রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ব্যাটিংয়ের হাসি মিলিয়ে গেল বোলিং ব্যর্থতায়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ব্যাটিংয়ের হাসি মিলিয়ে গেল বোলিং ব্যর্থতায়

মুস্তাফিজুর রহমানকে বাউন্ডারি মেরে ‘জয়সূচক’ রান নেন স্টিভ স্মিথ। ওই বাউন্ডারিতেই বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের। পুণের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ম্যাচটি ছিল টাইগারদের বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচ। এবারের টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো তিনশোর্ধ্ব ইনিংস খেলে টাইগাররা, হেরেছেও সবচেয়ে বড় ব্যবধানে। ৮ উইকেটে ৩০৬ রান করে টাইগাররা ৮ উইকেটে হেরেছে মিচেল মার্শের বিধ্বংসী ১৭৭ অপরাজিত ইনিংসে। ২০০৩ সালের পর এবার সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ খেলল টাইগাররা। ২০০৭ সালে জিতেছিল তিন ম্যাচ। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে তিন জয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছিল এবং ২০১৯ সালেও জয় ছিল তিনটি। এবার জিতেছে সাকল্যে দুটি, আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। ৩২ বল আগে ৮ উইকেটে হারের পর মিডিয়ার মুখোমুখিতে টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত মোমেন্টাম হারানোকে দুষেছেন, ‘দুটো রানআউটে আমরা ম্যাচের মোমেন্টাম হারিয়েছি। অথচ আমাদের শুরুটা দারুণ হয়েছিল। যদি আমরা ৩৪০-৩৫০ রান করতাম, তাহলে ম্যাচের চিত্র অন্যরকম হতো। স্পিনাররা ম্যাচের মাঝামাঝি ভালো বোলিং করেননি। অবশ্য পেসাররা ভালো করেছেন। সত্যি বলতে বিশ্বকাপে আমরা দল হিসেবে ভালো খেলতে পারিনি। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ভাই ভালো ব্যাটিং করেছেন। সাকিব ভাই বেশ কয়েকটি ম্যাচে ভালো বোলিং করেছেন। বিশ্বকাপের ৯ ম্যাচ পর্যালোচনা করে দেখব দলের কোথায় কোথায় উন্নতি করতে হবে।’

সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে আসে বাংলাদেশ। ধর্মশালায় আফগানিস্তানকে হারিয়ে দারুণ সূচনা করে ক্রিকেট মহাযজ্ঞে। পরের ম্যাচগুলোতে সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি। টানা ছয় ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপে সেমির স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় টাইগারদের। দিল্লিতে নিজেদের অষ্টম ম্যাচে টানা ছয় হারের ধাক্কা সামলে জয় পায় বাংলাদেশ। দ্বীপরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জয়ে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার স্বপ্ন টিকে থাকে টাইগারদের। গতকাল পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জিতলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিশ্চিত হতো নাজমুলদের। এখন অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে ভারত-নেদারল্যান্ডস ম্যাচের ফলাফলের দিকে। বেঙ্গালুরুতে যদি জিতে যায় নেদারল্যান্ডস, তাহলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষ হয়ে যাবে টাইগারদের। তখন ইংল্যান্ডের সঙ্গে ডাচরা খেলবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ভারত জিতে গেলে রান রেটে নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।

বিশ্বকাপের চার সেমিফাইনালিস্ট- ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। ১৫ নভেম্বর মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড় স্টেডিয়ামে প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত ও নিউজিল্যান্ড এবং ১৬ নভেম্বর কলকাতার ‘নন্দনকানন’ স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় সেমিফাইনাল খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া। গতকাল টস জিতে অসি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশকে। তৌহিদ হৃদয়ের ৭৯ বলে ৭৪ রানের ইনিংসে টাইগারদের সংগ্রহ ছিল ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩০৬। দুই ওপেনার তানজিদ তামিম ও লিটন দাস ১১.২ ওভারে ৭৬ রানে ভিত দেন। দুজনেই সাজঘরে ফেরেন ৩৬ রান করে। অধিনায়ক নাজমুল শান্ত ৪৫ রান করেন ৫৭ বলে। বিশ্বকাপে দারুণ খেলা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৩২ রান করেন ২৮ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায়।

টার্গেট ৩০৭ রান। দুই অসি ওপেনার ট্রাভিস হিড ও ডেভিড ওয়ার্নার ১২ রানের ভিত দেন। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ওয়ার্নার ও মার্শ ১৯.২ ওভারে ১২০ রান যোগ করেন। ওয়ার্নার ৫৩ রান করেন ৬১ বলে। ম্যাচ সেরা মার্শ ১৭৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ১৩২ বলে ১৭ চার ও ৯ ছক্কায়। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ২২.৩ ওভারে ১৭৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন মার্শ ও স্মিথ। স্মিথ অপরাজিত থাকেন ৬৩ রানে। ৬৪ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৪টি চার ও একটি ছক্কা।

সর্বশেষ খবর