সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মিরপুরেও কি স্পিন উইকেট

ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের নায়ক বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তার ঘূর্ণিতেই মূলত দুই সেশন হাতে রেখে টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ। দুই ইনিংসে নিয়েছেন ১০ উইকেট। নিউজিল্যান্ডকে হারাতে কি মিরপুরের উইকেট স্পিন সহায়ক বানাবে টিম ম্যানেজমেন্ট?

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মিরপুরেও কি স্পিন উইকেট

মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডকে হারানোর সুখস্মৃতি রয়েছে। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডকেও হারিয়েছে। বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এই তিনটি জয় নিঃসন্দেহে সবার ওপরে। কেউ এগিয়ে রাখবেন মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের জয়কে। কেউ আবার অস্ট্রেলিয়া জয়কে এগিয়ে রাখবেন। সিলেট ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডকে ১৫০ রানে হারানোর জয়টিকে বাংলাদেশের ১৯ টেস্ট জয়ের সেরা বলছেন সবাই। জয়টি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ব্যর্থতার পোস্ট মর্টেম হচ্ছে। তার ওপর দলের মূল একাদশের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, লিটন দাস, এবাদত হোসেন, তাসকিন আহমেদরা নেই। জুনিয়র ক্রিকেটারদের নিয়ে নাজমুল বাহিনীর শক্তিশালী নিউজিল্যান্ডকে হারানোর জয়টিকেই সবাই সেরা বলছেন। ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের নায়ক বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তার ঘূর্ণিতেই মূলত দুই সেশন হাতে রেখে টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ। এখন নাজমুল হোসেন শান্ত স্বপ্ন দেখছেন সিরিজ জয়ের। মিরপুর স্টেডিয়ামে ৬-১০ ডিসেম্বর দ্বিতীয় টেস্টটি জিতলে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জিতবে। নিউজিল্যান্ডকে হারাতে কি মিরপুরের উইকেট স্পিন সহায়ক বানাবে টিম ম্যানেজমেন্ট? সিলেট জয় করে গতকাল ঢাকায় এসেছেন নাজমুল, তাইজুলরা।

ভারত ম্যাচ দিয়ে ২০০৭ সালে টেস্ট অভিষেক মিরপুরের। অভিষেক টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল টাইগাররা। সর্বশেষ আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ৫৪৬ রানের ইতিহাস গড়া জয় পর্যন্ত টেস্ট হয়েছে এখানে ২৬টি। বাংলাদেশের জয় ৮, ড্র ৩ এবং হার ১৫টি। আট জয়ের মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে। মিরপুরের সর্বশেষ টেস্ট দুটি জিতেছে টাইগাররা। এপ্রিলে আয়ারল্যান্ডকে হারায় ৭ উইকেটে। আইরিশদের হারানোর ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়েছিলেন তাইজুল। জুনে আফগানিস্তান জয়ের ম্যাচে বিধ্বংসী বোলিং করেছিলেন ডান হাতি ফাস্ট বোলার এবাদত হোসেন। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে তাসকিন ৪ উইকেট নেন। তাইজুল ২টি ও মেহেদি হাসান মিরাজ নেন ৩ উইকেট। টানা দুই জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে ৬ ডিসেম্বর খেলতে নামবে নাজমুল বাহিনী। সিলেটের ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। অধিনায়কত্বের অভিষেক টেস্টে জয় পাওয়া নাজমুল শান্ত আবার বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি করেন। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ইতিহাস জয়ের নায়ক নাজমুল শান্ত। প্রথম ইনিংসে ১৪৬ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১১৫ রান করেছিলেন।

মিরপুরে বাংলাদেশ তিনবার জিম্বাবুয়েকে হারিয়েছে যথাক্রমে ৩ উইকেটে, ২১৮ রান ও ইনিংস ও ১০৬ রানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ইনিংস ও ১৮৪ রানে। আয়ারল্যান্ডকে ৭ উইকেটে, আফগানিস্তানকে ৫৪৬ রান এবং অস্ট্রেলিয়াকে ২০ রান ও ইংল্যান্ডকে ১০৮ রানে। অস্ট্রেলিয়া বধের নায়ক সাকিব ও ইংল্যান্ড বধের নায়ক মেহেদি মিরাজ। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়াকে ২০ রানে হারায় বাংলাদেশ। টেস্ট জয়ের নায়ক ছিলেন সাকিব। ব্যাট হাতে ৮৪ ও ৫ রান এবং বোলিংয়ে ৫টি করে দুই ইনিংসে ১০ উইকেট নেন সাকিব। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন মেহেদি মিরাজও।  ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডকে ১০৮ রানে হারানোর ম্যাচের নায়ক মিরাজ। দুই ইনিংস মিলিয়ে উইকেট নেন ১২টি। সাকিব ৫টি ও তাইজুল নেন ৩ উইকেট। এবার নিউজিল্যান্ড বধের পরিকল্পনাও স্পিনার দিয়েই।

মিরপুরে এখন পর্যন্ত যে ২ টেস্ট হয়েছে, তাতে স্পিনারদের আধিপত্য প্রশ্নাতীত। সাাকিব ২১ টেস্টে ৭৬ উইকেট নেন। সেরা বোলিং ৫৯ রানে ৬ উইকেট। দেশসেরা টেস্ট স্পিনার তাইজুল ১৪ টেস্টে নিয়েছেন ৬৯ উইকেট। সেরা বোলিং জিম্বাবুয়ের ম্যাচে। স্পেল ১৬.৫-৭-৩৯-৮। এই মাঠের দ্বিতীয় সেরা স্পেল পাকিস্তানের স্পিনার সাজিদ খানের, ৮/৪২। মেহেদি মিরাজ ১০ টেস্টে নিয়েছেন ৫২ উইকেট। স্পিনারদের পরিসংখ্যান বলছে মিরপুরের উইকেটে বল নিচু হয়ে আসে এবং স্পিনাররা বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন। সুতরাং আবারও মিরপুরে স্পিন তান্ডব চলবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর