বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ব্রাডম্যান কোহলির পাশে উইলিয়ামসন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ব্রাডম্যান কোহলির পাশে উইলিয়ামসন

গতকাল হয়তো ব্যাট করত বাংলাদেশ! হয়তো বলার কারণ, দু-দুটি ক্যাচ মিস। তা আবার ‘সেঞ্চুরিম্যান’ কেন উইলিয়ামসনের। নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক উইলিয়ামসন গতকাল তিন অঙ্কের জাদুকরী ইনিংস খেলেন সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। অথচ ২৯তম টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকানো উইলিয়ামসন থেমে যেতে পারতেন ৬৩ ও ৭০ রানে। যদি আউট হতেন কিউই সাবেক অধিনায়ক, তাহলে দ্বিতীয় দিন শেষে নিউজিল্যান্ডের স্কোর ৮ উইকেটে ২৬৬ রান না হয়ে আরও কম হতো! বাংলাদেশ বড় ব্যবধানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামত। দুটি ক্যাচ মিস করেও এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। কতটা এগিয়ে যাবে আজ তৃতীয় দিন প্রথম সেশনেই স্পষ্ট হবে। গতকাল উইলিয়ামসনের রেকর্ড গড়া দিনে উজ্জ্বল ছিলেন তাইজুল ইসলাম। শেষ বিকালে তার স্পিন ভেলকিতে ৬ বলের ব্যবধানে ২ রানের মধ্যে ২ উইকেট তুলে ম্যাচে ফিরেছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩১০। আজ ৪৪ রানে এগিয়ে থেকে ফিল্ডিংয়ে নামবে নাজমুল বাহিনী।

গতকাল দিনের প্রথম বলেই ৩১০ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। পাঁচ বছর আগে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে একমাত্র টেস্ট টাইগাররা হেরেছিল ১৫১ রানে। কিন্তু ম্যাচে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেটের ১৯টিই নিয়েছিলেন টাইগার তিন স্পিনার তাইজুল, মেহেদি মিরাজ ও নাজমুল অপু। পাঁচ বছর পর এবারও উইকেটে বল স্পিন ধরছে। বাংলাদেশের ইনিংসে ১০ উইকেটের ৭টিই নিয়েছেন তিন কিউই স্পিনার ইস সোধি, গ্লেন ফিলিপস ও এজাজ প্যাটেল। নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের ৯ উইকেটের ৮টিই নিয়েছেন চার স্পিনার। এর মধ্যে উজ্জ্বল ছিলেন তাইজুল। একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট। এ ছাড়া নাঈম ইসলাম, মেহেদি মিরাজ ও মুমিনুল হক একটি করে উইকেট নেন। বাকিটি নেন শরিফুল।

তাইজুলের ভেলকি শুরু হয় ৮০ ওভারে নতুন বল নেওয়ার পর। নতুন বল নেওয়ার আগে সফরকারীদের স্কোর ছিল ৬ উইকেটে ২৬২ রান। ১০৪ রানে ব্যাট করছিলেন উইলিয়ামসন। ৮১তম ওভারের পঞ্চম বলে আর্মার করেন তাইজুল। ফরোয়ার্ড খেলেও বোল্ড হন উইলিয়ামসন। ৬ বল পর ফের আঘাত হানেন তাইজুল। তার এই দুই আঘাতেই মুহূর্তে ৬ উইকেটে ২৬২ থেকে নিউজিল্যান্ডের স্কোর পরিণত হয় ৮ উইকেটে ২৬৬ রানে। অথচ এ রানেই অলআউট হতে পারত নিউজিল্যান্ড। যদি ব্যক্তিগত ৬৩ রানে নাঈমের বলে উইলিয়ামসনের ক্যাচ মিস না করতেন তাইজুল। এরপর ৭০ রানে নাঈমের বলে আবারও ক্যাচ মিস করেন শরিফুল। এরপর আর ভুল করেননি উইলিয়ামসন। ধীরে ধীরে তুলে নেন সেঞ্চুরি। ৯৯ থেকে নাঈমের বলে স্কয়ার লেগে পাঠিয়ে ২৯তম সেঞ্চুরির উচ্ছ্বাসে মাতেন কিউই সাবেক অধিনায়ক। সেঞ্চুরি করে উইলিয়ামসন নাম লিখেছেন দুই গ্রেট ক্রিকেটারের পাশে। একজন সর্বকালের সেরা ব্যাটার স্যার ডোনাল্ড ব্রাডম্যান। যিনি ৫২ টেস্টে ২৯ সেঞ্চুরি করেন। দ্বিতীয়জন ভারতের ‘রান মেশিন’ বিরাট কোহলি। ১১১ টেস্টে যার সেঞ্চুরি ২৯টি। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ৫০তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেন কোহলি। ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে কোহলিই প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরির হাফ সেঞ্চুরি করেন। টেস্টে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি শচীন টেন্ডুলকারের, ৫১টি। উইলিয়ামসনের চলতি বছরে এটা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। মার্চে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে করেছিলেন ২১৫ রান। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তার সেঞ্চুরি সংখ্যা ৪। ২০১৩ সালে ১১৪, ২০১৭ সালে ১০৪*, ২০১৯ সালে ২০০* ও ২০২৩ সালে ১০৪। ৯৫ টেস্টে তার রান ৫৫.২২ গড়ে ৮ হাজার ২২৮। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তার রান ৭ টেস্টে ১৩১ গড়ে ৭৮৬।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ৩১০/১০, ৮৫.১ ওভার (মাহমুদুল হাসান জয় ৮৬, শান্ত ৩৭, মুমিনুল ৩৭। ফিলিপস ১৬-১-৫৩-৪)।

নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস : ২৬৬/৮, ৮৪ ওভার (উইলিয়ামসন ১০৪, ফিলিপস ৪২, মিচেল ৪১। তাইজুল ৩০-৭-৮৯-৪)।

সর্বশেষ খবর