মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাবিনাদের সিরিজ জয়

যে হাসিতে বীরত্বগাথা

জাতীয় দলের হয়ে এর আগেও গোল করেছি। তবে কখনো দুই গোল ছিল না। আজ (গতকাল) জোড়া গোল করেছি। ম্যাচটাও জিতেছি। ক্যারিয়ারের অন্যতম স্মরণীয় ম্যাচ এটা। -ঋতুপর্ণা চাকমা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

যে হাসিতে বীরত্বগাথা

প্রায় এক দশক ধরে মেয়েদের ফুটবলে একের পর এক সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশ। এক সময় বয়সভিত্তিক দলগুলোর সামনে প্রতিপক্ষরা দাঁড়াতেই পারত না। সিনিয়র লেভেলে গিয়ে সেই বয়সভিত্তিক দল খুব একটা সুবিধা করতে পারত না। তবে সময় বদলেছে অনেক। এখন সেই ছোট্ট মেয়েরাই সিনিয়র লেভেলে দুরন্ত ফুটবল উপহার দিচ্ছেন। সাবিনা খাতুনের পাশাপাশি আলো ছড়াচ্ছেন সানজিদা, তহুরা, শামসুন্নাহাররা। গতকাল আরও একবার নিজেদের সামর্থ্যরে প্রমাণ দিলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। কমলাপুর স্টেডিয়ামে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের শেষ ম্যাচে প্রতিপক্ষকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছেন সাবিনা খাতুনরা। প্রথম ম্যাচে সিঙ্গাপুরকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।

গতকাল ম্যাচের শুরু থেকেই দুর্দান্ত ফুটবল খেলে বাংলাদেশ। তহুরা খাতুন ও ঋতুপর্ণা চাকমা দুটি করে গোল করেন। এ ছাড়া একটি করে গোল করেন সানজিদা আক্তার, সাবিনা খাতুন, সুমাইয়া মাতসুসিমা ও শামসুন্নাহার জুনিয়র। প্রথমার্ধেই বাংলাদেশ তিন গোলে এগিয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধে আরও পাঁচ গোল করে স্বাগতিকরা। গত ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও হ্যাটট্রিকের আশা জাগিয়েছিলেন তহুরা। ১৬ ও ২৫ মিনিটে দুটি গোল করেন তিনি। এরপর ৭০ মিনিটে ঋতুপর্ণার পাসে তহুরা গোল করলেও অফ সাইডে তা বাতিল হয়। ঋতুপর্ণা চাকমা ১৮ ও ৬২ মিনিটে দুটি গোল করেন। তার দ্বিতীয় গোলটি ছিল অসাধারণ। সানজিদা আক্তার ৫৭ মিনিটে একটি গোল করেন। এ ছাড়া অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ৭৫ মিনিটে, সুমাইয়া মাতসুসিমা ৮৭ মিনিটে এবং শামসুন্নাহার জুনিয়র ম্যাচের যোগ করা সময়ে (৯০+১) একটি করে গোল করে জয়ের ব্যবধান বাড়ান। ম্যাচের ৭৫ মিনিটে স্কোরলাইন ৬-০ হওয়ার পর বাংলাদেশের কোচ সাইফুল বারী টিটু কয়েকটি পরিবর্তন আনেন। গোলরক্ষক রুপ্না, ফরোয়ার্ড তহুরা, মারিয়া ও শামসুন্নাহারকে উঠিয়ে নেন। তবে এই পরিবর্তনের পরও বাংলাদেশের মেয়েরা গোল উৎসব ঠিকই রেখেছেন। প্রথম ম্যাচে জোড়া গোল করে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক ছিলেন ফরোয়ার্ড তহুরা খাতুন। গতকালও তিনি দারুণ পারফর্ম করেন।

এমন দারুণ এক জয়ের পর পুরো কৃতিত্ব শিষ্যদেরই দিলেন কোচ সাইফুল বারী টিটু। তিনি বলেন, ‘আসলে আমার কোনো অবদানই নেই। বিন্দুমাত্রও না। পুরো কৃতিত্ব ওদের (খেলোয়াড়দের)। সাধারণত কয়েকটি গোলের পর একটু অন্যরকম ভাব আসে। কিন্তু ওরা প্রতিনিয়ত গোল করেই গেছে।’ সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন ঋতুপর্ণা চাকমাও। তিনি বললেন, ‘জাতীয় দলের হয়ে এর আগেও গোল করেছি। তবে কখনো দুই গোল ছিল না। আজ (গতকাল) জোড়া গোল করেছি। ম্যাচটাও জিতেছি। ক্যারিয়ারের অন্যতম স্মরণীয় ম্যাচ এটা।’ অধিনায়ক সাবিনা খাতুন অবশ্য আফসোসই করলেন। কয়েকটি গোলের সুযোগ হারিয়েছেন তিনি। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নিয়ে আফসোস করলেও দলের জয়ে দারুণ খুশি অধিনায়ক সাবিনা খাতুন।

ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে বেশ খানিকটা ওপরেই আছে সিঙ্গাপুরের মেয়েরা। ১৩০ নম্বরে অবস্থান করছে সিঙ্গাপুর। বাংলাদেশের মেয়েরা আছে ১৪২ নম্বরে। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দারুণ দুটি জয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ে কিছুটা উন্নতি হতে পারে বাংলাদেশের। অবশ্য গত ২৫ আগস্ট ফিফার নতুন র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ পাওয়ার পর পাঁচ ম্যাচ খেলে দুটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। ড্র করেছে একটিতে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর