বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়েই যত ভাবনা

কলকাতা মিশন শেষ সাকিবদের। হারের বৃত্ত থেকে বেরোতে পারেননি। নেদারল্যান্ডসের পর পাকিস্তানের কাছেও হেরেছেন। সব মিলিয়ে কলকাতা মিশন ছিল পুরোপুরি ব্যর্থ। ধর্মশালা, চেন্নাই, পুণে, মুম্বাই ও কলকাতা হয়ে টানা ছয় ম্যাচ হেরেছে সাকিব বাহিনী। বিশ্বকাপের ক্রিকেট ইতিহাসে ২০০৩ সালের পর আর কোনো আসরে টানা ছয় ম্যাচ হারের রেকর্ড নেই বাংলাদেশের। এখনো দুটি ম্যাচ বাকি। ৬ নভেম্বর দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কা এবং ১১ নভেম্বর পুণে স্টেডিয়ামে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচ। কলকাতা মিশন শেষ করে সাকিব বাহিনী হাজির ভারতের রাজধানী দিল্লিতে। হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী শহরটিতে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কি না- বিশ্বকাপে এ মুুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। তবে টাইগারদের অন্যতম সেরা পারফরমার মেহেদি হাসান মিরাজ দলের এত বাজে পারফরম্যান্সের কারণ হিসেবে ‘দুর্ভাগ্য’কে দোষারোপ করেছেন, ‘এ রকম কখনোই হয়নি। আমাদের লাক ফেভার করছে না। সবাই চেষ্টা করছে, কিন্তু লাক না থাকলে সাকসেস হবেন না। দিন শেষে আল্লাহর রহমত দরকার, ভাগ্য দরকার। বিশ্বাস করি এটা বেশি দিন যাবে না। আমরা কামব্যাক করব।’

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে রং হারিয়েছেন সাকিব, লিটনরা। বর্ণহীন হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। বিপরীতে দিন দিন উজ্জ্বল হচ্ছে বিশ্বকাপ ক্রিকেট। জমে উঠছে সেমিফাইনালের লড়াই। জমে উঠেছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে টিকে থাকার লড়াইও। ক্রিকেট মহাযজ্ঞের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে স্বাগতিক ভারত। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলির ভারত টানা ছয় ম্যাচ জিতে সবার ওপরে। ছয় ম্যাচে পাঁচ জয় নিয়ে এর পরই দক্ষিণ আফ্রিকা। নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার পয়েন্ট ছয় ম্যাচে চার জয়ে ৮ করে। তিনটি করে জয় নিয়ে পেছন পেছন ছুটছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিত। বাকি দুই দলের জন্য লড়াইয়ে রয়েছে নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। সাকিব আল হাসানের বাংলাদেশ লড়াই করছে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য। বিশ্বকাপের শীর্ষ আট দল খেলবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। পাকিস্তান স্বাগতিক হিসেবে সরাসরি খেলবে। বাকি সাত দল নির্ধারিত হবে বিশ্বকাপে। যদি কোনো কারণে পরের দুটি ম্যাচ জিততে না পারে, তাহলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দর্শক হয়েই থাকবে বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে না পারাটা হবে দুর্ভাগ্যজনক। মিরাজ বলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে না পারলে সবারই খারাপ লাগবে। আমাদেরও খারাপ লাগবে। আপনাদেরও খারাপ লাগবে। আপনারা তো কাভার করতে পারবেন না। দিনশেষে ভাগ্যও আমাদের পক্ষে কাজ করছে না। আমরা চেষ্টা করছি। সবাই ভালো খেলার চেষ্টা করছে। কিন্তু লাক ফেভার করছে না। ব্যাটাররা যেখানেই শটস খেলছে, সেখানেই হাতে চলে যাচ্ছে। ক্যাচ হচ্ছে, ফিল্ডার ধরছে। বোলিংয়েও এমন হচ্ছে। এরকম আগে কখনো হয়নি।’

আফগানিস্তানকে হারিয়ে স্বপ্নের সূচনা ছিল টাইগারদের। পরের ছয় মাচে সুর, তাল, ছন্দ হারিয়ে গভীর খাদে পড়ে গেছে সাকিব বাহিনী। সেখান থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে পাচ্ছে না। দুই সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জয়ের মুখ দেখবে কি না সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। দল পারছে না বলেই প্রতি ম্যাচে নতুন ব্যাটিং অর্ডার খেলাচ্ছে। ওপেনিংয়ে পরিবর্তন নেই। অবশ্য ৩, ৪, ৫, ৬ নম্বরে পরিবর্তন হচ্ছে প্রতি ম্যাচেই। কলকাতায় সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান ম্যাচে শূন্য রানে ভেঙে যায় ওপেনিং জুটি। এরপর ১০ ওভারের পাওয়ার প্লেতে ৩৭ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে সাকিব বাহিনী। সেখান থেকে দলকে টেনে তুলে মাহমুদল্লাহ রিয়াদ ৫৬ রানের প্রত্যয়ী ইনিংস খেলেন। প্রতি ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তনের ব্যাখ্যায় মিরাজ বলেন, ‘আমাদের দ্রুত উইকেট চলে গিয়েছিল। লিটন দা ও রিয়াদ ভাই ভালো শুরু করেছিলেন। রিয়াদ ভাইকে ওপরে ব্যাট করানো হয়েছে, কারণ তিনি খুব ভালো খেলছেন, ভালো শেপে আছেন। আত্মবিশ্বাসও কাজ করছে। এ বিবেচনায়ই তাদের ওপরে খেলানো হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর