বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মোমেন্টামের অপেক্ষায় টাইগাররা

ভারত প্রতিবেশী দেশ। কলকাতা প্রতিবেশী শহর। ৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী শহরটিতে টাইগাররা ক্রিকেট খেলতে এসেছে প্রায় চার বছর পর। ২০১৯ সালে টাইগাররা সর্বশেষ এসেছিল ‘গোলাপি’ বলে টেস্ট খেলতে। এবার কলকাতায় এসেছে বিশ্বকাপের দুটি ম্যাচ খেলতে। ২৮ অক্টোবর আইসিসি সহযোগী দেশ নেদারল্যান্ডস এবং ৩১ অক্টোবর সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। ‘সিটি অব জয়’ বা ‘আনন্দনগরী’ থেকে জয়ের ধারায় ফিরতে মরিয়া বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচে টানা চার হারের ভারে নুয়ে পড়া সাকিবরা কি পারবেন কমলা বাহিনী কিংবা বাবর বাহিনীর বিরুদ্ধে জিততে? সাদা চোখে সেমিফাইনালে খেলার কোনো সম্ভাবনা নেই টাইগারদের। তার পরও সমীকরণের মারপ্যাঁচ ঠিকই রয়ে গেছে। এজন্য পরের চার ম্যাচ জিততেই হবে সাকিবদের। শুধু জিতলেই হবে না, অন্য দলগুলোর মধ্যেও হারজিতের কাটাকাটি হতে হবে। এ জটিল সমীকরণের লড়াইয়ে ২৮ অক্টোবর ডাচ্ বাহিনীকে হারাতে হবে টাইগারদের। সে জয়ের অপেক্ষায় ক্রিকেটাররা। অপেক্ষায় একটি মোমেন্টামের। দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানো মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘কাগজে-কলমে আমাদের সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনা আছে কি না তা নিয়ে এখন ভাবছি না। শুধু আগামী ম্যাচটি নিয়েই ভাবছি।’ টাইগারদের আগামী ম্যাচের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে চমক দেখানো নেদারল্যান্ডস।’

১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফিতে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে জয়টি বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আজকের পথে টেনে তুলেছে। দুই দেশ পূর্বপরিচিত। তার পরও দুই দেশ গত এক যুগে পরস্পরের বিরুদ্ধে একটি ওয়ানডেও খেলেনি। দুই দেশ মাত্র দুটি ওয়ানডে খেলেছে পরস্পরের বিরুদ্ধে। হারজিত সমানে সমান। ২০১০ সালে প্রথম মুখোমুখিতে নেদারল্যান্ডস জিতেছিল। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোর ওই ম্যাচে ডাচ্ বাহিনী জিতেছিল ৬ উইকেটে। ৩০ ওভারের কার্টেল ম্যাচটি ৭ উইকেটে ১৯৯ রান করেও হেরেছিল টাইগাররা। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে চট্টগ্রামে জিতেছিল বাংলাদেশ। কমলা বাহিনীকে ১৬০ রানে বেঁধে ফেলে ৬ উইকেটে জিতেছিল টাইগাররা। এবার নিয়ে দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপে মুখোমুখি হবে। এ ম্যাচ জয়ের জন্য ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং তিন বিভাগেই দুরন্ত ক্রিকেট খেলতে হবে সাকিব, মুস্তাফিজদের। যেমন প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে প্রতিকূল পরিবেশে থেকেও দারুণ একটি সেঞ্চুরি করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।

আফগানিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপে উড়ন্ত সূচনা করে বাংলাদেশ। এরপর হঠাৎ ছন্দপতন। সুর, তাল, লয় হারিয়ে ফেলে পুরো দল। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের কাছে ১৩৭ রানে, নিউজিল্যান্ডের কাছে ৮ উইকেটে, ভারতের কাছে ৭ উইকেটে ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১৪৯ রানে হেরেছে সাকিব বাহিনী। পাঁচ ম্যাচে চার হার। ২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের সবার নিচে অবস্থান টাইগারদের। টানা পাঁচ জয়ে সবার ওপরে ভারত। পাঁচ ম্যাচে চার জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়েও রান রেটে ২-এ দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ৩-এ অবস্থান নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের সেমিফাইনাল অনেকটাই নিশ্চিত। বাকি এক দলের লড়াইয়ে রয়েছে বাকি সাত দল। তবে সুবিধাজনক অবস্থানে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। দুটি করে জয় অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও রয়েছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের। একটি করে জয় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের।

ভারত ম্যাচে হারের পরও ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান বলেছিলেন, সেমিফাইনাল খেলা অসম্ভব নয়। টানা ছয় ম্যাচ জেতা সম্ভব। কাটার মাস্টার বাস্তবতার নিরিখে বলেছিলেন কি না, তিনিই ভালো বলতে পারবেন। মেহেদি হাসান মিরাজ বলেছিলেন, ‘একটি জয় সবকিছু পাল্টে দিতে পারে। অপেক্ষা শুধু একটি মোমেন্টামের।’ একই কথা উচ্চারিত হয়েছে টাইগার অধিনায়ক সাকিবের কণ্ঠেও, ‘একটি জয় পাল্টে দেবে সবকিছু।’ এই একটি জয় আসবে কোন ম্যাচে? নেদারল্যান্ডস ম্যাচ দিয়ে কি জয়ের পথে ফিরবে বাংলাদেশ?

 

 

 

সর্বশেষ খবর