রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

আফ্রিকান আগুনে ভস্ম ইংলিশ দুর্গ

আফ্রিকান আগুনে ভস্ম ইংলিশ দুর্গ

নবম উইকেট জুটিতে মার্ক ওড ও গাস অ্যাটকিনসন যদি ৩৩ বলে ৭০ রান যোগ না করতেন, তাহলে হারের ব্যবধানটা আকাশসমান হতো। দুই টেল অর্ডার আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাটিং করায় হারের ব্যবধান ইংল্যান্ডের ২২৯ রান। ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে এটা ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় হার। আগের বড় ব্যবধানে হার ছিল ২২১ রানে অস্ট্রেলিয়ার কাছে। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড় স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদের আগের সবচেয়ে বড় জয়টিকেও পেছনে ফেলেছে। ২০১৫ সালে স্বাগতিক ভারতকে ২১৪ রানে হারিয়েছিল প্রোটিয়ারা। ওই ম্যাচে ৪৩৮ রান করেছিল দলটি। এবার করল ৩৯৯ রান। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে জয় ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প দক্ষিণ আফ্রিকার। আগের ম্যাচে হেরেছিল নেদারল্যান্ডসের কাছে দেশটি। নেতৃত্ব বদলে খেলতে নেমেই আকাশছোঁয়া পারফরম্যান্স করেছে আফ্রিকা।

চার বছর আগের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। ইংলিশদের প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বেন স্টোকস। বিশ্বকাপ শুরু হয়ে গেলেও ইংলিশ টেস্ট অধিনায়ক স্টোকস মাঠে নামেননি। গতকাল প্রথমবারের মতো খেললেও আলো ছড়াতে পারেননি। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড় স্টেডিয়ামে স্টোকসের মতোই দ্যুতিহীন ছিল বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। প্রোটিয়া পেসারদের বিপক্ষে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্যাটাররা এতটাই অসহায় ছিলেন যে, ৯ উইকেটে ১৭০ রান করে পর্বতসমান ব্যবধানে হেরেছে। এই হারে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল দূরের পথ সংশয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে ইংল্যান্ডের। বিপরীতে নেদারল্যান্ডসের কাছে হারের ধাক্কা সামলে ফের জয়ের রাস্তায় উঠেছে আফ্রিকা। ৪ ম্যাচে ৩ জয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিনে উঠে এসেছে ‘চোকার্স’ দক্ষিণ আফ্রিকা। রেকর্ড হারে ইংল্যান্ডের পয়েন্ট ৪ ম্যাচে এক জয়ে ২।

মুম্বাইয়ে ওয়াংখেড় স্টেডিয়াম একেবারেই অপরিচিত নয় দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের ম্যাচে খেলার আগে আরও চারবার খেলেছে এই মাঠে। এক হিসাবে ওয়াংখেড়ের উইকেট হাতের তালুর মতো চেনা আফ্রিকানদের। এই পরিচিতিকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে। গতকাল টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইংলিশ বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা খেলেছেন প্রোটিয়া ব্যাটাররা। হেনরিক ক্লাসেনের সেঞ্চুরি এবং রিজা হেনড্রিকস, র‌্যাসি ফন ডার ডুসেন ও মারকো জানসেন তিন হাফসেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩৯৯ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে আফ্রিকার এটা দলগত সর্বোচ্চ স্কোর। আগের সর্বোচ্চ ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৫৪ রান। ২০০৯ সালে কেপটাউনে করেছিল স্বাগতিকরা।

এই বিশ্বকাপের পর অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া কুইন্টন ডি কক ইনিংসের প্রথম বলে চার মারেন। পরের বলে সাজঘরে ফেরেন। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রিজা ও র‌্যাসি ফন ডার ১৯.২ ওভারে ১২১ রান যোগ করেন। রিজা ৭৫ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন। রেসি ফান ডার ডুসেন করেন ৬০ রান। তবে দলকে ৩৯৯ পর্যন্ত নিয়ে যান হেনরিক ক্লাসেন ৬৭ বলে ১২ চার ও ৪ ছক্কায় ১০৯ রান করে। এ ছাড়া ৭ নম্বরে ব্যাট করে মারকো জানসেন ৭৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন মাত্র ৪২ বলে ৩ চার ও ৬ ছক্কায়। টার্গেট কাটায় কাটায় ৪০০ রান। ওভারপ্রতি করতে হবে ৮ রান। সেই টার্গেটে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা সংগ্রহ করে ২২ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭০ রান।

সর্বশেষ খবর