘরের মাঠ হলেও এই ভেন্যুতে বাংলাদেশ জাতীয় দল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ফিফা স্বীকৃত আন্তর্জাতিক দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছে। এই চমকও উপমহাদেশে প্রথম বলা যায়। বাংলাদেশ জাতীয় দল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, মিরপুর শেরেবাংলা, সিলেট জেলা স্টেডিয়াম, নীলফামারী ও যশোরে ম্যাচ খেলেছে। কিন্তু কিংস অ্যারিনায় প্রথম হোম ভেন্যূতে জাতীয় দলের আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে।

সংস্কার কাজে ব্যস্ততার কারণে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফুটবল নামানো সম্ভব হচ্ছে না। কবে হবে তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। এমন অবস্থায় মহাসংকটে পড়ে যায় দেশের ফুটবলে অভিভাবক সংস্থা বাফুফে। আন্তর্জাতিক ম্যাচ তাহলে কোথায় হবে? বিভিন্ন জেলায় স্টেডিয়াম থাকলেও তা আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য উপযোগী নয়।

এমন সংকটে এগিয়ে আসে বসুন্ধরা গ্রুপ। তারা শুধু নিজ দলের সাফল্য নয়, দেশের ফুটবল উন্নয়নে কাজ করছে। সংকট নিরসনে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান নির্দেশ দিলেন ফুটবল যেন কোনোভাবেই থেমে না থাকে। বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের ম্যাচ কিংস অ্যারিনাতেই অনুষ্ঠিত হলো। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান বরাবরই ক্রীড়া উন্নয়নে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। এমন কোনো খেলা নেই যে বসুন্ধরা গ্রুপ সহযোগিতা করেনি। আহমেদ আকবর সোবহান ছিলেন দেশের তারকা হকি খেলোয়াড়। যার হৃদয়ে খেলাধুলা মিশে গেছে তিনি কি কোনো সংকটে নীরব থাকতে পারেন? বসুন্ধরা ও ক্রীড়াঙ্গন একই সূত্রে গাথা এ কথা কারোর অজানা নয়।

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান স্বপ্ন দেখেছিলেন দেশে এমন এক ক্রীড়া কমপ্লেক্স করবেন যার নাম দুনিয়া ছড়িয়ে পড়বে। সেই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। বসুন্ধরা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের কাজ শেষ হতে এখনো কিছু বাকি। তবে এক ফুটবল ভেন্যু চালু হওয়ার পর দেশ-বিদেশে আলোড়ন তুলতে সক্ষম হয়েছে বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনা। তিন বছর পার হয়নি। এরই মধ্যে বসুন্ধরায় শুধু ফুটবল আর ফুটবল। সবার চোখ এখন বসুন্ধরাতে। আগামীকাল আরেক ইতিহাস রচিত হচ্ছে কিংস অ্যারিনায়। যা বাংলাদেশ এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার জন্য বিস্ময়কর।

১৯৮৫ সাল থেকে বাংলাদেশের ক্লাবগুলো এশিয়ান ক্লাব বা এএফসি কাপ খেলার সুযোগ পাচ্ছে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে খেলা হয়েছে। কিন্তু কোনো ক্লাবের নিজস্ব হোম ভেন্যু ছিল না, এখনও নেই। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, মিরপুর বা সিলেট স্টেডিয়ামকে হোম ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করেছে। বসুন্ধরা কিংসই সেই নতুন ইতিহাস লিখতে যাচ্ছে। আগামীকাল তাদের গড়া কিংস অ্যারিনায় এবারের এএফসি কাপে গ্রুপের হোম ম্যাচে লড়বে ভারতের ওড়িশা এফসির বিপক্ষে। দিনটি হবে বাংলাদেশ ফুটবলের জন্য গর্বের।

বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, ‘আমি অত্যান্ত আনন্দিত। আমাদের হোম ভেন্যুতে এএফসি কাপের অভিষেক হচ্ছে। এর পুরো কৃতিত্ব বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের। তিনি এ ইতিহাস লেখার রূপকার। কিংস অ্যারিনা পুরোপুরি প্রস্তুত। আমার বিশ্বাস আমরা সফল হব। মোহনবাগান ও মাজিয়ার সঙ্গেও হোম ম্যাচ খেলব। এরপর মালদ্বীপের বিপক্ষে বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব ম্যাচ। সব মিলিয়ে ফুটবলে ভরপুর থাকবে বসুন্ধরা।’

 

 

সর্বশেষ খবর