মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভারত ম্যাচেও টাইগারদের ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন

ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ। পরিচিত পরিবেশে প্রতিপক্ষ দলগুলোকে গুঁড়িয়ে অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটছে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, জশপ্রীত বুমরাহদের ভারত। দুরন্ত পারফরম্যান্সের আত্মবিশ্বাস নিয়ে ১৯৮৩ ও ২০১১ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত এখন পুনেতে। ১৯ অক্টোবর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলবে স্বাগতিকরা। আত্মবিশ্বাসী রোহিত বাহিনীর বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে নানান সমস্যায় জর্জরিত টাইগাররা। দলের মূল ক্রিকেটার ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ভুগছেন ইনজুরিতে। মিডিয়ার সঙ্গে লিটন বিতর্কে বাড়তি চাপে দল। দলের ওপর সবচেয়ে বেশি চাপ ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে। এখন পর্যন্ত তিন ম্যাচে তিন রকম ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশ। মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো পরিবর্তিত এই ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে শক্তিশালী ভারতের বিরদ্ধে কী রকম খেলবে বাংলাদেশ? প্রতি ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডারের পরিবর্তন নিয়ে কথা বলেন দলের সঙ্গে আসা টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন, ‘আমি আসলে এমনটা দেখিনি। টেকনিক্যাল কারণেও আমি দেখিনি। টেকনিক্যাল বিষয়ে আমি যাচ্ছি না। তবে ব্যাটিং অর্ডারের এই সমস্যা হচ্ছে মূলত মিরাজ ও নাজমুল শান্তকে নিয়ে। দুজনকে এভাবে খেলানোর কারণ, ডানহাতি ও বাঁ-হাতি ব্যাটার বিবেচনায়। তবে এ পরিবর্তন মেহেদী হাসান মিরাজের জন্যই।। সে খুব ছন্দে আছে। যে কোনো পজিশনেই সে সাফল্য পাচ্ছে। এ জন্যই সাকিব ৫ নম্বরে, মুশফিক ৬ নম্বরে, তৌহিদ হৃদয়কে ৭ নম্বরে খেলানো হচ্ছে।’

ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে যেমন চিন্তিত টিম ম্যানেজমেন্ট। তেমনি চিন্তিত অধিনায়ক সাকিবকে নিয়ে। ভারতের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সাকিব খেলবেন কি না, এ প্রসঙ্গে টিম ডিরেক্টর বলেন, ‘সাকিবের ইনজুরি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। আগামীকাল (আজ) অনুশীলনে ব্যাটিং করবে সাকিব। তখন বোঝা যাবে, ভারত ম্যাচে সে খেলতে পারবে কি না। সাকিব চাইছে, ম্যাচটি খেলতে। আমি মনে করি তার খেলার সম্ভাবনা ফিফটি-ফিফটি।’ বিশ্বকাপে ভারত ম্যাচের পর আরও পাঁচ ম্যাচ বাকি বাংলাদেশের। রোহিত বাহিনীর বিরুদ্ধে খেলতে নেমে যদি গোটা টর্নামেন্ট মিস করেন সাকিব, তখন কী হবে? এমনটা চাইছে না টিম ম্যানেজমেন্ট বলেন টিম ডিরেক্টর খালেদ, ‘একটা ম্যাচ রিস্ক নিয়ে তো আর পুরো টুর্নামেন্ট বাদ দেওয়া যাবে না।’ টিম ডিরেক্টরের উত্তরে একটি বিষয় পরিষ্কার, টিম ম্যানেজমেন্ট পুরো বিশ্বকাপেই চাইছে ফিট সাকিবকে।

ব্যাটিং অর্ডারের এ পরিবর্তন ওপেনিং জুটি ব্যর্থ হওয়ায়। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে লিটন ৭৬ রানের একটি ইনিংস খেলেন। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ১৩ ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে শূন্য রান করেন। ভালো শুরু করেও ব্যর্থ হচ্ছেন তরুণ বাঁ-হাতি ওপেনার তানজিদ তামিম। ওপেনারদের এই ব্যর্থতার প্রভাব পড়েছে গোটা দলের ওপর, ‘নিউজিল্যান্ড ম্যাচে ৫৬ রানে ৪ উইকেট হারানোর পরও মিডল অর্ডারের দৃঢ়তায় ২৪৫ রান করেছি। সুতরাং মিডল অর্ডার নিয়ে এলে কোনো চাপ নেই। যদি ওপেনিং জুটি রান করতে পারত, তাহলে কোনো সমস্যাই হতো না। নিউজিল্যান্ড ম্যাচে আউটের পর তানজিদ বলেছেন, এমন শটস খেলে তার আউট হওয়া উচিত হয়নি।’ ওপেনিং জুটির ব্যর্থতায় ভারত ম্যাচে মেকশিফট ওপেনার হিসেবে খেলতে পারেন মিরাজ। তখন নাজমুল ফিরে পাবেন তার প্রিয় ওয়ানডাউন। যেখানে এক বছর ধরে রান করছেন নিয়মিত।            

টিম ম্যানেজমেন্ট শুধু ব্যাটিং অর্ডার নিয়েই নয়, ফাস্ট বোলার তাসকিন আহমেদের বোলিং নিয়েও চিন্তিত। লাইন-লেন্থ বজায় রাখার চেয়ে শর্ট বোলিং করছেন তিনি। ফলে নতুন বলে দলের যে সহায়তা পাওয়ার কথা, সেটা পাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে টিম ডিরেক্টর বলেন, ‘বিষয়টি আমরা খেয়াল করেছি। তাসকিন প্রতিটি ম্যাচেই শর্ট বল করছেন। ভয়ংকর গতির সেই বোলিংও দেখা যাচ্ছে না। তার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আমরা কথা বলেছি। আশা করছি পরের ম্যাচগুলোয় ঠিক হয়ে যাবে।’ ভারত ম্যাচে যদি তাসকিনের পরিবর্তে তরুণ তানজিদ সাকিবকে দেখা যায়, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। স্পিনাররা প্রতি ম্যাচেই ভালো করছেন বলেন খালেদ, ‘আমরা পাঁচজন স্পেশালিস্ট বোলার নিয়ে ম্যাচ খেলছি। যেখানে স্পিনার সাকিব ও মিরাজ। দুজনেই দারুণ করছেন। আফগানিস্তান ম্যাচে স্পিনাররা দারুণ বোলিং করেছেন। আমরা জিতেছি।’ ব্যাটিং নিয়ে চিন্তিত টিম ডিরেক্টর। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ দিয়ে ২৭ বছর পর বিশ্বকাপ ফিরছে পুনেতে। বাংলাদেশ কি পারবে ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের পুনরাবৃত্তি করতে? কারণ, পুনেতে খেলা একমাত্র বিশ্বকাপের ম্যাচে কিন্তু আপসেট হয়েছিল। কেনিয়া ৭৩ রানে হারিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।

 

সর্বশেষ খবর