বুধবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সেই পুরনো রোগে আক্রান্ত টাইগাররা!

সেট হয়েও উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন ব্যাটাররা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সেই পুরনো রোগে আক্রান্ত টাইগাররা!

ম্যাচ শুরুর আগের দিন উইকেট নিয়ে অনেক কথা বলেছিলেন টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। বাদ যাননি কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহেও। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এর আগে একটি মাত্র টেস্ট হয়েছিল। সেবার স্পিনারদের দাপট ছিল অবিশ্বাস্য। নিউজিল্যান্ড টেস্টেও  এবার উইকেট একই আচরণ করবে, এমনটাই ধারণা ক্রিকেটপ্রেমীদের। অবশ্য টাইগার অধিনায়ক ও কোচ একটু রহস্য রেখে দিয়েছিলেন কথাবার্তায়। অধিনায়ক নাজমুল শান্ত স্পষ্ট করেছিলেন, ম্যাচের দিনই উইকেট পরিষ্কার ধারণা দেবে। গতকাল টেস্টের প্রথম দিন উইকেটের আচরণ স্পষ্ট হয়েছে। বাংলাদেশের ৯ উইকেটের সাতটিই নিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের তিন স্পিনার। কিউই বোলিং দেখে মনে হবে, উইকেট পুরোপুরি স্পিন সহায়ক। স্কোর বোর্ডে বাংলাদেশের ৯ উইকেটে ৩১০ রান দেখেও ধারণা করা যায়, ব্যাটাররা উইকেটে সহায়তা পেয়েছেন। প্রথম দিন দুই দলের ব্যাটিং ও বোলিং পারফরম্যান্সে উইকেটকে স্পোর্টিং বলাই যায়! সেই উইকেটে টাইগার ব্যাটাররা দারুণ শুরু করেও ব্যর্থ হয়েছেন ইনিংসগুলোকে লম্বা করতে। বিশেষ করে ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। ডানহাতি ওপেনারের ৮৬ রানের ইনিংসটি যেভাবে শেষ হয়েছে, তাতে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি না করাটা রীতিমতো অন্যায়। শুধু জয় কেন, ১৩তম টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল শান্ত, সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, নুরুল হাসান সোহান, শাহাদাত হোসেন দীপু, মেহেদি হাসান মিরাজরা সেট হয়ে যেভাবে উইকেট বিলিয়েছেন, সেটা মেনে নেওয়াটা কষ্টকর।

আজ দ্বিতীয় দিন হাতে এক উইকেট নিয়ে খেলতে নামবে নাজমুল বাহিনী। ৮ রানে অপরাজিত তাইজুল ইসলাম ও ১৩ রানে অপরাজিত শরিফুল ইসলাম কতদূর যাবে, সময় বলবে। তবে টেস্টকে চতুর্থ কিংবা পঞ্চম দিনে নিয়ে স্কোর বোর্ডে আরও ৪০ রান যোগ করা জরুরি টাইগারদের। আজ যদি দুই অঙ্কের স্কোর করতে পারেন তাইজুল, তাহলে ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের পর বাংলাদেশের ইনিংসের সব ক্রিকেটারই দুই অঙ্কের রান করবেন।  

১৩তম টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হয়েছে নাজমুল শান্তর। অভিষেক টসও জিতেছেন নাজমুল। ১০২ টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হয়েছে শাহাদাত হোসেন দীপুর। দীপুর অভিষেকের ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে একমাত্র পেসার হিসেবে খেলছেন বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল। একাদশে তিন স্পিনার- মেহেদি মিরাজ, তাইজুল ও নাইম ইসলাম এবং ছয় স্পেশালিস্ট ব্যাটার। সিলেটের হাওয়ায় হালকা শীত থাকলেও আকাশ ছিল রৌদ্রকরোজ্জ্বল। এমন আবহাওয়ায় টস জিতে ব্যাটিং নেন নাজমুল। দুই ওপেনার জয় ও জাকির হাসান ৩৯ রানের ভিত দেন। মনে হয়েছিল, চাইলেই ব্যাটাররা লম্বা ইনিংস খেলতে পারবেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন। আজাজ প্যাটেলের আর্ম বলে ব্যাকফুটে খেলে বোল্ড হন জাকির ব্যক্তিগত ১২ রানে। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে জুটি বেঁধে জয় ও নাজমুল যোগ করেন ৫৩ রান ১১.৫ ওভারে। নাজমুল তার অধিনায়কত্বের অভিষেককে রাঙাতে পারতেন লম্বা ইনিংস খেলে। কিন্তু ওয়ানডে স্টাইলে খেলে ৩৫ বলে ২ চার ৩ ছক্কায় ৩৭ রান করে আউট হন গ্লেন ফিলিপসের বলে। এটা তার ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট উইকেট। বাংলাদেশ লাঞ্চ বিরতিতে যায় ২৭ ওভারে ১০৫ রান তুলে। লাঞ্চের পর জয় ও সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল জুটিতে বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখাতে থাকেন। দুজনে তৃতীয় জুটিতে ৮৮ রান যোগ করে বিচ্ছিন্ন হন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩ সেঞ্চুরি ও ২ হাফসেঞ্চুরি হাঁকানো মুমিনুল আউট হন ব্যক্তিগত ৩৭ রানে। ফিলিপসের একটু টানানো বলে কাট খেলে ব্লান্ডের দারুণ ক্যাচ হন সাবেক অধিনায়ক। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিক ১২ রানে আউট হন মিড অফে।

সর্বশেষ খবর