শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

যেমন ওয়ার্নার তেমন মার্শ

মেজবাহ-উল-হক

যেমন ওয়ার্নার তেমন মার্শ

বেঙ্গালুরুতে অস্ট্রেলিয়ানরা পা রেখেছে বেশ অস্বস্তি নিয়ে! ভারতীয় রানবন্যার উইকেটে বিশ্বকাপের তিনটা ম্যাচ তারা খেলে ফেলেছে, অথচ ৩০০ প্লাস কোনো স্কোর নেই। পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা প্রথম ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে মাত্র ১৯৯ রানে অলআউট। দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১৭৭ রানেই শেষ!

তৃতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জয় পেলেও ২১৫ রানের বেশি তারা করতে পারেনি।

তবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গতকাল বাইশগজে রীতিমতো ঝড় তুলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার। যেমন ডেভিড ওয়ার্নার তেমন মিচেল মার্শ। ওয়ার্নার ১২৪ বলে খেললেন ১৬৩ রানের ইনিংস। আর মার্শ করেছেন ১০৮ বলে ১২১ রান। ৯ উইকেটে ৩৬৭ রান করে অস্ট্রেলিয়া।

তবে দুই ওপেনারের মহাকাব্যিক দুই ইনিংসের পরও স্লগ ওভারের ব্যাটিং নিয়ে যেন খানিকটা আক্ষেপ করতেই পারেন অসিরা। ৪০.১ ওভারে ৩০০ রান হওয়ার পর মনে হচ্ছিল দলীয় সংগ্রহটা ৪০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। কিন্তু শেষ ১০ ওভারে পাকিস্তানের বোলারদের ক্যারিশমেটিক বোলিংয়ে রানের গতি কমে যায় অস্ট্রেলিয়ার। এমন দিনেও নিজেকে আলাদা করে চিনিয়েছেন শাহিন আফ্রিদি। ৫৪ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট।

চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে বাইশগজে তাই যেন খ্যাপাটে মানসিকতা নিয়ে নামেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার এবং মিচেল মার্শ। বিনা উইকেটে প্রথম পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে ৮২ রান করে অস্ট্রেলিয়া। একপাশে ওয়ার্নার আরেক পাশে মার্শ। দুই ওপেনার মিলে রীতিমতো পাকিস্তানি বোলারদের প্রহার করার প্রতিযোগিতায় নামেন! তাদের সেঞ্চুরিও হয় একসঙ্গেই।

পাকিস্তানি বোলার নেওয়াজের করা ৩১ ওভারের চতুর্থ বল লং অনে পাঠিয়ে সিঙ্গেল নিয়েই শূন্যে লাফিয়ে সেঞ্চুরি সেলিব্রেশন করেন ওয়ার্নার। ঠিক পরের বলেই সুইপার কর্নার দিয়ে বল মাঠের বাইরে পাঠিয়ে শতক উদযাপন করেন মার্শ। এই সেঞ্চুরিটা তার জন্য বিশেষ কিছু, কারণ গতকাল ছিল মার্শের জন্মদিন।

তবে ম্যাচে মার্শের চেয়েও বেশি আগ্রাসী ছিলেন ওয়ার্নার। মার্শ সেঞ্চুরি করেন ১০০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করে, আর ওয়ার্নার ১০০ রান করেছেন মাত্র ৮৫ বলে।

শেষ পর্যন্ত ওয়ার্নার-ম্যাশের জুটিতে আসে ২৫৯ রান। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী জুটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। ২০১১ বিশ্বকাপে পাল্লেকেলেতে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার উপুল থারাঙ্গা ও তিলকারতেœ দিলশান মিলে ২৮২ রান করেছিলেন। সেটি প্রথম উইকেট জুটিতে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।

সব মিলে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানের জুটি ৩৭২ রানের। ২০১৫ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার মারলন স্যামুয়েলস ও ক্রিস গেইল মিলে এই রেকর্ড জুটি গড়েছিলেন।

ওয়ার্নারের ১৬৩ রানের ইনিংসটি ছিল দেখার মতো। ইনিংসে ১৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৯টি বিশাল ছক্কার মার। গতকাল ৯টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন মার্শও।

তবে বিশ্বকাপে নিজের সেরা ইনিংসকে ছাপিয়ে যেতে পারলেন না ওয়ার্নার। ২০১৫ বিশ্বকাপে ঘরের মাঠ পার্থে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ১৭৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। তবে বিশ্বকাপে ওয়ার্নারের এটি তৃতীয় সেরা ইনিংস।

২০১৯ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের নটিংহ্যামের বিখ্যাত ট্রেন্ট ব্রিজ মাঠে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১৬৬ রানের একটি ইনিংস আছে তার। তবে সব মিলে নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার পঞ্চম সেরা ইনিংস। ২০১৭ সালে এই পাকিস্তানের বিরুদ্ধেই অ্যাডিলেডে তার ১৭৯ রানের ইনিংস আছে।

পাকিস্তান ৩৬৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৪৫.৩ ওভারে ৩০৫ রান করে অলআউট হয়। ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান ডেভিড ওয়ার্নার।

সর্বশেষ খবর