রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সিরিজ জিতলে ভালো লাগত : শান্ত

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সিরিজ জিতলে ভালো লাগত : শান্ত

নাজমুল হোসেন শান্ত

একটি জয়। অনেকগুলো রেকর্ডস। নেপিয়ারের ম্যাকক্লিন পার্কে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ উইকেটের জয়টি সাদা চোখে বাংলাদেশের সান্ত্বনার জয়। কিন্তু এ জয়ের জন্য অপেক্ষা করেছে প্রায় দেড় যুগ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দেশটির মাটিতে টানা ১৮ হারের পর অবশেষে আরাধ্য জয়ে উদ্ভাসিত হয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। এ জয়ে দেশটির মাটিতে টানা হারের বৃত্ত ভেঙেছে। আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে পরবর্তী টি-২০ মিশনের। টি-২০ সিরিজ জিতবে ২৭ ডিসেম্বর। ২০৯ বল হাতে রেখে অবিশ্বাস্য জয়ে উচ্ছ্বসিত টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। নেপিয়ারে দুরন্ত ক্রিকেট জয় তুলে আনন্দে আত্মহারা হলেও টাইগার অধিনায়কের আফসোস সিরিজ জিততে না পেরে, ‘অবশ্যই আমরা খুশি যে ম্যাচটি জিতেছি। তবে সিরিজ জিততে পারলে আরও ভালো লাগত।’  ৩ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি ডানেডিনে নাজমুল বাহিনী হেরেছে ডিএল মেথডে ৪৪ রানে। নেলসনে সৌম্য সরকারের ১৬৯ রানের নান্দনিক ইনিংসের পরও টাইগাররা হেরেছিল ৭ উইকেটে। নেপিয়ারের ম্যাচটি ছিল হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর। সেই ম্যাচে অনেকগুলো রেকর্ড গড়ে নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়েছে নাজমুল বাহিনী। জয় দিয়ে ওয়ানডে ফরম্যাট শেষ করল বাংলাদেশ।

নেপিয়ারের ম্যাকক্লিন পার্ক বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পরিচিত ভেন্যু। এখানে এর আগে ৩টি ওয়ানডে ও ২টি টি-২০ ম্যাচ খেলেছে। হারের বৃত্তে ছিল টাইগাররা। শুধু নেপিয়ার নয়, নেলসন ও মাউন্ট মঙ্গানুই ছাড়া দেশটির আর কোনো ভেন্যুতে জয়ের রেকর্ড নেই বাংলাদেশের। ২০১৫ সালে বিশ্বকাপে নেলসনে স্কটল্যান্ডকে হারিয়েছিল রেকর্ড ৩১৮ রান তাড়া করে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এতদিন এটাই ছিল একমাত্র ওয়ানডে জয়। গত জানুয়ারিতে অবশ্য মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডকে টেস্ট হারিয়েছিল টাইগাররা। গতকাল নেপিয়ারে ঐতিহাসিক জয় পায় অবিশ্বাস্য ক্রিকেট খেলে। চার পেসার- শরিফুল ইসলাম, তানজিম সাকিব, মুস্তাফিজুর রহমান ও সৌম্য সরকারের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ৩১.৪ ওভারে মাত্র ৯৮ রানে অলআউট হন ব্ল্যাক ক্যাপসরা। ক্রিকেট ইতিহাসে নবমবার শ-এর নিচে অলআউট হয়েছে দেশটি। বাংলাদেশের বিপক্ষে কিউইদের এটা সর্বনিম্ন স্কোর। এর আগে ২০১৩ সালে মিরপুরে ১৬২ রান করেছিল দলটি। দলটির সর্বনিম্ন স্কোর ৬৪, পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৯৮৬ সালে শারজাহতে।

৪৩৫ ওয়ানডে খেলে গতকাল ১৫৭ নম্বর জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। নেপিয়ারসহ সব মিলিয়ে দুবার প্রতিপক্ষ দলের ১০ উইকেট নিয়েছে টাইগার পেসাররা। গতকাল নেপিয়ারে ম্যাচসেরা তানজিদ, শরিফুল ও সৌম্য ৩টি করে এবং মুস্তাফিজ এক উইকেট নেন। চলতি বছর মার্চে সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবার বাংলাদেশের তিন পেসার ১০ উইকটে নিয়েছিলেন। ওই ম্যাচে হাসান মাহমুদ ৫টি, তাসকিন ৩ ও ইবাদত ২টি উইকেট নিয়েছিলেন। 

রান তাড়া করে বাংলাদেশের বড় জয় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১০ উইকেটে। ম্যাচটি জিতেছিল ২২১ বল হাতে রেখে। যে কোনো টেস্ট দলের বিপক্ষে বল হাতে রেখে নাজমুলদের এটা দ্বিতীয় বৃহত্তম জয়। সবচেয়ে বেশি বল হাতে রেখে জয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০০৯ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের ৪৫ রানের টার্গেট টাইগাররা টপকেছিল ২৩৩ বল আগে। গতকাল ৯৯ রান তাড়া করে জিতেছে ২০৯ বল হাতে রেখে।

দুরন্ত বোলিং করে ম্যাচসেরা হয়েছেন তানজিদ সাকিব। ৭ ওভারের স্পেলে ১৪ রানের খরচে নেন ৩ উইকেট। শরিফুলও ৩ উইকেট নেন। বাংলাদেশের ১৪তম বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে ৫০ উইকেট নিয়েছেন। ৩৩ ম্যাচে তার উইকেট সংখ্যা ৫১টি। তার চেয়ে দ্রুত ৫০ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান ২৭ ম্যাচে এবং আবদুর রাজ্জাক রাজ ৩২ ম্যাচে।

নাজমুল হাসানের আক্ষেপ ৮ রানের। গতকাল ৫১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যাচ জেতাতে অন্যতম ভূমিকা রেখেছেন নাজমুল শান্ত। অথচ আরও ৮টি রান করলে শাহরিয়ার নাফিসের পর দ্বিতীয় টাইগার ক্রিকেটার হিসেবে এক মৌসুমে হাজার রানের রেকর্ড গড়তেন।

 

রেকর্ডস :

৯ উইকেট : নিউজিল্যান্ডের মাটিতে দেশটির বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয়।

৯৮ : বাংলাদেশের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের সর্বনিম্ন স্কোর। আগের স্কোর ছিল ১৬২, মিরপুরে, ২০১৩ সালে।

২০৯ বল : ৪৩৫ ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বল হাতে তৃতীয় বৃহত্তম জয়। সবচেয়ে বড় জয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০০৯ সালে ২৩৩ বর হাতে রেখে।

১০ উইকেট : ৪৩৫ ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পেসাররা দ্বিতীয়বার প্রতিপক্ষের ইনিংসের সবগুলো, মানে ১০ উইকেট নিয়েছেন। চলতি বছরের মার্চে আয়ারল্যান্ড ম্যাচে প্রথমবার প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট নিয়েছিলেন পেসাররা।

৫০ উইকেট : বাংলাদেশের ১৪ নম্বর বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে ৫০ উইকেট নিয়েছেন। ৫১ ম্যাচে তার উইকেট সংখ্যা ৫১টি।

৯৯২ রান : এক মৌসুমে ৯৯২ রান করেছেন টাইগার অধিনাযক হাজমুল হোসেন শান্ত। এক মৌসুমে হাজার রানের রেকর্ড রয়েছে শুধুমাত্র  শাহরিয়ার নাফিসের।    

 

সর্বশেষ খবর