শিরোনাম
শুক্রবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিশ্বকাপে ওপেনিং জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড

বিশ্বকাপে ওপেনিং জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড

টানা তিন ম্যাচে ব্যর্থতা। ওপেনিংয়ে বড় কোনো জুটি নেই। লিটন দাস ও তানজিদ তামিমের ওপর আকাশসম চাপ। প্রতিপক্ষ ছন্দে থাকা ভারত। শুধু তাই নয়, শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরের স্টেডিয়ামে ৪০ হাজার দর্শকের গগনবিদারী চিৎকারও ছিল প্রতিপক্ষ। সব মিলিয়ে প্রতিকূল পরিবেশ! এমন অপরিচিত পরিবেশে পর্বতসম চাপ সামলে ব্যর্থতার খোলস ভেঙেছেন লিটন ও তানজিদ। বুমরা, সিরাজ, পাণ্ডিয়াদের গতি, সুইং, বাউন্স সামলে বিশ্বকাপে ওপেনিং জুটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েন। উইকেটের চারদিকে বাহারি সব স্ট্রোক খেলে হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস খেলেছেন লিটন ও তানজিদ। রেকর্ড গড়া ওপেনিং জুটির দিন সাকিব আল হাসানের পর দ্বিতীয় টাইগার ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে হাজার রানের মাইলফলক গড়েছেন মুশফিকুর রহিম। দুই ওপেনারের হাফ সেঞ্চুরির ইনিংসে পুনের ব্যাটিং উইকেটে বাংলাদেশ ২৫৭ রানের টার্গেট ছুড়ে দিয়েছে ভারতকে। ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আনা টিম ম্যানেজমেন্ট প্রশংসা কুড়াচ্ছে ওপেনিং জুটি লিটন ও তানজিদের ওপর আস্থা রাখায়।

সাকিব খেলবেন না, ম্যাচ প্রিভিউর দিনও কোনোরকম ইঙ্গিত দেয়নি বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। অবশ্য মিডিয়ার মুখোমুখিতে কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহে জানিয়েছিলেন, টাইগার অধিনায়কের পায়ের একটি স্ক্যান করানো হবে। রিপোর্ট পাওয়ার পর ম্যাচের দিন সকালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে পুণেতে মহারাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারতের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক ম্যাচ সাকিব খেলবেন কি না। গতকাল সকালে দল যখন স্ট্রেচিং করছিল, তখন লাল কেডস পরে নকিং করেছেন টাইগার অধিনায়ক। স্ট্রেইট ড্রাইভ খেলছিলেন বেশ সাবলীল গতিতে। তখনো মনে হচ্ছিল, ভারতের বিরুদ্ধে মরণ-বাঁচন ম্যাচে খেলবেন। শেষ পর্যন্ত শতভাগ ফিট না হওয়ায় সাহস করেনি দল। বাংলাদেশ প্রতিদিনে আগেই প্রকাশিত হয়েছে, কুঁচকিতে টিআর ওয়ান ইনজুরি নিয়ে খেলা অনিশ্চিত সাকিবের। সেটাই হয়েছে। সাকিব খেলেননি। দলের সেরা ক্রিকেটারের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশ ইনিংসের সব আলো কেড়ে নেন ওপেনিং জুটি। তানজিদ ও লিটন ওপেনিং জুটিতে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন। দুজনের হাফ সেঞ্চুরিতে ১৪.৪ ওভারে ৯৩ রান করে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে ওপেনিং জুটিতে বাংলাদেশের আগের সেরা স্কোর ৬৯ রান। ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয়ের ম্যাচে মেহরাব হোসেন অপি ও শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ করেছিলেন। বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ রানের জুটি ছিল ২০১১ সালে। মিরপুরে তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েশ করেছিলেন ৬.৫ ওভারে ৫৬। ভারতের বিরুদ্ধে ওপেনিং জুটিতে সর্বোচ্চ রান অবশ্য ১২০। ২০১৮ সালে এশিয়া কাপের ফাইনালে লিটন দাস ও মেহেদি হাসান মিরাজ করেছিলেন। লিটন খেলেছিলেন ১২১ রানের ইনিংস। মিরাজ করেছিলেন ৩২ রান।

চলমান বিশ্বকাপে এই প্রথম পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটি গড়েন ওপেনাররা। সাকিবের অনুপস্থিতিতে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া নাজমুল শান্ত টস জিতে ব্যাটিং করেন। দুই ওপেনারের হাফ সেঞ্চুরি ও ৬ নম্বর পজিশনে মুশফিকের ৪৬ বলে ৩৮ ও ৭ নম্বর পজিশনে মাহমুদুল্লাহর ৩৬ বলে ৪৬ এবং ওপেনার তানজিদ ৫১ ও লিটনের ৬৬ রানে ভর করে ৫০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৫৬ রান। বাঁ-হাতি ওপেনার তানজিদ ৫১ রানের ইনিংস খেলেন মাত্র ৪৩ বলে। চায়নাম্যান বোলার কুলদীপের বলে লেগ বিফোর হওয়ার আগে তরুণ বাঁ-হাতি তানজিদ ৪টি চার ছাড়াও ৩টি দৃষ্টিনন্দন ছক্কাও হাঁকান। আগের তিন ম্যাচের ব্যর্থতা কাটিয়ে দারুণ আগ্রাসি ব্যাটিং করেন তরুণ বাঁ-হাতি ওপেনার। আগের তিন ম্যাচের স্কোর ছিল ৫, ১১ ও ১৬। নয় ম্যাচে আট ইনিংসে এটা তানজিদের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। এর আগে এশিয়া কাপে ভারতের বিরুদ্ধে ১৩ রান করেছিলেন তানজিদ।

ভারত ম্যাচের আগে আকাশসম চাপে ছিলেন লিটন। মিডিয়া কর্মীদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। গতকাল ৬৬ রান করেন ৮২ বলে ৭ বাউন্ডারিতে। চলতি টুর্নামেন্টে এটা তার দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৭৬ রান করেছিলেন ৬৬ বলে। এ ছাড়া আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৩ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শূন্য রান করেন। ম্যাচটি বিশেষ কিছু মুশফিকের জন্য। সাকিবের পর দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে হাজার রানের মাইলফলক গড়েন। ২৪তম ক্রিকেটার হিসেবে মুশফিকের রান ৩৩ ম্যাচে ১ হাজার ২২। সাকিবের রান ৩২ ম্যাচে ১ হাজার ২০১। সবচেয়ে বেশি রান শচীন টেন্ডুলকারের, ৪৫ ম্যাচে ২ হাজার ২৭৮।

সর্বশেষ খবর