শনিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ ২০২৩

বাংলার যুবাদের সামনে অসহায় ভারত

পাকিস্তানকে হারিয়ে আমিরাতের ইতিহাস

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বাংলার যুবাদের সামনে অসহায় ভারত

দুর্ভাগ্য আরিফুল ইসলামের। মাত্র ৬ রানের জন্য ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির উৎসব করতে পারেননি। সাজঘরে ফেরেন ব্যক্তিগত ৯৪ রানে। তিন অঙ্কের জাদুকরী ইনিংস খেলতে না পারলেও বাংলাদেশকে অবিশ্বাস্য এক জয় উপহার দিয়েছেন তিনি। আরিফের নার্ভাস নাইনটিজের ইনিংসে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছে চার বছর পর। বিজয় দিবসের আগে দেশবাসীকে দারুণ এক জয় উপহার দিয়েছে টাইগার যুবারা। যুবারা এর আগে একবার ফাইনাল খেলেছিল ২০১৯ সালে। সেবার ফাইনালে হেরেছিল আসরের সবচেয়ে সফল দল এবং আটবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতের কাছে। গতকাল দ্বিতীয়বার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে দুবাইয়ে আইসিসি একাডেমি ২ নম্বর মাঠে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে। আটবারের চ্যাম্পিয়নদের ৪৩ বল হাতে রেখে হারানোর নায়ক আরিফ হলেও পিছিয়ে ছিলেন না আহার আমিন। আরিফ-আমিন চতুর্থ উইকেট জুটিতে যোগ করেন ১৬৬ বলে ১৩৮ রান। আগামীকাল ফাইনালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের প্রতিপক্ষ সংযুক্ত আরব আমিরাত। স্বাগতিক দল দুবাই আইসিসি-১ নম্বর মাঠে শক্তিশালী পাকিস্তানি যুবাদের হারিয়েছে ১১ রানে। 

দুই বছর আগে ২০২১ সালে সেমিফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল টাইগার যুবারা। হেরেছিল ১০৩ রানে। ২০১৯ সালে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের ফাইনালে ভারতকে ১০৬ রানে বেঁধে রেখেও হেরেছিল ৫ রানে। অলআউট হয়েছিল ১০১ রানে। ফাইনালে ভারত প্রতিপক্ষ না থাকায় প্রথমবারের মতো এশিয়া সেরা হওয়ার স্বপ্ন দেখছে মাহফুজুর রহমান রাব্বির বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। রবিবার ফাইনালের প্রতিপক্ষ পরিচিত আমিরাতের যুবারা। দলটির বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ৬১ রানে জিতেছিল টাইগার যুবারা। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ২০২০ সালে যুব বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল ভারতকে হারিয়ে।

ভারতীয় যুবাদের হারানোর মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছিলেন ফাস্ট বোলার মারুফ মৃধা। ম্যাচসেরা মৃধার বিধ্বংসী বোলিংয়ে ভারতীয় যুবারা ৬১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে। মৃধার স্পেল ১০-১-৪১-৪। ১৫.৫ ওভারে ৬১ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর ভারতীয় যুবাদের হাল ধরেন মুশির খান ও মুরুগান অভিষেক। দুজনে সপ্তম উইকেট জুটিতে ১৮ ওভারে যোগ করেন ৮৪ রান। দুজনেই হাফসেঞ্চুরির ইনিংস খেলেন। মুশির ৬০ রান করেন ৬১ বলে ৩ চারে। মুরুগান ৬২ রান করেন ৭৪ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায়। রোহানাত দৌলা বর্ষণ ও শেখ পারভেজ জীবন দুটি করে উইকেট নেন।

টার্গেট ১৮৯ রান। পাহাড়সমান না হলেও প্রতিপক্ষ ভারত বলে বাড়তি টেনশন কাজ করছিল টাইগার যুবাদের। ব্যাট করতে নেমে দলের সবচেয়ে সফল পারফরমার আশিকুর রহমান শিবলি রান আউট হন ব্যক্তিগত ৭ রানে। আশিকের রান ৪ ম্যাচে ২৪৯। আমিরাত ম্যাচে ৬১, জাপান অপরাজিত ৫৫ ও শ্রীলঙ্কা ম্যাচে অপরাজিত ১১৬ রান করেন আশিক। ভারতীয় যুবাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাওয়ার প্লেতে ৯.৪ ওভারে ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে টাইগার যুবারা। এরপর চতুর্থ উইকেটে আরিফ ও আহার আমিন জুটি বেঁধে যোগ করেন ২৭.৪ ওভারে ১৩৮ রান। ৩৭.২ ওভারে লিম্বানির বলে শাহারানের ক্যাচ হওয়ার আগে ৯৪ রানের ইনিংস খেলেন। ১০৪.৪৪ স্ট্রাইক রেটের ৯০ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৯টি চার ও ৪টি ছক্কা। ধীরলয়ে ব্যাটিং করেন আহার আমিন। ৪৪ রানের ইনিংসটি খেলেন ১০১ বলে ৩ চারে। আহার আমিন আউট হন ম্যাচ জয়ের চেয়ে ২ রান আগে দলীয় ১৮৭ রানে। উইনিং শটটি খেলেন শেখ পারভেজ জীবন।

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ভারত অনূর্ধ্ব-১৯

১৮৮/১০, ৪২.৪ ওভার (আদার্শ ২, আর্শিন ১, প্রিয়াংশু ১৯, উদয় ০, সাচিন ১৬, মুশির ৫০, আরাভেলি ০, মুরুগান ৬২, সৌমি ১, রাজ ১১*, নামান ৬। মারুফ মৃধা ১০-১-৪১-৪, ইকবাল ৯-১-৩১-০, রোহানাত ৭-০-৩৯-২, রিজওয়ান ২-০-১২-০, পারভেজ ৮.৪-০-২৯-২, মাহফুজুর ৬-০-৩৩-১)।

 

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯

১৮৯/৬, ৪২.৫ ওভার (আশিকুর শিবলি ৭, জিসান ০, রিজওয়ান ১৩, আরিফুল ইসলাম ৯৪, আহরার ৪৪, শিহাব ৯, মাহফুজুর ৩*, পারভেজ ২*। রাজ ১০-১-৪৭-২, নামান ৯-১-৩৫-৩, সৌমি ১০-২-৪৪-০, আর্শিন ৭.৫-০-১৯-০, মুরুগান ৪-০-২২-০, মুশির ২-০-১৪-০)

ফল : বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচসেরা : মারুফ মৃধা।

সর্বশেষ খবর