বুধবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

অষ্টম স্বর্গে মেসি

রাশেদুর রহমান

অষ্টম স্বর্গে মেসি

লিওনেল মেসির মুকুটে আরও একটি পালক যোগ হলো। আরও একবার ফিফার সেরা হলেন আর্জেন্টাইন তারকা। সোমবার গভীর রাতে লন্ডনে জমকালো আয়োজনে হয় ফিফা দি বেস্ট অনুষ্ঠান। লিওনেল মেসির অনুপস্থিতিতে তার হয়ে ট্রফি গ্রহণ করেন বার্সেলোনার সাবেক ফরাসি তারকা থিয়েরি অঁরি। ইতিহাস গড়ার রাতে মেসি ছিলেন মায়ামিতে, অনুশীলনে।

লিওনেল মেসিকে আগে কখনো এতটা কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হয়নি। এবার যেমনটা হলো। যতবারই ফিফার সেরা হয়েছেন, এককভাবেই হয়েছেন। অনেকটা ব্যবধানে থেকেই হয়েছেন। তবে এবার পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। গত মৌসুমে লিওনেল মেসি যেমন পিএসজি এবং ইন্টার মায়ামির জার্সিতে দারুণ ফুটবল উপহার দিয়েছেন। তেমনি নরওয়ের তারকা আরলিং হলান্ডও দুর্দান্ত ফুটবল খেলেছেন। ম্যানসিটির জার্সিতে জয় করেছেন ট্রেবল। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপের পাশাপাশি জয় করেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগও। দলের এসব ট্রফি জয়ের তার অবদানই ছিল সবচেয়ে বেশি। তবে লিওনেল মেসিও ছিলেন দুরন্ত। পিএসজির জার্সিতে লিগ ওয়ান জয় করার পর যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে জয় করেন লিগস কাপ। ইন্টার মায়ামির ইতিহাসে প্রথম ট্রফি এনে দেন মেসি। ফুটবলের প্রতি বিমুখ একটা দেশকে ফুটবল পাগল করে তোলেন তিনি। ফিফার সদস্য দেশের অধিনায়ক, কোচ এবং বিশ্বজুড়ে ফুটবল ভক্তদের ভোটের পর মেসি ও হলান্ড দুজনেই ৪৮ পয়েন্ট করে সংগ্রহ করেন। ফিফার আইন অনুযায়ী পয়েন্ট সমান হলে জাতীয় দলের অধিনায়কদের ভোটে এগিয়ে থাকা ফুটবলারকেই সেরা ঘোষণা করা হয়। মেসি অধিনায়কদের ভোট বেশি পাওয়ায় আরও একবার ফিফার বর্ষসেরা হলেন। কিলিয়ান এমবাপ্পে ৩৫ পয়েন্ট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।

লিওনেল মেসি ২০০৭ সাল থেকে ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কারে শীর্ষ তিনে নাম লেখাচ্ছেন। সবমিলিয়ে ১৬ বার শীর্ষ তিনে ছিলেন তিনি। শীর্ষ তিনে থাকার ক্ষেত্রে মেসির পরই আছেন রোনালদো (১৩ বার)। ২০০৯ সালে প্রথমবার ফিফার সেরা হন মেসি। সে সময় পুরস্কারের নাম ছিল ফিফা ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার। এরপর ফিফা ব্যালন ডি’অর নামে ২০১০, ২০১১, ২০১২ এবং ২০১৫ সালে আরও চারবার ফিফার সেরা হন মেসি। ২০১৬ সাল থেকে পুরস্কারের নাম হয় ফিফ দি বেস্ট। নতুন নামে প্রথম তিনবার মেসি সেরা হতে পারেননি। রোনালদো দুইবার এবং লুকা মডরিচ একবার ট্রফি জিতেন। ২০১৯, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে ফিফা দি বেস্ট ট্রফি জয় করেন আর্জেন্টাইন তারকা। সবমিলিয়ে আটবার ফিফার বর্ষসেরা হলেন মেসি। এই তালিকায় দুই নম্বরে আছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তিনি দুইবার ফিফা দি বেস্ট (২০১৬, ২০১৭), দুইবার ফিফা ব্যালন ডি’অর (২০১৩, ২০১৪) এবং একবার ফিফা ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার অব দ্য ইয়ারের (২০০৮) পুরস্কার জয় করেন (মোট পাঁচবার)। মেসি এবং রোনালদোর কাছাকাছিও আর কেউ নেই।

ফিফার বর্ষসেরা কোচ হয়েছেন পেপ গার্ডিওলা। গত বছর তিনি ম্যানচেস্টার সিটিকে উপহার দিয়েছন ট্রেবল শিরোপা। এ ছাড়া ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জয় করেছে ম্যানসিটি। বছরজুড়েই সফল ছিল দলটি। এরই পুরস্কার পেলেন গার্ডিওলা। বর্ষসেরা নারী ফুটবলার হয়েছেন স্পেনের আইতানা বোনমাতি। তিনি গত বছর নারী বিশ্বকাপে অসাধারণ ফুটবল খেলেছেন। স্পেনের বিশ্বকাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তার। বর্ষসেরা হয়ে সেই স্বীকৃতিও পেলেন বোনমাতি। বর্ষসেরা নারী দলের কোচ হয়েছেন ইংল্যান্ডের ডাচ কোচ সারিনা উইগম্যান। তিনি গত বছর বিশ্বকাপে দলকে ফাইনালে নিয়ে যান। তবে স্পেনের কাছে হেরে শিরোপাবঞ্চিত হন।

সর্বশেষ খবর