শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

কোহলির ব্যাটিং দেখে শিখতে বললেন শ্রীরাম

বিশ্বকাপের পুরো আসরে পুণের চেয়ে ভালো উইকেট আর কোনো ভেন্যুতে নেই। পুণের উইকেটে বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে চার, ছক্কা হাঁকিয়েছেন ব্যাটাররা। হাফসেঞ্চুরি, সেঞ্চুরির ইনিংস খেলেছেন। অথচ সেই সুযোগগুলোকে হাতে ধরে দূরে ছুড়ে ফেলেছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। বিশেষ করে দুই ওপেনার তানজিদ তামিম ও লিটন দাস লম্বা ইনিংস (সেঞ্চুরি) খেলার সুযোগকে কাজে লাগাননি ভারত ম্যাচে। তবে হাফসেঞ্চুরি করেছেন উভয়ে। ব্যাটারদের এই না পারার ব্যর্থতায় হতাশ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর শ্রীধরন শ্রীরাম, ‘৭ উইকেটের এমন হার অবশ্যই হতাশাজনক। আমি মনে করি বিশ্বকাপ একটি লম্বা টুর্নামেন্ট। টুর্নামেন্টে যে কোনো হারই আপনাকে হতাশ করবে। হারের বৃত্ত ভেঙে এখন কীভাবে জয়ে ফেরা যায়, সেটা খুঁজে বের করতে হবে। সমস্যাগুলো খুঁজে বের করে দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের দিকে তাকাতে হবে।’ পুণেতে সাড়ে ৩০০ রান করেও প্রতিপক্ষের জয় আটকানো যাচ্ছে না, ২৫৬ রান করে লড়াই করা উত্তাল আটলান্টিক পাড়ি দেওয়ার মতোই!

টানা তিন ম্যাচে ব্যর্থতায় পুড়েছে ওপেনিং জুটি। পুণের ব্যাটিং উইকেটে ব্যর্থতাকে পেছনে ফেলে তানজিদ ও লিটন ১৪.৪ ওভারে ৯৩ রানের ভিত দেন। যা বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা ওপেনিং জুটি। দুই ওপেনারের গড়ে দেওয়া ভিতের পরও অন্য ব্যাটাররা দায়িত্বহীন ছিলেন। ২৫৭ রানের টার্গেট স্বাগতিক ভারত টপকে গেছে সাবেক অধিনায়ক বিরাট কোহলির সেঞ্চুরিতে। কোহলির ক্যারিয়ারের ৪৮তম ওয়ানডে সেঞ্চুরিটি ছিল পুরোপুরি পরিকল্পনার ফসল। প্রথম ৭০ রানে কোনো লফটেড শটস ছিল না। এক সময় ভারতের জয় ও কোহলির সেঞ্চুরির জন্য প্রয়োজনীয় রান ছিল সমানে সমান। ২০ রানের প্রয়োজনীর পুরোটাই করেছেন ঠান্ডা মাথায়। শেষ দিকে দলের জয়ের জন্য দরকার ২ রান এবং সেঞ্চুরি পেতে কোহলির চাই ৩ রান। ছক্কা মেরে তিন অঙ্কের জাদুকরী ইনিংসটি খেলেন কোহলি। তার ইনিংস থেকে টাইগার ব্যাটারদের শিখতে বলেন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর শ্রীরাম, ‘আপনি যদি ৫০ রান করেন, তাহলে অবশ্যই ফোকাস থাকতে হবে ১০০ রানের দিকে। একটা বিষয় মনে রাখতে হবে ৫০ করতে পারলে সেঞ্চুরি করাও সম্ভব। বিরাট কোহলিকে দেখেন। ৭০-৮০ রানের আগে একটিও লফটেড শট খেলেননি। এটা যে কোনো ব্যাটারের জন্য অনেক বড় শিক্ষা। কোহলির ব্যাটিং দেখে অনেক কিছুই শেখার আছে।’

আফগানিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপের দারুণ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। ধর্মশালার ওই ম্যাচে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং- তিন বিভাগেই শতভাগ পারফরম্যান্স ছিল টাইগারদের। কিন্তু বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন সেক্টরের পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। চার বছর আগের বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্টের বিরুদ্ধে ম্যাচ থেকে খুঁজে বের করা ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার সুযোগ এসেছিল পুণেতে। সুযোগগুলোকে কাজে লাগায়নি। তার ওপর সাকিব খেলেননি। খেলেননি তাসকিন আহমেদও। দুজনেই খেলেননি ইনজুরির জন্য। নিউজিল্যান্ড ম্যাচে কুঁচকিতে টান পড়ে সাকিবের। সেই ব্যথা নিয়ে ফিটনেস টেস্ট না দিয়ে ভারত ম্যাচে খেলেননি। ২৪ অক্টোবর ওয়াংখেড় স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খেলবেন কি না, এখনো নিশ্চিত নয়।

টাইগার টিম ম্যানেজমেন্ট চার ম্যাচেই ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করছে। ভারত ম্যাচে তানজিদ ছন্দে ফিরলেও মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পাকিস্তানি লেজেন্ড ক্রিকেটার ওয়াসিম আকরাম। স্টার স্পোর্টসে আকরাম বলেছেন, ‘মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহর ব্যাটিং অর্ডার এত পেছনে কেন?’ ভারত ম্যাচের অধিনায়ক নাজমুল শান্ত দুজনের ব্যাটিং নিয়ে বলেন, ‘দুজনের ব্যাটিং অর্ডার ঠিক আছে। মুশফিক ভাই ৬ নম্বরে রান করছেন। মাহমুদুল্লাহ ভাই আগের ম্যাচে ৭ নম্বরে রান করেছেন। আজও (গতকাল) রান করেছেন।’ ৬ নম্বরে মুশফিক হাফসেঞ্চুরি করেছেন দুটি। মাহমুদুল্লাহ ৭ নম্বরে অপরাজিত ৪১ ও ৪৬ রান করেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে কি দুজনের ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আসবে?

 

সর্বশেষ খবর