সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

রূপকথার সোনার কাঠি খুঁজছেন সাকিবরা

টানা পাঁচ হার। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে পারফরম্যান্স করতে ভুলে গেছেন ক্রিকেটাররা। ঘুমিয়ে পড়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ক্রিকেটারদের ঘুম ভাঙাতে ক্রিকেট বোর্ড খুঁজছে রূপকথার ‘সোনার কাঠি’। যার ছোঁয়ায় ঘুম ভেঙে জেগে উঠবেন সাকিব, লিটন, নাজমুল  শান্ত, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ, তাসকিনরা। বহু আরাধ্য সোনার কাঠির খোঁজে বেরিয়েছে বিসিবি। সোনার কাঠির ছোঁয়ায় পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে যেন জাদুকরী পারফরম্যান্স করেন ক্রিকেটাররা। মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ক্রিকেটারদের চাঙ্গা করতে টিম হোটেলে সাকিবসহ সবার সঙ্গে বসেছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনসহ পরিচালকরা। কেন এ ব্যর্থতা- ক্রিকেটারদের কাছে জানতে চেয়েছেন বিসিবি সভাপতি। আবার মুষড়ে পড়তেও নিষেধ করেছেন। বিপর্যয়ের ভয়ংকর খাদ থেকে বেরোনোর সমাধানের পথ খুঁজে পেতে ক্রিকেটারদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, ‘দুর্ভাগ্যজনক পারফরম্যান্স বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। বিশ্বকাপ খেলতে আসা অন্য কোনো দেশের বেলায় এমন পারফরম্যান্স দেখিনি। এটা অপ্রত্যাশিত। কোচিং স্টাফসহ সবার সঙ্গে বসেছিলাম। তাদের বলেছি, তোমাদের যোগ্যতা নিয়ে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই। সামনের ম্যাচগুলো তোমরা ভালো খেলবে এ বিশ্বাস তোমাদের প্রতি আমাদের আছে।’

ক্রিকেটাররা উঠেছেন তাজবেঙ্গল হোটেলে। আলিপুর চিড়িয়াখানার ঠিক উল্টো পাশের অবস্থিত হোটেল কর্তৃপক্ষকে টাইগার টিম ম্যানেজমেন্ট স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, হোটেল কমপাউন্ডে মিডিয়াকে যেন প্রবেশ করতে দেওয়া না হয়। তারপরও মিডিয়াকর্মীরা চেষ্টা করেছেন নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ৮৭ রানের হারের পর মানসিকভাবে কেমন আছেন তা জানার। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত কোনো ক্রিকেটারই হোটেল থেকে বেরোননি। মেহেদি হাসান মিরাজ বেরোতে গিয়েও মিডিয়াকর্মীদের দেখে ফিরে আসেন। হোটেলের সুইমিংপুলে সাঁতার কেঁটেছেন মুশফিক, তৌহিদ হৃদয়, নাসুম আহমেদ, তানজিদ তামিম, শেখ মেহেদিরা। জিম করেছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, তাসকিন আহমেদ। পুরোপুরি বিশ্রামে কাটিয়েছেন সাকিব, লিটন, মুস্তাফিজ, শরিফুলরা। ৩১ অক্টোবর পাকিস্তান ম্যাচ। ম্যাচটি খেলতে বাবর আজমের পাকিস্তান এখন কলকাতায়। গতকাল অনুশীলন করেছে। আজ দুপুরে অনুশীলন করবেন সাকিবরা।

আফগানিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপে উড়ন্ত সূচনা করেছিল সাকিব বাহিনী। মনে হচ্ছিল, যে স্বপ্ন বুকে ধারণ করে বিশ্বকাপে এসেছে টাইগাররা, এবার সেটা পূরণ হবে। কিন্তু বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড ম্যাচ থেকে সাকিবরা মুখোমুখি হচ্ছেন রূঢ় বাস্তবতার। ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা হয়ে সর্বশেষ নেদারল্যান্ডস ম্যাচ। টানা পাঁচ ম্যাচে সাকিবরা দেখেছেন মুদ্রার উল্টো পিঠ। বিশেষ করে ‘নন্দনকানন’ ইডেনে ডাচ বাহিনীকে ২২৯ রানে বেঁধে ফেলেও ব্যাটারদের দায়িত্বহীনতায় অলআউট হয় ১৪২ রানে। হারের পর বাংলাদেশ থেকে খেলা দেখতে আসা প্রায় হাজার বিশেক দর্শক স্টেডিয়ামেই অশ্রাব্য ভাষায় কটূক্তি করেন। দর্শকদের কটূক্তিকে দুঃখজনক বলেন সাকিব, ‘এটা অবশ্যই হতাশার। তবে এটাও ঠিক তারা তাদের কাজ করবেই।’ বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘ভালো সময় মানুষ তাদের নিয়ে নাচানাচি করবে। খারাপ সময়ে গালি দেবে, এটা তাদের অধিকার।’ টানা হারে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ক্রিকেটারদের পাশে থাকার কথা বলেন বিসিবি সভাপতি, ‘কেউ পাশে না থাকলেও আমরা আছি। বাকি তিন ম্যাচে আহামরি কিছু করার নিশ্চয়তা দিচ্ছি না। হার-জিত বড় কথা নয়। দলের ভালো ক্রিকেট খেলার সামর্থ্য আছে। শুধু পারফরম নেই।’

হারতে হারতে একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে ক্রিকেটারদের মনোবল। টিম হোটেল কিংবা রাস্তায় পরিচিত কারও দেখা পেলেই মুখ লুকাচ্ছেন। ডাচদের কাছ হারের পর টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ।’ ভুল বলেননি টাইগার অধিনায়ক। টানা পাঁচ হারে ক্রিকেটাররা এখন মানসিকভাবে বিধ্বস্ত বলেন বিসিবি সভাপতি, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে ওরা মানসিকভাবে দুর্বল। এখানটায় খুব একটা কিছু বলার বা করার নেই। যেহেতু বিশ্বকাপ, সেখানে চাইলেও আমরা কোনো পরিবর্তন আনতে পারব না। সামনে তিনটা ম্যাচে ওদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে।’ াইগার অধিনায়ক দলে কোন্দল থাকতে পালে বলে ইঙ্গিত দিলেও বিসিবি সভাপতি স্বীকার করেননি, ‘ক্রিকেটাররা বলেছে ওরা একতাবদ্ধ। কোনো সমস্যা নেই।’

 

সর্বশেষ খবর