রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মিরপুরের উইকেট এমন কেন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মিরপুরের উইকেট এমন কেন

২০০১ সালে হ্যামিল্টন টেস্টের শুরুর দুই দিন বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছিল। তারপরও হেরেছিল বাংলাদেশ। তখন টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ ছিল শিক্ষানবিস। তাই এমন পরিস্থিতি মেনে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন? ২৩ বছর ধরে টেস্ট খেলছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠ, পরিচিত কন্ডিশন এবং চেনা উইকেট। তারপরও একদিন আগেই হার। নিয়ন্ত্রণে থেকেও মিরপুর টেস্ট হেরে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে ক্রিকেটারদের সামর্থ্য নিয়ে। প্রশ্ন উঠছে উইকেট নিয়ে। বৃষ্টিস্নাত টেস্টের প্রথম দিন খেলা হয়নি ৮.২ ওভার। দ্বিতীয় দিন একটি বলও হয়নি। তৃতীয় দিনে খেলা হয়েছে সাকল্যে ৩২.৩ ওভার। টেস্টের এমন চিত্র, তারপরও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। পরিচিত উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে হেরে গেছে টেস্ট। হারের পর প্রশ্ন উঠছে, উইকেট এমন বানানো হয়েছে কেন? যেখানে বৃষ্টিতে প্রায় দেড় দিন ভেসে যাওয়ার পরও একদিন আগে টেস্টের ফল হয়ে যায়। এমন উইকেট বানিয়ে টেস্ট খেলানোর যৌক্তিকতাই বা কী? ৪ উইকেটে হারলেও উইকেটের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, ‘প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ভালো উইকেটে বা এ রকম কন্ডিশন বানিয়ে অনুশীলন করতে পারি। এনসিএলে এ ধরনের উইকেটে ২-৩টা ম্যাচ খেললাম। আবার দেশের বাইরে খেলার জন্য (ফাস্ট ও বাউন্সি) ২-৩টা উইকেট বানালাম। আমার মনে হয় এটা (টেস্ট) অনুশীলনের জায়গা না, বা উন্নতির কিছু নেই। এনসিএল, বিসিএলে আমরা এ ধরনের ভালো উইকেট বা স্পিনিং উইকেটে অনুশীলন টেস্টে আসব। এখানে জেতার জন্যই আসি।’

১-১ সমতায় শেষ টেস্ট সিরিজ

হারের পর প্রশ্ন উঠছে, উইকেট এমন বানানো হয়েছে কেন? যেখানে বৃষ্টিতে প্রায় দেড় দিন ভেসে যাওয়ার পরও একদিন আগে টেস্টের ফল হয়ে যায়। এমন উইকেট বানিয়ে টেস্ট খেলানোর যৌক্তিকতাই বা কী?

বিশ্বকাপে ভারতের উইকেটগুলোতে রান হয়েছে। ৩০০-৪০০ রান উঠেছে প্রায় ম্যাচগুলোতেই। বাংলাদেশ একটিমাত্র ম্যাচ ছাড়া আর কোনো ম্যাচেই ৩০০ রান করতে পারেনি। অথচ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনটি ওয়ানডে খেলেছিল টাইগাররা। হেরেছিল সিরিজ। টাইগার টিম ডিরেক্টর প্রশ্ন তুলেছিলেন, স্পিন ও বল নিচু হয়ে আসা উইকেটে ম্যাচ খেলার কারণ কি? সিলেটে স্পিনার দিয়ে জয়ের পর মিরপুরের উইকেটে স্পিন ধরবে- এমনটাই স্বাভাবিক। হারের পর প্রশ্ন উঠছে কেন এমন উইকেট বানানো হচ্ছে। যেখানে বল ঘুরছে লাটিমের মতো। বলের বাউন্স থাকছে হাঁটুর নিচে। এমন উইকেটে জয় পেলেও আদৌ কি ক্রিকেট এগোচ্ছে? এই উইকেটে খেলেই তিনটি করে টি-২০ ও ওয়ানডে খেলতে নিউজিল্যান্ড যাচ্ছে বাংলাদেশ।

মিরপুরের উইকেট বরাবরই লো বাউন্সির। স্পিনাররা বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২০ রানের ঐতিহাসিক জয়ের ম্যাচের নায়ক ছিলেন সাকিব আল হাসান। ১০ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডকে ১০৮ রানের হারানোর ম্যাচের নায়ক ছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। দুটি ক্রিকেট পরাশক্তির মতো নিউজিল্যান্ডকে হারানোর জন্য স্পিন উইকেট বানানো হয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টের আগ্রহেই।

সিলেটে নিউজিল্যান্ডকে ১৫০ রানে হারানোর ম্যাচের নায়ক ছিলেন তাইজুল। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন বাঁ-হাতি স্পিনার। মিরপুরের ব্ল্যাক ক্যাপসদের হারাতে তিন স্পিনার তাইজুল, মিরাজ ও নাঈম হাসান সাঁড়াশি আক্রমণ চালান। স্পিনাররা সাফল্য পেলেও পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন ব্যাটাররা।

টাইগারদের দুই ইনিংসে রয়েছে মাত্র একটি হাফসেঞ্চুরি। ওপেনার জাকির হাসান ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন। প্রতিপক্ষ স্পিনার-এজাজ প্যাটেল, মিচেল সান্তানার ও গ্লেন ফিলিপসদের স্পিনের বিরুদ্ধে সাবলীল ব্যাটিং করতে পারেনি কেউই। টেস্টে জয় পেলেও বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ কি এমন উইকেটে খেলে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর