সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ক্রিকেটের নগরী আহমেদাবাদ

ক্রীড়া প্রতিবেদক , আহমেদাবাদ থেকে

ক্রিকেটের নগরী আহমেদাবাদ

সাবরমতী নদী লাগোয়া বিরাট আকৃতির নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম। আসন সংখ্যা ১ লাখ ৩২ হাজার। সোয়া লাখ দর্শক গতকাল খেলা দেখেছে বিশ্বের সবচেয়ে স্টেডিয়ামটিতে। স্টেডিয়ামে ঢোকার গেট খুলেছে বেলা ১১টায়। অথচ ম্যাচ শুরুর পাঁচ ঘণ্টা আগে থেকেই ভারতীয় সমর্থকরা হাজির হতে শুরু করেন মোদি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। প্রিয় দলকে সমর্থন জোগাতে, প্রিয় ক্রিকেটারদের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অহর্নিশ সমর্থন জোগাতে সবাই পড়ে এসেছেন নীল রঙের ভারতীয় জার্সি। কোনো জার্সির পেছনে লেখা বিরাট, কোনোটার পেছনে লেখা রোহিত, সামি, গিল। প্রায় সবার মাথায় তেরঙা ভারতীয় পাগড়ি, হাতে তেরঙা পতাকা। জনতার স্রোত দেখে মনে হচ্ছিল নীলের জোয়ারে ভেসে গেছে ‘ক্রিকেট নগরী’ আহমেদাবাদ। ১৯৭৫-২০২৩ বিশ্বকাপের ১৩ আসরে এই প্রথম এত দর্শকের উপস্থিতিতে ফাইনাল খেলা হয়েছে। ভারত-অস্ট্রেলিয়া ফাইনাল দিয়ে বিশ্বকাপ ক্রিকেট ইতিহাসে চিরস্থায়ী হয়ে গেছে মোদি স্টেডিয়াম। এ মাঠে এর আগে আইপিএল ফাইনালে ১ লাখের সামান্য ওপরে লোকজন খেলা দেখেছিল। 

১৯৮৩ সালে প্রথম বিশ্বকাপ জয়। ২৮ বছর পর ভারত দ্বিতীয়বার বিশ্বসেরা হয় ২০১১ সালে। এবার তৃতীয়বারের মতো বিশ্বসেরা হওয়ার হাতছানি! বিশ্বকাপ জয়ের সুবর্ণ সুযোগ। এমন সুযোগ মুঠোবন্দি করতে গতকাল পর্যন্ত গোটা ভারত খইয়ের মতো টগবগ করে ফুঁটেছে। ইতিহাসের সাক্ষী হতে গতকালের ফাইনালে উপস্থিত হয়েছিলেন সারা ভারত থেকে আসা ক্রিকেটপ্রেমীরা। অনেকে অনলাইনে টিকিট পাননি। ম্যাচের আগের রাতে টিকিট কিনেছেন স্টেডিয়ামের আশপাশ থেকে। ২ হাজার রুপি সাধারণ গ্যালারির টিকিট ২০ থেকে ৩০ হাজার রুপিতে কিনেছেন।

ভারতের কাছে ফাইনালটি শুধু শিরোপা উৎসবের ছিল না। ছিল প্রতিশোধেরও। ২০০৩ সালে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছিল ভারত। এরপর ২০ বছর ধরে প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছে ভারত। কিন্তু লাভ হলো না। টানা ১০ ম্যাচ জিতেও ফাইনালে হারতে হলো ভারতকে। উৎসবের নগরীতে নেমে এলো হতাশা। শুধু আহমেদাবাদ নয়, পুরো ভারত শোকে বন্দি। গতকালের ফাইনাল ঘিরে উৎসবের নগরী, ক্রিকেট নগরীতে পরিণত হয়েছিল  আহমেদাবাদ। ফাইনালটির জন্য শুধু টিকিটের দাম চড়া ছিল না। হোটেল ভাড়াও বেড়েছে ৬-৭ গুণ। ৪ হাজার রুপির হোটেল ভাড়া ছিল ২৫-৩০ হাজার। শহরতলীতে ভাড়া ছিল ১০-১২ হাজার রুপি। সেখান থেকে স্টেডিয়ামে আসতে সময় লেগেছে ঘণ্টারও ওপর। বিমান ভাড়াও ছিল ২-৩ গুণ। ৮ হাজার রুপির ভাড়া ১৯ হাজার রুপি। আসা-যাওয়া ছিল ৩৫ হাজার রুপি।

ফাইনাল দেখতে গতকাল উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আরও উপস্থিত ছিলেন কপিল দেব, মহেন্দ্র সিং ধোনি, শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলিরা। ম্যাচ শুরুর আগে ভারতীয় বিমান বাহিনীর ৯টি বিমান রঙের ফোয়ারা ছুটিয়েছে।

সর্বশেষ খবর