সোমবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ব্যর্থতার দায়ভার নিলেন হাতুরাসিংহে

ব্যর্থতার দায়ভার নিলেন হাতুরাসিংহে

চন্ডিকা হাতুরাসিংহে প্রথম কোচ, যিনি দলের ব্যর্থতার দায়ভার স্বীকার করেছেন। টাইগারদের দায়িত্ব নেওয়া কোনো কোচ এর আগে স্বীকার করেননি দলের ব্যর্থতা। সবাই দায়ভার চাপিয়েছেন ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের ওপর কিংবা ইঙ্গিত করেছেন অপর্যাপ্ত অনুশীলনের দিকে। হাতুরাসিংহে গতকাল যখন মিডিয়ার মুখোমুখি হন, তখন তার চেহারায় ফুটেছিল অসহায়ত্বের ছাপ। তিনি স্বীকার করেছেন দলের ব্যর্থতা। একই সঙ্গে কূটনীতির চালে জানিয়েছেন, সাত মাস সময় বিশ্বকাপে ভালো করার জন্য পর্যাপ্ত নয়। ব্যর্থতার কথা স্বীকার না করে কোনো উপায় নেই টাইগার কোচের। আফগানিস্তান ম্যাচ জয়ের পর টানা ৬ ম্যাচে হার। এমন পারফরম্যান্সের পর স্বাভাবিকভাবে যে কোনো কোচের দায়িত্ব ছাড়ার কথা। অথচ ২০২৫ সাল পর্যন্ত চুক্তিভুক্ত হাতুরাসিংহে সে পথে হাঁটেননি। টেকনিক্যালি দায়ভার নিজ কাঁধে নিয়ে নেন, ‘কোচ হিসেবে আমি সব দায়ভার নিচ্ছি। আমরা সমর্থকদের হতাশ করেছি, নিজেদেরও হতাশ করেছি। প্রথম ম্যাচ ও আজকের মধ্যে কোনো কিছু বদলে যায়নি। পরিবর্তনের ব্যাপারটা শুধু আমাদের কানেই আসছে। অনেক বেশি প্রত্যাশা থাকায় আমরা হতাশ হয়েছি। আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি। ভুল খুঁজে বের করতে হবে। আমি কোচ থাকব কি না- এটা আমার হাতে নেই। বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে।’

হাতুরাসিংহে প্রথমবার দায়িত্ব নেন ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। তার কোচিংয়ে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। এরপর হঠাৎ দায়িত্ব ছেড়ে দেন ২০১৭ সালে। দ্বিতীয়বার দায়িত্ব নেন চলতি বছরের ১ মার্চ। শ্রীলঙ্কা ম্যাচের আগে পর্যন্ত হাতুরার কোচিংয়ে বাংলাদেশ ২৭ ম্যাচ খেলে জিতেছে ৯টি। হেরেছে ১৫টি। ৬টি আবার টানা হার। ৩ ম্যাচ ভেসেছে বৃষ্টিতে। কোচ হিসেবে এমন পারফরম্যান্স যার, তার বিষয়ে ক্রিকেট বোর্ড ভাবতেই পারে!  

শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ইদানীং ভালো খেলছে বাংলাদেশ। যদিও এশিয়া কাপে দুবার ৫০ ওভার ব্যাটিং করতে পারেনি। দানুসকা বাহিনীর বিরুদ্ধে আজ খেলবে সাকিব বাহিনী। জিতলে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সম্ভাবনা বেঁচে থাকবে। এমন সমীকরণের বিচারে দ্বীপরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ম্যাচটিকে ‘মহারণ’ বলাই যায়। বিষয়টি জানেন টাইগার কোচ, ‘আমাদের নিজের সেরাটা খেলতে হবে। পিচ ও মাঠ দারুণ। যে মাঠগুলোতে খেলছি এর মধ্যে এটাই হয়ত সেরা। সাম্প্রতিক সময়ে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ বেশকিছু জমজমাট ম্যাচ খেলেছে। দুই দলের অবস্থা প্রায় একই। দুই দল সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে গেছে। আমাদের মনোযোগ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। এ ম্যাচের ওপর নির্ভর করছে কারা ওপরে থাকবে।’ দুই দলের পরিসংখ্যানে এগিয়ে শ্রীলঙ্কা। দ্বীপরাষ্ট্র ৫৩ ম্যাচে জিতেছে ৪২টি। বাংলাদেশ ৯টি। বিশ্বকাপেও কোনো ম্যাচ জেতেনি টাইগাররা। চার মুখোমুখিতে তিনটিতেই হেরেছে। একটি ভেসে গেছে বৃষ্টিতে।

চলতি মার্চে দায়িত্ব নেন হাতুরাসিংহে। সাত মাস সময় পেয়েছেন দল গোছাতে। এ সময়ে তার কোচিংয়ে বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে আয়ারল্যান্ড, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া এশিয়া কাপও খেলেছে। বিশ্বকাপের জন্য সাত মাস পর্যাপ্ত নয় বলেন টাইগার কোচ, ‘আমি সাত মাস সময় পেয়েছি। এ সময়ে ছেলেরা অনেক চেষ্টা করছে। সাত মাসে তো তেমন কিছু বদলে ফেলা যায় না। দল যেখানে ছিল ওখান থেকে দলকে ভালোভাবে প্রস্তুত করার চেষ্টা করেছি। সাত মাসে আমার বেশি কিছু করার ছিল না। দলটা যেখানে ছিল, সেখান থেকে প্রস্তুত  করেছি। আসলে আমার কাজ শুরু হবে এরপর। বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত হওয়া একরকম, আর দলকে সামনে নিয়ে যাওয়া আরেক চ্যালেঞ্জ।’

দূষণের শহর দিল্লি। জ্যামের শহর দিল্লি। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম আবার রানোৎসবের শহর। এখানে শ্রীলঙ্কা ম্যাচে ৫ উইকেটে ৪২৮ রান করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এমন ব্যাটিং উইকেটে বাংলাদেশ কি পারবে রান উৎসবে মেতে উঠতে? যদিও টাইগার ব্যাটাররা ভালো ছন্দে নেই। ব্যাটারদের ব্যর্থতার জন্য হাতুরাসিংহে ব্যাটিং অর্ডারকে দুষতে রাজি নন, ‘এটা ব্যাটিং অর্ডারের ব্যাপার নয়। ব্যাপার হলো আপনি কখন ব্যাট করতে আসছেন। বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো কোন ওভারে, কোন পরিস্থিতিতে বা ইনিংসের কোন সময়ে আসছেন। টপ ফোর এক ম্যাচ ছাড়া আর পারফর্ম করতে পারেনি।’

সর্বশেষ খবর